May 15, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

বাংলাদেশের তদন্ত প্রতিবেদন চেয়েছে ফিলিপাইন

ডেস্ক : রিজার্ভ চুরির অর্থ উদ্ধার ত্বরান্বিত করতে বাংলাদেশের তদন্ত প্রতিবেদন চেয়েছে ফিলিপাইন সরকার। বাংলাদেশের তদন্তে যা উঠে এসেছে, তা ফিলিপাইনকে দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন দেশটির অর্থমন্ত্রী।

অর্থমন্ত্রী কার্লোস ডোমিনগুইজ বলেন, ঢাকার যে প্রতিবেদন, সেটাতে আমরা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছি।

রবিবার রয়টার্সের খবরে বলা হয়, ফিলিপাইন সরকার চাইছে, সাইবার হামলার মাধ্যমে রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরির ঘটনায় বাংলাদেশ যে তদন্ত করেছে, তার ফলাফল তাদের দেখানো হোক।

অজ্ঞাত হ্যাকাররা নিউ ইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে গচ্ছিত বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার হাতিয়ে নেয়। পরে এ অর্থ ফিলিপাইনের রিজাল ব্যাংক থেকে উত্তোলন করা হয়।

ফিলিপাইনের অর্থসচিব কার্লোস ডোমিনগুয়েজ বলেছেন, তদন্তের ফলাফল দেখাতে ঢাকাকে ‘জোরালো সুপারিশ’ করেছে ম্যানিলা। গত সপ্তাহে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সাথে বৈঠক করেন তিনি। প্রতিনিধিদলকে ডোমিনগুয়েজ নিশ্চিত করেছেন, তার সরকার বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধার করে দিতে সব কিছু করছে।

প্রতিনিধিদল এক ববৃতিতে ডোমিনগুয়েজের উদ্ধৃতি দিয়েছে, যাতে বলা হয়েছে, আপনাদের হয়ে যতটা সম্ভব জোরালোভাবে আমরা মামলাগুলো লড়ছি।

তদন্ত সম্পর্কে অপরাধীচক্র জেনে যাবে- এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থ চুরির ঘটনায় তাদের নিজস্ব তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করতে রাজি হয়নি।

চুরির বেশির ভাগ অর্থ ফিলিপাইনে ক্যাসিনোতে চলে যায়। চুরি হওয়া অর্থের মাত্র দেড় কোটি বাংলাদেশ ব্যাংককে ফিরিয়ে দিতে পেরেছে ফিলিপাইন। এখনো প্রায় সাড়ে ৬ কোটি ডলার উদ্ধার করতে পারেনি বাংলাদেশ।

ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতের্তে বাংলাদেশের অর্থ ফেরত দেয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু গত সপ্তাহে তিনি বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলের সাথে নির্ধারিত বৈঠক বাতিল করেন।

বাংলাদেশের তদন্ত প্রতিবেদন ফিলিপাইন সরকারকে দেখানো হয়েছে কি না- জানতে চাইলে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জন গোমেজ বলেন, এখনো আমাদের কাছে কেউ কিছু চাননি।

ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও রিজাল ব্যাংকের কাছে চুরি যাওয়া অর্থ ফিরিয়ে দিতে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে রিজাল ব্যাংক ইতিবাচক থাকলেও পরে তারা অর্থ ফিরিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। অর্থ চুরি যাওয়ার জন্য তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের অবহেলাকে দায়ী করেছে।

ফিলিপাইন সফর শেষে বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক রিজাল ব্যাংকের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় বলেছিলেন, রিজাল ব্যাংক যেহেতু চুরির অর্থ গ্রহণ করেছে, সেহেতু এর দায় তাদের নেয়া উচিত। চুরির অর্থ লেনদেন হওয়া ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ায় রিজাল ব্যাংককে ২ কোটি ডলার জরিমানা করে ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। জরিমানা দেয়ায় প্রমাণিত হয়, তারা এর জন্য দায়ী।

ফিলিপাইনের অর্থ পাচারবিরোধী একটি প্রতিষ্ঠান গত মাসে চুরির অর্থের সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে রিজাল ব্যাংকের পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করে।

অর্থ চুরির ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআই, ইন্টারপোল, বাংলাদেশ পুলিশ ও ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ তদন্তে নামলেও এখন পর্যন্ত তারা কাউকে আটকে করতে পারেনি। সূত্র : রয়টার্স অনলাইন।

Print Friendly, PDF & Email