April 29, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

মে থেকে বিআরটিএ’র ৮০ ভাগ সেবা অনলাইনে

ডেস্ক : আগামী বছরের মে মাস থেকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ৮০ শতাংশ সেবা অনলাইনে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প এবং অন্যান্য কার্যক্রমের অগ্রগতি পর্যালোচনা সভা শেষে মন্ত্রী এ তথ্য জানান।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মে মাস থেকে আমরা বিআরটিএ-কে ৮০ ভাগ অনলাইনে নিয়ে যাচ্ছি। বিআরটিএ’র ৮০ ভাগ সেবা অনলাইনে দেওয়া হবে। এতে সেবার মান বাড়বে এবং অপকর্ম-দুর্নীতিও কমবে।’

এজন্য এটুআই (একসেস টু ইনফরমেশন) প্রকল্পের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে বলে বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সভায় জানান।

জানুয়ারি থেকে টোল নীতিমালা কার্যকর

মন্ত্রী বলেন, ‘রাস্তা সংরক্ষণের জন্য, ভারী যানবাহন থেকে রক্ষা করার জন্য আগামী এক মাসের মধ্যে মহাসড়কের নির্দিষ্ট স্থানে এক্সেললোড কন্ট্রোল স্টেশন স্থাপনের কাজ শেষ করতে হবে। কারণ আগামী জানুয়ারি থেকে আমরা টোল নীতিমালা কার্যকর করার চিন্তা-ভাবনা করছি।’

চলতি শুকনো মৌসুমের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাগুলো মেরামত করে সচল করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।

২৪১টি গাড়ি মেরামত করতে চায় বিআরটিসি

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) ২৪১টি গাড়ি মেরামেতের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এজন্য প্রায় ৫২ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) প্রণয়ন করা হয়েছে। শিঘ্রই এটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে অনুমোদনের জন্য। অনুমোদন পেলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত গাড়িগুলো মেরামতে হাত দেব।’

ভারত থেকে ১১০০ গাড়ি আসছে

ভারত থেকে ট্রাক, ডাবল ডেকারসহ এক হাজার ১০০টি গাড়ি আনার প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আশা করছি ভারতের লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় আগামী বছরের মাঝামাঝি গাড়িগুলো পাব।’

১৬ লাখ ডিজিটাল নাম্বার প্লেট বিতরণ

এ পর্যন্ত বিআরটিএ ১৬ লাখ ডিজিটাল নাম্বার প্লেট প্রস্তুত ও বিতরণ করেছে জানিয়ে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, ‘বিআরটিএ’র হিসাব অনুযায়ী দেশে মোট গাড়ি ২৭ লাখ। বাকিদের ডিজিটাল নাম্বার প্লেট নিতে সময় বেঁধে দেওয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘উত্তরা থেকে শাপলা চত্বর পর্যন্ত চলমান মেট্রোরেল (রুট-৬) এর ৮টি প্যাকেজের মধ্যে ৬টির দরপত্র আহ্বান প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। ২টি প্যাকেজের প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে। ডিপো নির্মাণ কাজের পাশাপশি ইউটিলিটি শিফটিংয়ের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে।’

মেট্রোরেলে ৩ বিলিয়ন ডলার দিতে জাইকার আগ্রহ

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘মেট্রোরেলে এখন আর কোন প্রতিবন্ধকতা নেই। জাইকারও নিরাপত্তা নিয়ে কোন অভিযোগ নেই। তারা এখন আশ্বস্ত। আমাদের অর্থমন্ত্রী এখন টোকিও সফরে আছেন। তিনি জাইকা হেড কোয়ার্টারে যাবেন। সেখানে সিকিউরিটি ইস্যু নিয়ে আলাপ-আলোচনা হবে। আমার মনে হয় তারা পুরোপুরিভাবে আশ্বস্ত হবেন।’

প্রায় ৩৭ কি.মি দীর্ঘ মেট্রোরেল রুট-১ বাস্তবায়নে জাইকা অর্থায়ন করবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ইতোমধ্যে জাইকার সঙ্গে এ লক্ষ্যে এমওডি (মিনিটস অব ডিসকাশন) সই হয়েছে। চুক্তি সইয়ের প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে আগামী ৮ জানুয়ারি ঢাকায় আসছে জাইকার উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল। এখানে ৩ বিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব আছে।’

‘রুট-১ এর এলাইনমেন্ট হচ্ছে বিমানবন্দর-খিলক্ষেত-প্রগতি সরণি-মালিবাগ-কমলাপুর পর্যন্ত ২৫ কিমি (যার ১২ কি.মি হবে পাতাল রেল) এবং খিলক্ষেত থেকে কেন্দুয়া ব্রিজ পর্যন্ত ১২ কি.মি।’

প্রায় ২১ কিমি দীর্ঘ মেট্রোরেল রুট-৫ এর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘রুটটি হবে ভাটারা থেকে নতুন বাজার, গুলশান-২, বনানী, মিরপুর-১৪, মিরপুর-১ পর্যন্ত। এক্ষত্রে সম্ভাব্য অর্থায়নকারী সংস্থা জাইকা এবং এডিবি। এটা শেষ করার টার্গেট ২০২৬ সাল।’

সভায় অতিরিক্ত সচিব ফারুক জলিল, মো. বেলায়েত হোসেন, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) নির্বাহী পরিচালক মো. কায়কোবাদ হোসেন, বিআরটিসি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, সড়ক ও জনপথের (সওজ) প্রধান প্রকৌশলী ইবনে আলম হাসান উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email