May 15, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

করলাম নাহ আর সাহায্য, দুসলাম নাহ যাহ

ইয়াসির আরাফাত ঃ 

সময় টা দুপুর ১ টা ৪৪ মিনিট…।
Arnab আমাকে ফোনে কল করে বল্লো যে শুক্রাবাদের বড় রাস্তার মোড়ে এক বৃদ্ধ লোক অসুস্থ হয়ে পড়ে ছিল।। বৃদ্ধ নাকি বরিশালের।। আমি তখন মোহাম্মাদপুরেWrayan এর সাথে ছিলাম।। রাইয়ানকে নিয়েই সাথে সাথে রওনা দিয়ে শুক্রাবাদ এসে দেখি লোকটাকে অর্ণব একটা হোটেলে খাওয়াচ্ছে।।
চাচা কে দেখতে- মাথার চুল মনে হচ্ছিল গত ২ দিন আগেই সব ফালাইয়া দিয়া আসছে, সুন্নতি দাড়ি মাশাল্লাহ, বাম চোখে সানি পরা, একটা ময়লা মাখা সাদা পাঞ্জাবী, নিচে একটা সাদা সুতির গেঞ্জি আর লুঙ্গী।
আসতে আসতে Joy কে ফোন দিয়ে ওখানে যেতে বললাম।। তার খাবার পরে তার সাথে কথা বললাম, কি হয়েছে জানতে চাইলাম।।
তার বক্তব্য এমন ছিল- “বাবা আমি বারিশাল এর ‪#‎মঠবাড়িয়ার_শাফা‬ থেকে আসছি।। আমার সালার বাসায় , কারোয়ান বাজার, আইসা দেখি সে বাসা পাল্টাইছে। আমার সালায় বলছিল ঢাকা আসলে আমারে ছোট একটা ব্যাবসা ধরাইয়া দেবে। তাই সাথে ১৭০০ টাকা ও নিয়া আসছি।। কিন্তু রাত ১১ তার দিকে ৩টা ছেলে আমাকে ধাক্কা দিয়া সব টাকা আর ব্যাগ নিয়া যায়।। তারপরে অই জায়গার দারোয়ানরা আমারে একবাসায় রাখে।। সকাল এ বের হইছি রোদ্দুরে হাটতে হাটতে রাস্তায় পইরা গেছি পরে আর মনে নাই।।”
তখন অলরেডি অর্ণব ২২০ টাকা লোক জনের কাছ থেকে উঠাইছে।। জয় আর সোয়াদ Asif Islam Abir ভাইকে ফোন দেয়।। ভাই এসেও তাকে সাহায্য করেন।। পরিশেষে গাড়ি ভাড়ার টাকা উঠানো শেষে আমি আর রাইয়ান তাকে নিয়ে গাবতলি যাই। হানিফ এর কাউন্টারের ম্যানেজারের সাথে কথা বলে কম টাকায় রাত ৮টার সরাসরি মঠবাড়িয়ার শাফা এর একটা সিট ম্যানেজ করে ফেলি।। বাকি টাকার ৫০ টাকা তার হাতে দিয়ে আরটা খাবার কিনে দেই।।
তখন তিনি বলল- ”আমি একটু ঘুমাব, এইখানেই ঘুমাই বাস তো রাত ৮টায়”
আমরাও আমাদের দায়িত্ব শেষ করে সকালের নাস্তা টা করতে কাউন্টারের সামনের চায়ের দোকানেই চা-রুটি খাচ্ছিলাম।।
‪#‎২_মিনিটের‬ মাথায় চাচাকে দেখলাম তার পরনের পাঞ্জাবীটা ডান হাতে নিয়ে আর বাম হাতের মুঠোয় ‪#‎১০০_টাকার‬ কয়েকটা নোট মুড়ানো অবস্থায় ধরে কাউন্টার থাকে বের হচ্ছে।। স্বাভাবিক ভাবেই ডাক দিলাম, চাচা কই যান??
তার উত্তর-“‪#‎মাজার_রোডের‬ মধ্যে আমার চেনা জানা একটা ভাইয়ের মেয়ের বাসা আছে, সেখানে যাই।। বাস তো ৮ ট্যাঁয়।।”
আমরা দুইজন তার হাতের মুঠোয় টাকা দেখে অবাক হয়ে গেলাম, কিছু বঝার আগেই সে অনেকদূর হন হন করে হেতে চলে গেছে ততোক্ষণ এ।। যেই লোক হাটতে পারছিলনা, যাকে আমার হাত ধরেই রাস্তা পার করাতে হইছে সে এত জোরে সামনে থেকে হন হন করে হেঁটে জাচ্ছে দেখে আবার ও টাস্কি খাইতে থাকলাম।। সাথে সাথে পিছনে থেকে ডাক দিলাম, চাচায় দিলো ভোঁ দৌড়।। 😮আমরাও বুঝে গেছি চাচা কি করছে এতক্ষণ আমাদের সাথে।। দিলাম দৌড়।। কোন গলিতে ঢুকল তা আর পাইলাম নাহ।।
মন চাচ্ছিল তার পিছনে না দৌড়াইয়া একটা বাস এর নিচে পরি।। মনে পরতেছিল কাউন্টারের ম্যানেজারের কথা, সে চাচারে দেখে বলছিল বরিশালে মানুষ ধরা খাইছে তা প্রথম দেখতাছি।। আমিও বরিশালের তা ভাবতেছিলাম।।

যাইহোক যারা এত বড় স্ট্যাটাসটা কষ্ট করে পরছেন তাদের জন্য, জীবনের এখন পর্যন্ত ৭ জনকে এভাবে সাহায্য করছি।। নিজে ৯ বার ব্লাড ডোনেট করছি + অসংখ্যক ব্যাগ ব্লাড ম্যানেজ করে দিছি।।এটা আমার গর্ব ছিল।। কখনই এভাবে বলি নাই যেভাবে আজকে বলছি।। এইটা আগে নিজেরে নিজে গর্ব করে সান্তনা দিতাম যে মানুষ এর সাহায্যে আসতে পারছি অন্তত।। কিন্তু আজকের পর থেকে হয়ত বা আর কন সাহায্যে আসব নাহ আমি আর।। এইসব কাজ করতে শুধু শুধুই ভাল লাগতো।। কিন্তু আজকে মনটাই উঠে গেছে।।

পরিশেষে জানা অজানা যে ভাইরা লোকটাকে সাহায্য করছেন তাদের অসংখ্য‪#‎ধন্যবাদ‬।।
বিশেষ করে আন্তরিক ভাবে ‪#‎দুঃখিতও‬ ববটে আপনাদের কাছে।।

(লেখাটি ফেসবুক পাতা থেকে নেয়া)।

Print Friendly, PDF & Email