May 17, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

সমুদ্রের দাহ্য বরফ: বিশ্বের ভবিষ্যৎ জ্বালানী!

ডেস্ক: সাগরের তলদেশ থেকে চীন এমন কিছু বস্তু বা পদার্থ তুলে এনেছে যা দেখতে বরফের মতো। এবং তা থেকে বের করে আনা হয়েছে গ্যাস।
বলা হচ্ছে, এই পদার্থই হতে পারে সারা বিশ্বের ভবিষ্যৎ জ্বালানী।
দক্ষিণ চীন সাগরের তলদেশ থেকে বরফ-সদৃশ এই পদার্থটি তুলে এনে, দেশটি এই প্রথমবারের মতো এখান থেকে গ্যাস বের করে এনেছে।
চীনা কর্তৃপক্ষ তাদের এই সাফল্যকে উল্লেখ করেছে বড়ো ধরনের আবিষ্কার হিসেবে।
এই পদার্থটিকে বলা হয় দাহ্য বরফ। এটি এর জনপ্রিয় নাম। অর্থাৎ বরফ কিন্তু এটি থেকে আগুন জ্বলতে পারে। আরো সহজ কর বলতে গেলে এটি হচ্ছে- বরফের আগুন।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রাকৃতিক গ্যাসের এই ভাণ্ডার, ছড়িয়ে আছে সাগরের তলদেশে। যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপানের মতো বহু দেশ চেষ্টা করছে প্রাকৃতিক গ্যাসের এই মজুদ থেকে গ্যাস তুলে আনতে। কিন্তু এই কাজটা অত্যন্ত কঠিন।

মেক্সিকো উপসাগরের তলদেশ থেকে তুলে আনা মিথেন হাইড্রেটস

দাহ্য বরফ – এই নাম থেকেই বোঝা যায় এটি হচ্ছে পানি এবং গ্যাসের মিশ্রণের বরফ।
সিঙ্গাপুরে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ডিপার্টমেন্ট অফ কেমিক্যাল এন্ড বায়োমলিউক্যুলার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক প্রভীন লিঙ্গা বলেছেন, এটা দেখতে বরফের ক্রিস্টালের মতো।
“তবে যদি এটিকে খুব কাছে থেকে অণুর পর্যায়ে জুম করে দেখা হয় তাহলে দেখা যাবে সেখানে মিথেনের অণু আটকা পড়ে আছে পানির অণুর ভেতরে।”
অত্যন্ত কম তাপমাত্রা আর উচ্চ চাপে এসব গঠিত হয়।
এই দাহ্য বরফটি নিয়ে শুনুন বাংলাদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানী ইন্সটিটিউটের পরিচালক ড. সাইফুল হকের সাক্ষাৎকার। শুনতে হলে উপরের অডিও লিঙ্কে ক্লিক করুন।
নগ্ন ছবি ধরার অ্যাপ
আপনার সন্তানের স্মার্ট ফোন ব্যবহার নিয়ে কি আপনি খুব বেশি চিন্তিত? বিশেষ করে এই ফোনের সাহায্যে তার নগ্ন ছবি চালাচালির ব্যাপারে।
এ ব্যাপারে অভিভাবকদের আশ্বস্ত করতে এগিয়ে এসেছে একটি কোম্পানি যারা এমন একটি অ্যাপ তৈরি করেছে যার সাহায্যে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার সন্তান কখন অন্য কারো কাছ থেকে ফোনে নগ্ন ছবি রিসিভ করছে, আবার কখন সে এধরনের ছবি অন্য কাউকে পাঠাচ্ছে।
এই অ্যাপটির নাম গ্যালারি গার্ডিয়ান। এতে এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে যা কোনো ছবিতে নগ্নতাকে চিহ্নিত করতে পারে।

নগ্ন ছবি শনাক্ত করবে এই মোবাইল অ্যাপ

কোনো শিশু যখন তার মোবাইল ফোনে নগ্ন ছবি সেইভ করবে তখনই সাথে সাথে অভিভাবকের ফোনে বসানো অ্যাপের সাহায্যে তাকে এবিষয়ে সতর্ক করে দেওয়া হবে।
ইপো টেকনোলজিস নামের একটি কোম্পানি এই অ্যাপটি উদ্ভাবন করেছে। কিভাবে কাজ করে এই প্রযুক্তি- ব্যাখ্যা করছিলেন কোম্পানিটির প্রতিষ্ঠাতা ড্যানিয়েল স্কুরনস্কি। তিনি বলেন, এটা খুব সহজ।
“যেসব ছবি কেউ রিসিভ করবে বা পাঠাবে এই অ্যাপ প্রথমে যাচাই করে দেখবে সেসব ছবিতে কোনো মানুষ আছে কীনা। এটা করার পর অ্যাপটি দেখবে যে ওই ছবিটিতে কি ধরনের ত্বক দেখা যায়, কতোটুকু দেখা যায়। ছবিটিতে যতো বেশি ত্বক দেখা যাবে অ্যাপের এলগরিদম ঠিক ততোটাই বেশি কাজ করবে। এই এলগরিদমের সাহায্যেই নির্ধারণ করা হবে সন্দেহজনক ছবিটির বিষয়বস্তু।”
বিভিন্ন রকমের ছবি রিসিভ করে এবং পাঠিয়ে এই অ্যাপটি পরীক্ষা করে দেখেছে বিবিসি।
এসময় দেখা গেছে এই অ্যাপটি একটি ছবিকে ধরতে পারেনি। ছবিটি হচ্ছে, পুরো পোশাক পরিহিত একটি মিরর সেলফি- অর্থাৎ আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে তোলা নিজেরই একটি ছবি। কিন্তু সেখানে শরীরের বিশেষ একটি অংশ উন্মুক্ত ছিলো।
তার মানে কি যে এই অ্যাপের মধ্যে এখনও এমন কিছু ফাঁক রয়ে গেছে যা দিয়ে নগ্ন ছবি বেরিয়ে পড়তে পারে?
ড্যানিয়েল স্কুরনস্কি বলেন, “এর কারণ হচ্ছে, এই অ্যাপ প্রথমে শরীরের ত্বকের ওপর দৃষ্টি দেয়। অর্থাৎ কতোটুকু শরীর দেখা যাচ্ছে তার ওপর। এই অ্যাপটি যাতে যৌনাঙ্গকেও শনাক্ত করতে পারে আমরা এখন সেই লক্ষ্যে কাজ করছি।”
“এই কাজের জন্যে যন্ত্রটিকে তৈরি করা কখনও কখনও খুব কঠিন একটি কাজ। এই কাজটি করতে স্মার্ট ফোনের এলগরিদম তৈরি করাই হচ্ছে এখনকার চ্যালেঞ্জ,” বলেন তিনি।

এই ছবিটিকেও নগ্ন ছবি বলে ধরেছে- এসব কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চলছে

তিনি জানান, “এটা কঠিন কারণ যৌনাঙ্গের আকার ও আকৃতি বিভিন্ন রকমের। তবে এটাও মনে রাখতে হবে যে প্রতিদিনই এই এলগরিদমের উন্নতি হচ্ছে। প্রতিনিয়তই এটি নতুন নতুন জিনিস শিখছে। এবং এখনও এই অ্যাপটা যা করতে পারছে সেটিও দারুণ ঘটনা।”
শুধু যে নগ্ন ছবিকে ঠিক মতো ধরতে পারেনি সেটাই নয়, এই অ্যাপটি ভুল করে অন্য একটি ছবিকে নগ্ন ছবি বলে চিহ্নিত করেছে। ওই ছবিটিতে এক দল শিশু সমুদ্র সৈকতে খালি গায়ে খেলা করছিলো।
এই ধরনের ঘটনা কি অভিভাবকদের বিরক্ত করতে পারে?
“একজন অভিভাবক হিসেবে আমি কিন্তু এধরনের সতর্কবার্তা পেলে খুশিই হবো। কারণ এর সাহায্যে আমি জানতে পারবো যে আমার সন্তান আসলে কি ধরনের ছবি চালাচালি করছে।”
বিবিসি কুড়িটি নগ্ন ছবি পাঠিয়ে এই অ্যাপটি পরীক্ষা করে দেখেছে। তার মধ্যে ১২টি ছবি সাথে সাথেই ধরা পড়েছে। কিন্তু বাকি আটটি ছবি বেরিয়ে পড়েছে প্রযুক্তির ফাঁক গলে।
কোম্পানিটি দাবি করছে, নগ্ন ছবি শনাক্ত করার ক্ষেত্রে এই অ্যাপের সাফল্যের হার ৯৬ শতাংশ।
বিজ্ঞানের আসর পরিবেশন করেছেন মিজানুর রহমান খান।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

Print Friendly, PDF & Email