April 28, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

প্রবারণা পূর্ণিমা বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বৃহত্তর ধর্মীয় উৎসব

ডেস্ক: বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ‘প্রবারণা পূর্ণিমা’। প্রবারণা পূর্ণিমা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পালিত দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব যা আশ্বিনী পূর্ণিমা নামেও পরিচিত।

রেল পথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্হায়ী কমিটির সভাপতি, জনাব এ.বি. এম ফজলে করিম চৌধুরী এম,পি মহোদয় সকল রাউজানবাসীকে শুভ আষাঢ়ী পূর্ণিমা মৈএীময় শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।

উপস্থিত ছিলেন ১০ নং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব, আব্বাস উদ্দিন আহমেদ ১১ নং পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লায়ন সাহাবুদ্দিন আরিফ বিএ ১০ নং ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডাঃ স্বপন বড়ুয়া।

আড়াই হাজার বছর আগে গৌতম বুদ্ধ ‘বুদ্ধত্ব’ লাভের পর আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা তিথি পর্যন্ত তিন মাস বর্ষাবাস শেষে প্রবারণা উৎসব পালন করেন। সেই থেকে বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরুরা বর্ষাবাস শেষে দিবসটি পালন করে আসছেন। এই শুভতিথিতে ভগবান বুদ্ধ দেবলোক থেকে সাংকশ্য নগরে অবতরণ করেছিলেন। ভিক্ষুদের ত্রৈমাসিক বর্ষাব্রতাদিও সম্পন্ন হয় আজকের দিনে।

কথিত আছে, এই তিথিতে গৌতম বুদ্ধ ৬০ জন প্রশিক্ষিত শিষ্যকে ধর্ম প্রচারণার জন্য বিভিন্ন স্থানে প্রেরণ করেন এবং তাদের বলেন, ‘চরত্থ ভিকখবে চারিকং, বহুজন হিথায় বহুজন সুখায়’- অর্থাৎ, তোমরা বহুজনের হিতের জন্য, বহুজনের সুখের জন্য চারিদিক ছড়িয়ে পড়।

এ কারণে আশ্বিনী পূর্ণিমা বা প্রবারণা পূর্ণিমা বৌদ্ধদের পরম পবিত্র দিন। পরবর্তী একমাসব্যাপী প্রতিটি বৌদ্ধ গ্রামে পালাক্রমে যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় শুরু হয় দানশ্রেষ্ঠ ‘কঠিনচীবর দান’ উৎসব।

এক নজরে কঠিন চীবরদান
‘কঠিন চীবর দান’ বৌদ্ধ ধর্মের একটি ধর্মীয় আচার ও উৎসব, যা সাধারণত বাংলা চন্দ্রপঞ্জিকা অনুযায়ী প্রবারণা পূর্ণিমা ভাদ্র মাসের পূর্ণিমা পালনের এক মাসের মধ্যে যেকোনো সুবিধাজনক সময়ে পালন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে মূলত বৌদ্ধ ভিক্ষুদেরকে ‘ত্রি-চীবর’ নামে বিশেষ পোশাক দান করা হয়। ধর্মাবলম্বীগণ পূণ্যের আশায় প্রতি বছর এভাবে চীবরসহ ভিক্ষুদের অন্যান্য আনুষঙ্গিক সামগ্রীও দান করে থাকেন।
ত্রি-চীবর হলো চার খণ্ডের পরিধেয় বস্ত্র, যাতে রয়েছে দোয়াজিক, অন্তর্বাস, চীবর ও কটিবন্ধনী। এই পোশাক পরতে দেয়া হয় বৌদ্ধ ভিক্ষুদের।

কঠিনচীবর দান প্রদানকারী এবং দান গ্রহণকারী উভয়ের ফল পুণ্যময়। কঠিনচীবর লাভের ভিক্ষুর পঞ্চফল এবং তিনি পাঁচটি দোষমুক্ত হন। এর মাধ্যমে কায়িক, বাচনিক ও মানসিক অতিরিক্ত পুণ্য সঞ্চয় হয়। এটাই কঠিনচীবর দানের বিশেষত্ব। তাই এ দানকে ‘দানশ্রেষ্ঠ’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।

মহাকারুণিক বুদ্ধ পাথ্যেয়কবাসী ত্রিশজন ভিক্ষুকে উপলক্ষ করে দানোত্তম কঠিনচীবর দানের প্রবর্তন করেছিলেন।

প্রবারণার শুরু হয় ভোরে বিশ্বশান্তি কামনায় বিশেষ সূত্রপাঠের মধ্য দিয়ে। প্রতিটি বৌদ্ধবিহারে এ নিয়ম পালিত হয়। সকালে ভিন্ন ভিন্ন বিহার প্রাঙ্গণে উত্তোলন করা হয় জাতীয় ও ধর্মীয় পতাকা। প্রবারণা পূর্ণিমা
যে কারণে পালন করা হয়।

বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ‘প্রবারণা পূর্ণিমা’ প্রবারণা পূর্ণিমা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পালিত দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব যা আশ্বিনী পূর্ণিমা নামেও পরিচিত।

‘প্রবারণা’ শব্দের পালি আভিধানিক অর্থ— নিমন্ত্রণ, আহ্বান, মিনতি, অনুরোধ,সমাপ্তি, ভিক্ষুদের বর্ষাবাস পরিসমাপ্তি, বর্ষাবাস ত্যাগ, বর্ষাবাস ত্যাগের কার্য অথবা শিষ্টাচার।

প্রবারণা দ্বারা আত্মশুদ্ধি বা আত্মসমালোচনাকেও বোঝায়। আজকের দিনে ভিক্ষুরা হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে চারিত্রিক শুদ্ধির জন্য একে অন্যকে করজোড়ে বলেন অহিংসা পরম ধর্ম।
প্রতিবেদন-মিলন বৈদ্য শুভ,রাউজান,চট্টগ্রাম

Print Friendly, PDF & Email