May 15, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

মরো না, মেরো না, যদি পার মৃত্যুকে অবলুপ্ত কর

নটো কিশোর আদিত্য : বিংশ শতাব্দীর সংকটকালে যখন চারিদিকে দূর্নীতি অবিচার, ব্যভিচার, নিরাশ, হতাশার হাহাকার, বিভেদ ও বিচ্ছিন্নতাবাদের অভিঘাতে ক্ষতবিক্ষত সাম্প্রতিকালের সমাজ জীবনে যখন বারবার সংহতির সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তখনই সেই সংকট-মুহুর্তে মনে পড়ছে যুগপুরুষোত্তমকে, স্মরণে আসছে- শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূল চন্দ্র।

সৎসঙ্গ প্রতিষ্টাতা যুগ পুরুষোত্তম পরম প্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকুল চন্দ্র যার দর্শন আর বাণী বিশ^ ভ্রাতৃত্ব পরমত সহিষ্ণুতা, সেবা, প্রেম, আর মানবতাকে সব কিছুর উপর তুলে ধরা। যেখানে সবধর্ম মতবাদ আর বিশ^াসকে গুরুত্ব ও শ্রদ্ধার সাথে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। সৎসঙ্গে মানবতার জায়গান, বঞ্চিত মানুষের কল্যাণ এমন বহুবিধ মহৎ কর্তব্য সম্পাদনের বিস্তারিত ব্যাখ্যাবলী অন্তর্ভূক্ত।

মরো না, মেরো না, যদি পার মৃত্যুকে অবলুপ্ত কর। শ্রীশ্রীঠাকুরের উচ্চারিত বাণীটি ছোট ছোট কয়েকটি কথা। কিন্তু এই বাণী পড়বার সঙ্গে সঙ্গেই মনে হলো, এই বিংশ শতাব্দীতে বিশ্ব যা খুঁজে বেড়াচ্ছে, এই বাণীটির মধ্যেই আছে তার ইঙ্গিত। আজ মানুষ শান্তি চায়। আজ মানুষ জ্ঞানে, বিজ্ঞানে ,শিক্ষায় দীক্ষায় প্রতিটি দিক থেকে মৃত্যুকে জয় করবার চেষ্টা করছে। কিন্তু মৃত্যুকে জয় করবার বাসনাই মানুষ মানুষকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সমাধান কি ? শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন-
’অন্যে বাঁচায় নিজে থাকে, ধর্ম বলে জানিস তাকে’। বাঁচা বাড়ার মর্ম যা, ঠিকই জানিস ধর্ম তা।’

সৎসঙ্গ জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের একটি মিলনক্ষেত্র। ১৯৫২ সালে এটি নিবন্ধীকৃত হয়ে প্রথম আত্মপ্রকাশ করে। মনোমোহিনী দেবী ছিলেন সৎসঙ্গ পরিষদের প্রথম সভানেত্রী। ধর্ম ও কর্মের সমন্বয়ে সৎসঙ্গ আশ্রমে গড়ে তোলেন সৎসঙ্গ তপোবন বিদ্যালয়, ‘মনোমোহিনী কলেজ অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’, ‘বিশ্ববিজ্ঞান কেন্দ্র’, ‘সৎসঙ্গ কেমিক্যাল ওর্য়ার্কস’, ‘মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ’, ‘সৎসঙ্গ প্রেস অ্যান্ড পাবলিশিং হাউজ’, ‘সৎসঙ্গ দাতব্য চিকিৎসালয়’, ‘কলাকেন্দ্র’, ‘মাতৃবিদ্যালয়’, ‘কুটিরশিল্প কেন্দ্র’, ‘সৎসঙ্গ কৃষি খামার’, সর্বসাধারণের জন্য ভোজনাগার ‘আনন্দবাজার’ সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে।

তথ্যমতে, শ্রীশ্রীঠাকুরের জন্মস্থান, তাঁর বাসগৃহ, মাতৃমন্দির, স্মৃতিমন্দির (শ্রীশ্রীঠাকুরের মাতৃদেবীর সাধনমন্দির), নিভৃত নিবাস (শ্রীশ্রীঠাকুরের সাধনগৃহ), বিশ্ববিজ্ঞান কেন্দ্রে, ফিলানথ্রপী অফিসসহ স্মৃতি বিজড়িত ভবন ও স্থান সৎসঙ্গের কাছে ছেড়ে দেওয়ার জন্য ১৯৬১ সাল থেকে সরকার প্রধানগণের নিকট আবেদন করা হয়। ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত স্থাপনাগুলো যথাযথ ভাবে সংরক্ষণের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই সৎসঙ্গ কর্তৃপক্ষ বারবার সরকারসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দাবী জানিয়ে আসছে।

শ্রীশ্রীঠাকুরের সবচাইতে প্রিয় স্থান ছিল বিশ্ববিজ্ঞান কেন্দ্র। অনেক আশায় বুক বেঁধে শ্রীশ্রীঠাকুর তিলে তিলে গড়ে তুলেছিলেন তাঁর প্রিয় কেন্দ্রটিকে। তখন আশ্রমের কর্মীদের দুবেলা খাবার জোটাই মুশকিল ছিল। সেই অভাব অনটনের মধ্য দিয়েই তিনি ভিক্ষা করে বহু মূল্যের বিজ্ঞান গবেষণার যন্ত্রপাতি কিনে বিশ্ববিজ্ঞান কেন্দ্র স্থাপন করে অখ্যাত পল্লি গ্রামটিকে বিশ্বের দরবারে বিখ্যাত করে তুলেছিলেন।

বিশ্ববিজ্ঞান কেন্দ্রে কৃষি থেকে মহাকাশ গবেষণা বিষয়ে সবকিছু নিয়ে তাত্ত্বিক আলোচনা হযেছে এবং শ্রীশ্রীঠাকুর শুরু করেছিলেন প্রায় শত বছর পূর্বে কৃষি ও কৃষিভিত্তিক শিল্পের উন্নয়নের জন্য প্রাকৃতিক এবং জৈবিক উপায়ে জমির উর্বতা বৃদ্ধি। যথা, কোন ফসলের পর কতটুকু বিশ্রাম দিয়ে পরবর্তী ফসল ফলালে এবং কেমন জৈব সার, জৈব কীটনাশক প্রয়োগ করলে জমির উর্বতা ও উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।

শ্রীশ্রীঠাকুর অনেক আবিস্কারের ফরমূলা রেখে গেছেন চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণার জন্য। সেই উদ্দেশ্যে তিনি দূতদীপ্তি হাসপাতাল, শান্ডিল্য বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পরিকল্পনা করেছিলেন। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, মহাত্মা গান্ধী, নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু, শেরে বাংলা এ.কে ফজলুল হক প্রমুখ রাজনৈতিক নেতা এবং দেশবিদেশের গুণিজন সৎসঙ্গ পরিদর্শন করে এর অসাম্প্রদায়িক ও মানবসেবামূলক কর্মকান্ডের প্রশংসা করেন।

সৎসঙ্গ যেখানে সবধর্ম মতবাদ আর বিশ^াসকে গুরুত্ব ও শ্রদ্ধার সাথে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। শ্রীশ্রীঠাকরের অমিয় আর্শীবাদে, পূজ্যপাদ শ্রীশ্রী আচায্যদেবের অনুপ্রেরণায় মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় “সৎসঙ্গ আশ্রম।” যুগপুরুষোত্তম শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র উনবিংশ শতকের শেষভাগে এই ধরাধামে অবতীর্ণ হন। ১৯৪৬ সনের ১লা সেপ্টেম্বর শ্রীশ্রীঠাকুর স্বাস্থ্যগত কারণে বায়ু পরিবর্তনের জন্য, চিকিৎসকদের পরামর্শে অখন্ড ভারতের বিহার রাজ্যের দেওঘর যান। উপমহাদেশের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তিনি মাতৃভূমিতে ফিরে আসতে পারেন নি। ১৪ই আগস্ট ১৯৪৭ সালে ভারত বর্ষ বিভক্ত হয়ে গেলে ভারতের বিহারের (বর্তমানে ঝাড়খন্ড) দেওঘরে গড়ে উঠল সৎসঙ্গ আশ্রম। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এবং পাশ্চাত্যেও এর কর্মধারা প্রসারিত। বর্তমানে বাংলাদেশে কয়েক লক্ষ সহ সারা বিশ্বে সৎসঙ্গীর সংখ্যা কয়েক কোটি।

আজ ভারতের দেওঘরের বুকেও গড়ে উঠেছে বিশাল সৎসঙ্গ প্রতিষ্ঠান এবং তার কার্যধারা ছড়িয়ে পড়েছে সমগ্র ভারতবর্ষে এবং বহির্ভারতেও। ১৯৪৬ সনের ১লা সেপ্টেম্বরের পর ভক্তশূন্য হিমায়েতপুর ধাম। হিমাইতপুরের আশ্রমভূমি ১৯৫২ সালে পূর্বপাকিস্তান সরকার হুকুম দখল করে সৎসঙ্গ আশ্রম সহ কয়েকশ একর জায়গা সরকারী অধিগ্রহণ করে সেখানে মনো বিকার গ্রন্থ মানুষের চিকিৎসার জন্য স্থাপন করা হলো পাবনা মানসিক হাসপাতাল। হিমাইতপুর সৎসঙ্গের কাছে পরমতীর্থ। শ্রীশ্রীঠাকুরের জন্মস্থানসহ বিশেষ স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক স্থান ও ভবনসমূহ সংরক্ষণ সকলের প্রাণের দাবী।

পূর্ব-পাকিস্তান সৎসঙ্গ (বর্তমানে বাংলাদেশ) এর কাজ আদিত্য পরিবারের পৈত্রিক বাড়িতে একটি ছোট খরের ঘর থেকে সূচনা হয়। সৎসঙ্গের কাজ স্থবির না রেখে কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য ১৯৫০ সালে শ্রীশ্রীঠাকুরের আর্শীবাদে পাকুটিয়ায় প্রতিষ্ঠিত হয় সৎসঙ্গ আশ্রম। ভারতের বিহারের (বর্তমানে ঝাড়খন্ড) দেওঘর থেকে ১৯৫৮ সালে ফেব্রুয়ারী মাসে, মাখী পূর্ণীমা তিথির আগে ভক্ত বাঞ্ছিত শ্রীশ্রীঠাকুরের ব্যবহৃত শ্রীশ্রীপাদুকা প্যারী মোহন আদিত্যের নিকট প্রদান করলেন। তিনি ঐ দিনই শ্রীশ্রীপাদুকা মাথায় নিয়ে পাকুটিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন, ঠিক পূর্ণিমা উৎসবের দিন প্যারী মোহন আদিত্য আসলন পাকুটিয়াতে। তখন সৎসঙ্গে কোন বিভেদ না থাকায় অতীন মালাকারদা, চন্দ্রনাথ চক্রবর্তীদাসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন সেই পুণ্য মুর্হুতে। এই পাদুকাকে কেন্দ্র করে পাকুটিয়ায় প্রতিষ্ঠিত হল সৎসঙ্গ জগতের প্রথম শ্রীমন্দির। পুরুষোত্তমের নির্দেশমতো প্রতিষ্ঠিত হলো পুণ্যপাদপীঠ স্থান। এর আগে থেকেই রাস বিহারী আদিত্য ১৯৪২ ও প্যারী মোহন আদিত্য ১৯৪৩ সালে পাবনা হিমায়েতপুর গিযে শ্রীশ্রীঠাকুরের দর্শন ও প্রনাম করেন। ১৯৬৯ সালে শ্রীশ্রীঠাকুরের মহাপ্রয়াণের সময় পূর্ব পাকিস্তানের পক্ষে শ্রীশ্রীঠাকুরের চিতা ভস্ম পাবনা পদ্মা নদীতে বির্সজনের জন্য আবেদন জানায় প্যারী মোহন আদিত্য এবং এনে বির্সজন দেন।
১৯৬৯ সালে সৎসঙ্গের প্রাণপুরুষ, যুগ-পুরুষোত্তম পরমপ্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের তিরোধানের পর শ্রীশ্রীঠাকুর চিতা ভস্ম ভারতের দেওঘর থেকে বাংলাদেশের পাবনার পদ্মা নদীতে বিসর্জন দেওয়ার হয়। এই ক্রিয়া সম্পাদন করবেন সৎসঙ্গ বাংলাদেশ এর প্রয়াত সম্পাদক রাস বিহারী আদিত্যের ছোট ছোট ভাই ১৯৭১ এ মুক্তিযুদ্ধে শহিদ প্যারী মোহন আদিত্য। আর ১৯৫৭ সালেই শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকুলচন্দ্রের বানী ও আদর্শ প্রচার করার জন্য বড় ভাই রাস বিহারী আদিত্যের সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় সৎসঙ্গ সংবাদ নামে একটি ষা¤œাসিক পত্রিকা। যার সহ সম্পাদক ছিলেন প্যারী মোহন আদিত্য। পরবর্তীতে এটি মাসিক পত্রিকায় রুপান্তরিত হয়। রাস বিহারী আদিত্যের তত্ত্বাবধানে পূর্ব পাকিস্তানে সৎসঙ্গ এগিয়ে চলে।

মতাদর্শগত কারনে সেই ১৯৬৩ সাল থেকেই স্বাধীনতা বিরোধিরা ও কু-চক্রি কিছু মানুষ পাকুটিয়া সৎসঙ্গ আশ্রমের মধ্যে ডাকাতি ও আগুন দেওয়ার মত ঘটনা ঘটিয়েছে। কেননা বাংলার নামটি এবং জাতিয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা চিতরে মুছে ফেলার ঘৃন্য অভিপ্রায় ছিলো তৎকালীন শাসক শ্রেণীর। ১৯৬৩ তে বড় ধরনের চুড়ি, ১৯৬৪ তে ডাকাতি এবং ১৯৬৫ তে আশ্রম পোড়ানোর মত ঘটনার সম্মখিন হতে হয়েছে। ১৯৭১ সালে পাকুটিয় সৎসঙ্গ আশ্রম কন্ঠ, কলম, সেবা ও চিকিৎসা এবং গোপনে সংবাদ সংগ্রহের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনের পথকে প্রসারিত করেছেন।

শ্রীশ্রীঠাকুরের পৌষ্য পুত্র আছাহাব উদ্দিন আহমেদ এর পুত্র মো: রাবিউল হাসান (ফিরোজ) দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত লেখা থেকে যানা যায়, পাকুটিয়া গ্রাম ক্ষুদ্র বটে কিন্তুু প্রকৃতির অফুরন্ত দানে সমৃদ্ধ। আর এখানেই শ্রীশ্রীঠাকুর অস্থায়ী সৎসঙ্গের কার্যালয় করতে আশীর্বাদ করলেন। উল্লেখ্য পূর্ব পাকিস্থানের পাবনাতে শ্রীশ্রীঠাকুরের সমস্থ স্থাবর ও অস্থাবর সম্পপ্তি আছাহাব উদ্দিন আহমেদকে জেনারেল পাওয়ার অব এর্টনী রেজিট্রি: করে দিয়েছেন। তিনি পাবনায় রাধানগরে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারীং ওয়ার্কসপ করার জন্য কিছু জায়গা সরকারের কাছ থেকে ক্রয় করেন। শ্রীশ্রীঠাকুর তাকে ভালবাসতেন সেজন্য পাবনা মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারীং ওয়ার্কসপের জন্য শ্রীশ্রীঠাকুর আশ্রমের মেশিনারীজ গুলি আছাহাব উদ্দিন আহমেদকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারীং ওয়ার্কসপে স্থানান্তরের অনুমোতি দান করেন। তৎকালিন র্পূব পাকিস্থানে শ্রীশ্রীঠাকুরের প্রায় দশ হাজার বিঘা সম্পত্তি ছিল। তখনকার ভ’মি দস্যু অনেক সম্পত্তি গ্রাস করে নেয় এবং আরো অনেক সম্পদ তখনকার সরকার ইকুজিশন করে নেয়। আছাহাব উদ্দিন আহমেদকে তখন অনেক মামলা করেন এবং প্রশাসনের সহিত যোগাযোগ করেও সম্পত্তি রক্ষা করতে পারে নাই। তিনি লোকের হিংসার পাত্র হযে যায। যতটুকু সম্ভব (২/৩ হাজার বিঘা) শ্রীশ্রীঠাকুর তার বড় খোকা শ্রীশ্রীঅমরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী ও ষোড়শী বালা দেবীর নামে এস এ এবং আর এস রেকর্ড করায়ে রাখেন। শ্রীশ্রীঠাকুরের সম্পত্তির উপর পাবনা যে মানষিক হাসপাতাল অবস্থিত সেই সম্পত্তির জন্য তৎকালীন সরকার যে ক্ষতি পুরন দেওয়ার ঘোষনা দেন, সেই ক্ষতিপুরনের কোন অর্থ তিনি গ্রহন করেন নাই।”

ইতিহাস থেকে জানা যায় শ্রীশ্রীঠাকুরের জন্মস্থান উদ্ধারের কথা। ১৯৬৮ সালের শেষ দিকে তৎকালিন পূর্ব পাকিস্তানের জাতীয় সংসদের স্পীকার আব্দুল হামিদ চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য শামসুর রহমান শাহজাহান খান, বাসেদ সিদ্দিকীর এবং র্মিজা আমজাদ হোসেন সহ আরো বিশিষ্ট ব্যাক্তি গণের পরার্মশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডীর বাড়ীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের ১৯৭১ সালে ৭ই মার্চের পর এবং পাকিস্তান বাহিনী কর্তৃক সৎসঙ্গ আশ্রম আক্রমণের ঠিক পূর্ব মূহুর্তে ১৯৭১ সালে সম্পাদক রাসবিহারী আদিত্য এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদ প্যারী মোহন আদিত্য, সৎসঙ্গ ফিলনথ্রপী অফিসের কর্মী শ্রীগোপাল চন্দ্র ভদ্র এবং গাড়ীর চালক হিসাবে ছিলেন শ্রীঅমরেন্দ্র নাথ আদিত্য বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডি বাসায় গিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু গঠিত মুক্তিযুদ্ধের রিলিফ ফান্ডে সৎসঙ্গের পক্ষে অর্ঘ্য দিয়েছিলেন এবং শ্রীশ্রীঠাকুরের ভূমিষ্ঠস্থান উদ্ধারের জন্য সহায়তাও চেয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু সানন্দে অর্ঘ্য গ্রহন করে বলেছিলেন দেশ স্বাধীন করে অবশ্যই আশ্রমে যাবেন এবং যা কিছু সহায়তা করা দরকার তা করবেন। (তথ্য সূত্র, গোপাল চন্দ্র ভদ্র ও শ্রীঅমরেন্দ্র নাথ আদিত্য)।

একই বছর ১৯৬৮ সলের প্রথম দিকে রাস বিহারী আদিত্য ও প্যারী মোহন আদিত্যের উপস্থিতে শ্রীশ্রীঠাকুর বিশেষ ভাবে বলেছিলেন, ’ঐ পদ্মাই গংগা, ওখানে তোরা প্রতি বছর ৩০ শে ভাদ্র গঙ্গা ¯œান করবি’। পাবনাতে কেউ ভয়ে যেতে না চাইলেও প্যারী মোহন আদিত্য চিড়া মুড়ি গুড় নিয়ে চলে যেতেন পাবনার হিমাইতপুর গ্রামে। অনেক সময় সাথে ছিলেন কাব্যতীর্থ শ্রীকুঞ্জ বিহারী মজুমদার, মথুরা নাথ আদিত্য, বামা চরন র্শম্মা, হেমদা, ওমেশ সরকার, মাখন চক্রবর্তী, মনোহর বিশ্বাস, জগদিশ মহলদার সহ আরো অনেকে। তখন পাবনাতে থাকা খাওয়া কাজ করা অনেক ঝুকিপূর্ন। কি যে কষ্ট। ভয় ভীতি উপেক্ষা করে বার বার পাবনা গিয়েছেন তারা। সেই ধারাবাহিতায় শ্রীশ্রীঠাকুরের জন্মস্থান রক্ষার জন্য একই বছর ১৯৬৮ সালে ৩০ শে ভাদ্র পাবনা হিমাইতপুরে আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্ভোধন করা হয় গংগা ¯œান উৎসবের। (তথ্য সূত্রঃ সৎসঙ্গ সংবাদ)
বাংলাদেশ সৎসঙ্গ (পূর্ব-পকিস্তান সৎসঙ্গ ) দেশের প্রতিটি আন্দোলনের জন্য কাজ করেছেন। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর থেকে নানা ঘাত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম। ১৯৪৮ সালে ভাষা-আন্দোলন, ১৯৪৯ সালে আওয়ামী মুসলিমী লীগ গঠন, ১৯৫১ সালে পাকিস্তান গঠনতন্ত্রের খসড়া মুলনীতির বিরোধিতা, ১৯৫২ সালে ভায়া-আন্দোলনকারীদের আত্মাহুতি, ১৯৫৩ সালে যুক্তফ্রন্ট গঠন, ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের ২১ দফার বিজয়, ১৯৫৫ সালে আওয়ামীলীগের অসম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল হিসাবে আতœপ্রকাশ, ১৯৫৬ সালে স্বায়ত্বশাসনের দাবি ও সাংবিধানিক সংখ্যাসাম্যেও বিরোধিতা, ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের করালগ্রাস, ১৯৬২ সালে শিক্ষানীতি বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানের অনিরাপত্তাজনিত অবস্থা, ১৯৬৬ সালে ছয় দফা দাবি, ১৯৬৮ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০ সালে ঘূর্ণিঝড়- পরবর্তী ত্রাণকাজে পাকিস্তান সরকারের অবহেলা ও সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নিরন্কুশ বিজয় এবং ১৯৭১ সালে ৭ই মার্চের ভাষণ, ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা ঘোষনা এবং অবশেষে ১৯৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের বিজয় অর্জিত হয়। টাঙ্গালের সৎসঙ্গ আশ্রমের সৎসঙ্গের প্রতিটি কর্মী এসব আন্দোলনের সাথে ওতোপ্রোত ভাবে জড়িত ছিল। সৎসঙ্গ বাংলাদেশ আজও সেই স্মৃতি বহন করে চলছে। ১৯৭০ সালে তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তানের দক্ষিনাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা ও জলোচ্ছাসে শত শত মানুষ মৃত্যুর মুখে পতিত হয়। তখনও অনেক ভুমিকা রাখে সৎসঙ্গ।

১৯৭১ এ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দৃষ্টি পড়ে যায় সৎসঙ্গ আশ্রমে। ১৮ এপ্রিল প্রথম ১৯৭১ বিপর্যয়ের শিকার। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই পাকিস্তান বাহিনীর মার্টারের গোলায় আশ্রমের মঠ ধ্বংস হয়ে যায়। প্যারী মোহন আদিত্য মুল মন্দিরে ধ্যান অবস্থায় থাকায় তাঁকে মুর্ত্তি ভেবে গুলি করা থেকে বিরত থাকে। ৮ আগষ্ট, পাকিস্তানি হানাদারা সৎসঙ্গ আশ্রমে গোলাগুলি শুরু করে এবং পেট্রোল ঢেলে আশ্রম, মন্দির, অফিস, বসত বাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। আশ্রমে মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় ও সহযোগিতার কারণে তাঁকে প্রথমে গুলি করে এবং লাথি মেরে, এবং বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে অত্যাচর করে এবং আরও মুক্তিযোদ্ধাদের সন্ধান চায়। তবুও তিনি মুখ খোলেননি। পরে টেনে হিচরে বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নির্বিবাদী-ঈশ্বরপ্রেমী মানুষটি নৃশংসভাবে হত্যা করে। পাকিস্তান হানাদার বাহিনী চলে গেলে রাস বিহারী আদিত্য এসে তাঁকে কোলে তুলে নেন। প্রায় তিন ঘন্টা পর সন্ধ্যা প্রার্থনা শেষে শেষ তিনি নিঃস্বাস ত্যাগ করেন।

সৎসঙ্গের প্রাণ পুরুষ শ্রীশ্রীঠাকুরের জন্ম শুধু আমার জন্য নয়, মানুষের জন্য। সৎসঙ্গ একটি প্রতিষ্ঠানই নয়, এটি একটি মানবের কল্যানের স্থান। মানব সেবা ও ভালো কর্মই প্রকৃত মানুষ ও প্রকৃতি সৎসঙ্গি তৈরি করতে পারে। তাই এই মিলনমেলা সেবা বান্ধব না হয়ে ওঠার উপায় নেই। সৎসঙ্গ কেবল শুধু পূঁজা পার্বনরে জন্যই নয়, দেখাবে ভালবাসার মেলা। সবাই যেন নিশ্চিন্তে এই পবিত্র আঙিনার মেলাতে ঘুরে বেড়াতে পারেন। যেন মুক্তচিন্তার মানুষ সব অর্থেই মুক্ত হয়। সৎসঙ্গের আর্দশ তরুণদের রুচি নির্মাণে ভূমিকা রাখছে, নতুন ও উন্নত চিন্তার সঙ্গে মানব সেবায় উৎসাহিত হয়ে ভক্তদেরও মেলবন্ধন ঘটায়। যা নতুন প্রজন্মেও কাছে তীর্থক্ষেত্র ও সংহতি সৃষ্টি করে।

শ্রীশ্রীঠাকুর সব ধর্মের নির্যাস থেকে পরম স্রষ্টাকে অনুসন্ধান করেছেন। ধর্মকে তিনি পৃথক করে দেখেননি, বহুমতের স্রোতধারাকে তিনি একই ধর্ম সমুদ্রে মিলিত হতে দেখেছেন। শ্রীশ্রীঠাকুরের সুন্দরের এই আরাধনা তা হতে হবে স্বকীয় মতে, বিনয় আর ঔদার্যে পরিপূর্ণ; স্বাধীন চিন্তা এবং স্বাধীন মত প্রকাশে। শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন, ”তুমি যদি সৎ হও, তোমার দেখাদেখি হাজার হাজার লোক সৎ হয়ে পড়বে। আর যদি অসৎ হও, তোমার দুর্দশার জন্য সমবেদনা প্রকাশের কেহই থাকবে না। কারণ তুমি অসৎ হয়ে চারদিকই অসৎ করে ফেলছ।”

৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে ভুমিকায় সৎসঙ্গের অবদান অনস্বিকায্য: মুক্তিযুদ্ধের গবেষক শফিউদ্দিন তালুকদারের ‘একাত্তরের গণহত্যাÑ যমুনা পর্ব ও পশ্চিম তীর’, জুলফিকার হায়দারের ‘ঘাটাইলের ইতিহাস ও ঐতিহ্য’, বাংলা একাডেমি প্রকাশিতÑ রশিদ হায়দার সম্পাদিত ‘স্মৃতি : ১৯৭১’, রাস বিহারী আদিত্য সম্পাদিত ‘শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূল চন্দ্র ও সৎসঙ্গ বাংলাদেশ’, রশিদ হায়দার সম্পাদিত ‘খুঁজে ফিরি’, পান্না কায়সার সম্পাদিত ‘হৃদয়ে একাত্তর’, ‘টাঙ্গাইলের রাজনীতি ও মুক্তিযুদ্ধ’ ড. আশরাফ সিদ্দিকীর বিভিন্ন গ্রন্থ, কবি সমরেশ দেবনাথের বিভিন্ন গ্রন্থ, শফি কামাল বাদল সম্পাদিতÑ ‘টাঙ্গাইল: আলোকে-উদ্ভাসে’ গ্রন্থে এবং বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি থেকে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ’ গ্রন্থে, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত সচিত্র বাংলাদেশ এ, ‘দেশাত্মবোধ ও আধ্যাত্মিক চেতনায় শহিদ বুদ্ধিজীবী প্যারী মোহন আদিত্য’, আঞ্চলিক পত্র-পত্রিকা ও সাহিত্য ম্যাগাজিন ও জাতীয় পত্রিকাসহ ভারত থেকে প্রকাশিত পত্র-পত্রিকাতেও প্যারী মোহন আদিত্যের এ সংক্রান্ত তথ্যাবলি রয়েছে।

বাঙালি জাতি শহীদ বুদ্ধিজীবী প্যারী মোহন আদিত্যের আত্মত্যাগের কথা কখনোই ভুলবে না। তাঁর স্মরণে পাকুটিয়া সৎসঙ্গ তপোবন বিদ্যালয়ের সামনে স্মৃতিস্তম্ভ¢ করা হয়েছে। এ ছাড়া টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়কের পাকুটিয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে সৎসঙ্গ আশ্রম পর্যন্ত সড়কটি ‘শহীদ প্যারী মোহন আদিত্য সড়ক’ নামকরণ করা হয়েছে।

শহিদ প্যারী মোহন আদিত্যের জীবন ও কর্মময় জীবন সম্পর্কে প্রথিতযশা বুদ্ধিজীবীরা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও আলোচনা সভায় আলোকপাত করেছেন। যেমন- বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক- গবেষক, উপন্যাসিক, লোকসাহিত্যিক এবং শিশুসাহিত্যিক ড. আশরাফ সিদ্দিকী লিখেছেন, ‘তিনি আছেন সৎসঙ্গে সবচেয়ে সত্য হয়ে’। মহান মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্নে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম একজন প্রতিষ্ঠাতা এবং বেতার কেন্দ্রের সংগঠকদের মধ্যে একজন অগ্রদূত বেলাল মোহাম্মদ লিখেছেন, ‘সৎসঙ্গের কিংবদন্তি প্যারী মোহন আদিত্য’। সাংবাদিক, কবি, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট সন্তোষ গুপ্ত লিখেছেন, ‘অনুভবে শহিদের অমর স্মৃতি’। আবৃত্তিশিল্পী ও প্রশিক্ষক, স্বাধীন বাংলা বেতারের শব্দসৈনিক আশরাফুল আলম লিখেছেন, ‘সমর্পিত একজন মানুষ শহিদ প্যারী মোহন আদিত্য’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-রেজিস্ট্রার মরমি সাধক মোঃ এন্তাজ উদ্দিন লিখেছেন, ‘কথা ছিল অমর হবে’। বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ বেলায়েত হোসেনের ভিডিও চিত্রে, ‘সৎসঙ্গের অবিচ্ছেদ্য অংশ শহিদ প্যারী মোহন আদিত্য’। লেখক, শিক্ষক, গবেষক, সমাজ-সংস্কারক ও রুদ্রবীণা সঙ্গীত বিদ্যালয়- মৌলভীবাজার এর প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ, অধ্যাপক ড. রজতকান্তি ভটাচার্য্য লিখেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ ও সৎসঙ্গের শহিদ প্যারী মোহন আদিত্য’। চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত ‘সচিত্র বাংলাদেশ’ এ সৎসঙ্গ বাংলাদেশের সভাপতি কুঞ্জ বিহারী আদিত্য লিখেছেন, ‘দেশাত্মবোধ ও আধ্যাত্মিক চেতনায় শহিদ বুদ্ধিজীবী প্যারী মোহন আদিত্য’। সৎসঙ্গ বাংলাদেশের সম্পাদক ধৃতব্রত আদিত্য লিখেছেন, ‘সৎসঙ্গ বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ ও সৎসঙ্গের অবদানে শহীদ বুদ্ধিজীবী প্যারী মোহন আদিত্য’। পাবনার কৃতিসন্তান মোঃ রবিউল হাসান (ফিরোজ) লিখেছেন, ‘কীর্তিমান মানুষের আত্মত্যাগে এই বিজয়’। শ্রীজগদীশ চন্দ্র মহলদার (সাবেক সভাপতি, সৎসঙ্গ বাংলাদেশ) লিখেছেন, ‘স্মৃতির মণিকোঠায় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও সৎসঙ্গ’। শিক্ষক ও নাট্যব্যক্তিত্ব মণীন্দ্র চন্দ্র ভদ্র লিখেছেন, ‘নাট্যব্যক্তিত্ব শহীদ প্যারী মোহন আদিত্য’। বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মতিয়ার রহমান খান লিখেছেন, ‘প্যারী মোহন আদিত্যকে যেমন দেখেছি’। শ্রীপ্রমথ রঞ্জন শর্মা লিখেছেন, ‘প্যারী মোহন এক বিস্মৃত ভক্তের নাম’। সৎসঙ্গ বাংলাদেশ এবং সৎসঙ্গ সংবাদ এর সম্পাদক শ্রীরাস বিহারী আদিত্য লিখেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে ছোট ভাইয়ের আত্মত্যাগ’। সুব্রত আদিত্য সহ-সম্পাদক (সৎসঙ্গ বাংলাদেশ) লিখেছেন, ‘অকুতোভয় সৈনিক প্যারী মোহন আদিত্যের ঐতিহাসিক ভূমিকা’। বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ হযরত আলী লিখেছেন, ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী প্যারী মোহন আদিত্য একটি প্রদীপ্ত সংগ্রামী নাম’। বন্দেপুরুষোত্তমম্।

লেখক: সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক প্রথম কথা। সৎসঙ্গ এর মূখপত্র “সৎসঙ্গ সংবাদ”র সম্পাদক এবং সদস্য-ঢাকা সাব এডিটর কাউন্সিল, সদস্য-ঘাটাইল উপজেলা প্রেস ক্লাব।

Print Friendly, PDF & Email