May 14, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

অধ্যাপক নাজমা রহমানের ইন্তেকাল

ডেস্ক: আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক, শিক্ষাবিদ, সংস্কৃতিজন অধ্যাপক নাজমা রহমান ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহে…রাজিউন)। বাংলাদেশ সময় শনিবার সকাল সাতটা দশ মিনিটে তিনি আমেরিকার আরিজোনার মিসায় ব্যানার বয়উড হার্ট হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন।
তার বয়স হয়েছিল ৬৬। তিনি দ্ইু মেয়ে, একভাইসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন রেখে যান। মৃত্যুর সময় তার পাশে ছিলেন বড় মেয়ে তানিয়া রহমান লুনা, মেঝ মেয়ে সোমা এবং তার ছোটভাই মসনুর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যরা।
প্রয়াত অধ্যাপক নাজমার পরিবারের পক্ষ থেকে দেবর মুক্তিযোদ্ধা ও সরকারি তোলারাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক ভিপি ফয়েজুর রহমান বাসসকে জানান, অধ্যাপক নাজমা রহমান আমেরিকার আরিজোনায় তার বড় মেয়ে তানিয়া রহমান লুনার বাসায় অবস্থার করে গত দুই বছর ধরে চিকিৎসারত ছিলেন। গত ১৬ আগস্ট তিনি গুরুতর অসুস্থ হলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই হাসপাতালে তাকে গত তিনদিন লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। আমেরিকার সময় ১৯ আগস্ট সন্ধ্যা সাতটার দিকে (বাংলাদেশ সময় আজ শনিবার সকাল সাতটা দশ মিনিট) তিনি শেষ নিঃম্বাস ত্যাগ করেন।
তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে অধ্যাপক নাজমা মস্তিস্কে স্মৃতিভ্রষ্ট রোগে ভোগছিলেন। এরশাদ সরকারের আমলে ঢাকার পাস্থপথে আওয়ামী লীগের মিছিলে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে তার মাথায় লাঠির আঘাত লাগে, সেই থেকে তিনি মস্তিস্কজনিত রোগে ভোগছিলেন। পরবর্তীতি তার হ্নদরোগ ও ডায়বেটিকসরোগেও ভোগেন। এ পর্যায়ে কিডিনির সমস্যায়ও তাকে ভোগতে হয়। ছোট মেয়ে সোমা জার্মানিতে থাকেন। মার অসুস্থতার খবর পেয়ে ১৮ আগষ্ট তিনি আমেরিকার আরিজোনায় মায়ের কাছে যান।
আমেরিকা থেকে ফোনে তার বড় মেয়ে তানিয়া রহমান লুনা ফোনে বাসসকে জানান, আরিজোনায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনে তার নামাজে জানাজা শেষে সেখানে প্রয়াত তার ছোট মেয়ে রুচিতা রহমান লোপা ও বড় মেয়ের স্বামী প্রয়াত চিত্রশিল্পী মোরাদুজ্জামান মুরাদের কবরের পাশে অধ্যাপক নাজমাকে দাফন করা হবে।
বাসস’র নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, ছাত্র জীবনেই তিনি রাজনীতির সাথে জড়িত হন। ছাত্রজীবনে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন করেন। আশির দশকে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগে যোগ দেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন (১৯৯৭ থেকে ২০০১) ও এর আগে তিনি দীর্ঘদিন শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি ছিলেন। তার স্বামী মুজিবুর রহমান বাদল দৈনিক সংবাদের চীফ রিপোর্টার ও নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রকাশিত দৈনিক সকাল বার্তার সম্পাদক ছিলেন। অধ্যাপক নাজমা রহমান সাপ্তাহিক পূর্বানী, চিত্রালী ও দৈনিক সকাল বার্তায় দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা করেন। নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের স্থায়ী সদস্য ছিলেন। নারায়ণগঞ্জ নগরীর মিশনপাড়ায় তার পৈত্রিক বাড়ি। তার পিতার নাম খন্দকার নাজমুল হক। নাজমা বেশ কিছুকাল নারায়ণগঞ্জ কলেজে শিক্ষকতা করেন। আলী আহম্মদ চুনকার নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার দ্বিতীয় মেয়াদের চেয়ারম্যান হওয়ার সময় তিনি নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় মাস্টার্স করা নাজমা রহমান সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে ও পরে নারায়ণগঞ্জের সাহিত্য সংগঠন ড্যাফোডিল, সাংস্কৃতিক সংগঠন শাপলার সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি ড্যাফোডিলের প্রযোজনা ‘লেট দেয়ার বি লাইট’, গোর্কির ‘মা’ নাটক নির্দেশনা দেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে কয়েকটি নাটকে অভিনয় করেন। তার মৃত্যুতে নারায়ণগঞ্জের সর্বত্র শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার মৃত্যুতে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি কবি হালিম আজাদ ও সাধারণ সম্পাদক নাফিজ আশরাফ,নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, নারায়ণগঞ্জ কবিতা পরিষদ, বাংলাদেশ কটন এসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন সংগঠন পৃথক বিবৃতেতি শোক প্রকাশ করেছেন।(বাসস)

Print Friendly, PDF & Email