April 29, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

লাল ফড়িং। ফাইল ছবি।

লাল ফড়িং

ফারজানা কুইন :  সে এক অন্য রকম দুপুর ছিল আমাদের। দুপুর এলেই আমরা দলবেঁধে ফড়িং ধরতে বের হয়ে যেতাম। দুপুরের তীব্র রোদে শুকনো খড়ের ওপর অসংখ্য ফড়িং খেলা করত। সবাই হাতের কাছে যে ফড়িং পেত তাকে ধরে হাতের মুঠোয় জমাত।

আমি কোনো ফড়িং ধরতাম না। কেবল লাল রঙের ফড়িং খুঁজতাম। তাদের সংখ্যা খুব কম ছিল। তাদের আমরা রাজা বলতাম। রাজাদের ধরা অন্য সব ফড়িংয়ের থেকে কঠিন ছিল। তবুও আমি লাল ফড়িংদের খুঁজতাম। কোনো লাল রঙের ফড়িং দেখলে আমি কাউকে তার ধারে-কাছে যেতে দিতাম না।

সারা দুপুর আমি তার পিছে ছুটে ছুটে কাটিয়ে দিতাম। মাঝে মাঝে অত্যন্ত চুপি চুপি গিয়ে তাকে ধরে ফেলতাম। তখন আমার সে কী আনন্দ হতো! সবাই হাতভর্তি ফড়িং নিয়ে আমার লাল ফড়িংটা দেখতে আসত আর আফসোস করত। তাদের সেই আফসোস দেখে আমার আরও আনন্দ হতো।

ফড়িং ধরা শেষ হলে সবাই সেই ফড়িংয়ের লেজে শলা (নারকেল পাতার শিরা) ঢুকিয়ে দিয়ে উড়িয়ে উড়িয়ে খেলত। শলার যন্ত্রণায় একসময় ফড়িংগুলো মরে যেত। এরপর মরা ফড়িংগুলোকে সবাই আয়োজন করে পিঁপড়াদের খাওয়াত আর আনন্দ পেত।

আমি এসবের কিছুই করতাম না। কেবল হাতের মুঠোয় আমার লাল ফড়িংটাকে দেখে দেখে মুগ্ধ হতাম। একসময় খেলা শেষে তাকে পরম যত্নে উড়িয়ে দিতাম। সেও মনের আনন্দে দূর থেকে দূরে চলে যেত। পরদিন আবার দুপুর এলে সবাই ফড়িং ধরতে বেরিয়ে যেতাম।

আবার আমি সেই লাল ফড়িংটাকে খুঁজতাম। আজও দুপুর আসে দুপুর যায়।আজও মাঝে মাঝে লাল ফড়িংটাকে উড়িয়ে দিই। মাঝে মাঝে সে ফিরে আসে। আবার আসে না…

সূত্র:প্রিয়.কম

 

Print Friendly, PDF & Email