April 29, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

সাগরে ঘূর্ণিঝড় ‘ভারদাহ’: ২ নম্বর ‍হুশিয়ারী সংকেত

ডেস্ক : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি শক্তি সঞ্চয় করে গভীর নিম্নচাপ ও বৃহস্পতিবার এটি ঘূর্ণিঝড় ‘ভারদাহ’ এ পরিণত হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের জন্য সমুদ্রবন্দরগুলোকে ২ নম্বর দূরবর্তী ‍হুশিয়ারী সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।

তবে ঘূর্ণিঝড় ‘ভারদাহ’ এর বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানার কোন সম্ভাবনা নেই। এটি আগামী চারদিনের মধ্যে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

বৃহস্পতিবার আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় ‘ভারদাহ’ এ পরিণত হয়েছে।

এটি বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ২৩০ কি.মি. দক্ষিণে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ১৫০ কি.মি. দক্ষিণে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ২৫৫ কি.মি. দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ২০০ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থান করছিল।

এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ৬২ কি.মি. যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুশিয়ারী সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেতের মানে হল- দূরে গভীর সাগরে একটি ঝড় সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার। বন্দর এখনই ঝড়ে কবলিত হবে না। তবে বন্দর ত্যাগকারী জাহাজ পথিমধ্যে বিপদে পড়তে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে গভীর সাগরে বিচরণ করতে নিষেধ করেছে আবহাওয়া অধিদফতর।

ভারতের আবহাওয়া অধিদফতর বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটার বুলেটিনে জানিয়েছে, শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড়টির বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটারে পৌঁছাতে পারে। আগামী চারদিনের মধ্যে ‘ভারদাহ’ ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলেও পূর্বাভাস দিয়েছে ভারত।

প্রাকৃতিক নানা কারণে সমুদ্রের একটি অঞ্চলে কেন্দ্রাভিমুখী ঝোড়ো হাওয়ার অঞ্চল বা লঘুচাপ সৃষ্টি হয়। ক্রমান্বয়ে এ ঝোড়ো হাওয়ার অঞ্চলটি শক্তি সঞ্চয় করে (বাতাসের গতি বৃদ্ধি পেয়ে) সুস্পষ্ট লঘুচাপ, নিম্নচাপ, গভীর নিম্নচাপ ও শেষে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়।

আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, নিম্নচাপ হচ্ছে একটি ঝোড়ো হাওয়ার অঞ্চল, যেখানে বাতাসের গতিবেগ ৪১ থেকে ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে।

কোন ঝোড়ো হাওয়ার অঞ্চলে বাতাসের গতিবেগ ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটারের মধ্যে হলে তাকে বলে ঘূর্ণিঝড়।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট একটি গভীর নিম্নচাপ গত ৬ নভেম্বর সীতাকুন্ডের কাছ দিয়ে চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করে।

সর্বশেষ গত ৩০ নভেম্বর বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় ‘নাদা’র সৃষ্টি হয়। তবে এটি দুর্বল হয়ে নিম্নচাপ আকারে ২ ডিসেম্বর ভারতের তামিল নাড়ু উপকূল অতিক্রম করে।

Print Friendly, PDF & Email