ডেস্ক: সর্বস্তরের মানুষের ফুলেল শ্রদ্ধায় সিক্ত হলেন মুক্তিযোদ্ধা ও ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী। শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য প্রিয়ভাষিণীর মরদেহ আজ বেলা ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আনা হয়। সেখানে তাকে প্রথমে ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়। এরপর বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ তার মরদেহে শ্রদ্ধা জানান।
ভালোবাসা আর চোখের জলে এই মুক্তিযোদ্ধা শিল্পীকে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত তার কফিনে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ ও সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর কফিনে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও সৈয়দ আশরাফের পক্ষে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
এই মুক্তিযোদ্ধা শিল্পীর মরদেহে শ্রদ্ধা জানায় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, প্রজন্ম’৭১, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, নারী সংহতি, জাতীয় বিপ্লবী পার্টি, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর ও গণজাগরণ মঞ্চ।
গত মঙ্গলবার (৬ মার্চ) বাদ এশা বারিধারার পিংক সিটিতে ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে দ্বিতীয় জানাজা শেষে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হবে। ১৩ মার্চ বিকেল সাড়ে ৪টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শোকসভা অনুষ্ঠিত হবে।
ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী গত মঙ্গলবার (৬ মার্চ) রাজধানীর ল্যাব এইড হাসপাতালে মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি তিন ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে গেছেন।
ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ছাড়াও লিভার, কিডনি ও থাইরয়েডের সমস্যায় ভুগছিলেন। গত ৮ নভেম্বর বাথরুমে পড়ে গিয়ে পায়ে গুরুতর আঘাত পান তিনি। সেসময় তাকে হাসপাতালে নিয়ে কয়েক দফা চিকিৎসা দেওয়া হয়।
প্রিয়ভাষিণী বাংলাদেশের ভাস্কর্য চর্চায় ব্যতিক্রমী একজন শিল্পী ছিলেন। দামি জিনিসের পরিবর্তে চারপাশে পাওয়া ডাল, পাতা, কাঠের টুকরা, শেকড়, গাছের গুড়িকে তুলে এনে শিল্পে রূপ দিতেন। শিল্পকলায় অসামান্য অবদানের জন্য ২০১০ সালে তাকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পদক ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ প্রদান করা হয়।
একাত্তরের নির্মম ইতিহাসের প্রত্যক্ষ সাক্ষী ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী একজন মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হন তিনি। ২০১৬ সালের ১১ আগস্ট তাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেয় সরকার।
এ বিভাগের আরো..
সাবেক বিচারপতি আবদুল আউয়ালের ইন্তেকাল
দুই সিটির নবনির্বাচিত মেয়ররা শপথ নিলেন
কয়রায় জাতির পিতার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত