May 15, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

সুন্দরবনের ক্ষতি না করেই রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : সুন্দরবন বা পরিবেশের কোনো ক্ষতি হবে না, এ-সংক্রান্ত নানা তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে। তিনি এই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রবিরোধী বাম দলগুলোর আন্দোলন প্রসঙ্গে বলেন, ‘তারা বরাবরই উল্টো রাজনীতি করেছে।’ সম্প্রতি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এক সংবাদ সম্মেলনে রামপালের বিরোধিতা করে যেসব তথ্য-উপাত্ত দিয়েছেন তাও মিথ্যা বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী। গতকাল বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। সেখানে তিনি বিশ্বের বহু উন্নত দেশে শহরের মধ্যেও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থাকার সচিত্র তথ্য তুলে ধরেন।

ভারতের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বাগেরহাটের রামপালে ১৩০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার এ বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে, যা বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ সুন্দরবনের পরিবেশ ও প্রতিবেশের ক্ষতি করবে দাবি করে এর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালাচ্ছে বেশ কয়েকটি বাম দলের সমন্বয়ে গঠিত তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি। সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে তাঁর অবস্থান জানিয়েছেন। এমন বাস্তবতায় তথ্য-প্রমাণ তুলে ধরতে প্রধানমন্ত্রী এ সংবাদ সম্মেলন ডাকেন।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর স্বাগত বক্তব্যের পর পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন একটি ‘পাওয়ার পয়েন্ট’ উপস্থাপন করেন। তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বনের আশপাশে বিদ্যুৎকেন্দ্র থাকার নজির দেখানোর পাশাপাশি সুন্দরবনে যেকোনো ধরনের দূষণ এড়াতে নেওয়া পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন। এরপর রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের গুরুত্ব তুলে ধরে নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে নিজের বক্তব্যের শুরুতেই শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে আমি আপনাদের সামনে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করে প্রমাণ করে দেব, বাস্তবায়নাধীন রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি করবে না।’

বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে উৎপাদন এখনকার প্রায় ১৫ হাজার মেগাওয়াট থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াটে বাড়াতে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সে কারণেই রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র।’

স্বল্প মেয়াদে বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানে কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘কিন্তু কুইক রেন্টাল কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। দীর্ঘস্থায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লার ব্যবহার বাড়ানো ছাড়া বিকল্প নেই। যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানি, চীন, জাপান, ভারত তাদের মোট বিদ্যুতের ৪০ থেকে ৯৮ শতাংশ উৎপাদন করে কয়লা দিয়ে। অন্যদিকে বাংলাদেশে কয়লাবিদ্যুতের পরিমাণ মাত্র ১ শতাংশের সামান্য বেশি।’

স্থান হিসেবে রামপালকে নির্বাচন বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য প্রয়োজন সস্তা পরিবহন ব্যবস্থা। সে জন্য কয়লা খনির কাছাকাছি অথবা সমুদ্র উপকূল বা গভীরতাসম্পন্ন নদীর তীরে এই শ্রেণির বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়ে থাকে। আরেকটি বিবেচ্য দিক হচ্ছে যত দূর সম্ভব কমসংখ্যক মানুষের স্থানান্তর।’

এক হাজার ৮৩৪ একর জমির ওপর বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপিত হবে বলে বিএনপি চেয়ারপারসন দাবি করলেও তা নাকচ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আসলে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য জায়গা নেওয়া হয়েছে ৯১৫ একর। এর মধ্যে ৪৬৫ একরে মূল বিদ্যুৎকেন্দ্র থাকবে। বাদবাকি জায়গায় সোলার প্যানেল বসবে এবং সবুজায়ন করা হবে।’

আট হাজারের বেশি মানুষকে উচ্ছেদ করা হয়েছে বলে খালেদা জিয়ার দেওয়া বক্তব্য নাকচ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে এলাকাটিতে মানুষের কোনো স্থায়ী বসতি ছিল না। কাউকে উচ্ছেদ করা হয়নি। নিচু, পতিত জমি ভরাট করে উঁচু করা হয়েছে।’

এই বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল মানুষের আর চুরি করে গাছ কাটার প্রয়োজন হবে না বলে মনে করেন তিনি। ‘কম্পানি থেকে বছরে ৩০ কোটি টাকা সিএসআর ফান্ডে জমা হবে। তা দিয়ে এলাকার জনগণের আর্থসামাজিক উন্নয়নকাজ করা হবে। লাখ লাখ মানুষ উপকৃত হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিকভাবে গভীর বনভূমির ১০ কিলোমিটারের মধ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ না করার আইন আছে। আমাদের এই বিদ্যুৎকেন্দ্র সুন্দরবনের প্রান্ত সীমানা থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে এবং বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ থেকে প্রায় ৬৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।’

ভারতে বনাঞ্চলের ২৫ কিলোমিটারের মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ‘আইনি বাধা’ থাকার বিষয়ে খালেদা জিয়ার বক্তব্যের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশের সঙ্গে ভারতের ওই রকম নীতিমালার তুলনা উচিত নয়।

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প নজরদারিতে রাখবেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা জানেন, আমরা যখনই যেখানে যে প্রকল্প করি সেটাকে সব সময় নজরদারিতে রাখা হয়। এটা করাই হচ্ছে পরিবেশ সম্পর্কে সমস্ত কিছু মাথায় রেখে। আপনারাও এর সুপারভাইজ করতে পারবেন, অনলাইনে সব দেওয়া থাকবে। আর আমাকে তো নজরে রাখতেই হবে। কারণ এর সব তো আমারই প্রজেক্ট।’

প্রধানমন্ত্রী আশ্বস্ত করে বলেন, ‘শব্দ ও আলোদূষণ সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখার জন্য আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। গভীর সমুদ্র থেকে কাভার্ড বার্জে কয়লা পরিবহন করা হবে। বার্জে ব্যবহৃত হবে ঢাকনাযুক্ত কম শব্দযুক্ত ইঞ্জিন।’

তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎকেন্দ্রে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা থাকবে। ১৪ কিলোমিটার দূরে শব্দ যাবে না। তা ২০০ মিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘পশুর নদী থেকে পানি নিয়ে ব্যবহারের পর তা শীতল করে নদীতে ফেলা হবে। দূষিত বা গরম পানি নদীতে ফেলা হবে না। শুষ্ক মৌসুমে পশুর নদীর প্রবাহের মাত্র দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ অর্থাৎ ২ হাজার ভাগের এক ভাগ পানি প্রয়োজন হবে। নদীর নাব্যতা বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত ড্রেজিং করা হবে।’

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সাব-ক্রিটিক্যালের তুলনায় সুপারক্রিটিক্যালে ৪০ শতাংশ কার্বন, সালফার ও নাইট্রোজেন গ্যাস নিঃসরণ কম হয়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সাধারণ বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা পোড়ানোর দক্ষতা যেখানে ২৮ শতাংশ, সেখানে আলট্রা-সুপারক্রিটিক্যাল পাওয়ার প্লান্টের দক্ষতা ৪২ থেকে ৪৩ শতাংশ। একই পরিমাণ কয়লা পুড়িয়ে আমরা দেড় গুণ বিদ্যুৎ পাব। সবচেয়ে গুণগত মানের কয়লা এখানে ব্যবহার করা হবে। কয়লা আমদানি করা হবে অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে।’

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বনভূমির মাঝখানে, কাছে এমনকি শহরের মধ্যেও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থাকার তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ায় ১৩০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র ন্যাশনাল পার্কের এক কিলোমিটারের মধ্যে, ভিয়েতনামের কুয়াং নিন বিদ্যুৎকেন্দ্র বিশ্ব ঐতিহ্য হা লং বের ছয় কিলোমিটার দূরে, জাপানের ইয়কোহোমায় ইসোগো বিদ্যুৎকেন্দ্র আবাসিক এলাকার কাছে, তাইওয়ানের তাইচুং বিদ্যুৎকেন্দ্র শহরের প্রাণকেন্দ্রে, জার্মানির ক্রাফটওয়ার্ক-মুরবার্গ এবং রেইনহফেন ড্যাম্ফক্রাফট বিদ্যুৎকেন্দ্র শহরসংলগ্ন ও নদীর তীরে অবস্থিত।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রায় ৪০ শতাংশ আসে কয়লা থেকে। যাঁরা বিভিন্ন দেশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের কথা বলছেন, তাঁরা কত দেশে কতগুলো কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু আছে তা বলছেন না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কাজের মান নিয়ে কোনো প্রশ্নের অবকাশ নেই। আমরা এ বিষয়ে কোনো আপস করব না।’

এক্সিম ব্যাংক না এলে নিজস্ব অর্থায়ন : রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে ভারতের এক্সিম ব্যাংকের ঋণ বন্ধে পরিবেশবাদী ১৭৭টি সংগঠনের অনুরোধপত্রের প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই সংগঠনগুলো কারা আমরা সে খোঁজ নিচ্ছি। এক্সিম ব্যাংক যদি না দেয় নিশ্চয় অন্য কোনো সোর্স থেকে আমরা পাব। না হলে আমাদের নিজেদের টাকায় করব। আমরা কি পিছিয়ে যাব নাকি? পদ্ম সেতুতে তারা অর্থায়ন বন্ধ করেছে, আমরা করিনি? আমাদের নিজেদের টাকায় করব। আমাদের নিজেদের করার মতো ক্ষমতা আছে।’

রামপালে অর্থায়নের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উভয় সংস্থা ১৫ শতাংশ বিনিয়োগ করবে। বাকি ৭০ শতাংশ দেবে ভারতের এক্সিম ব্যাংক। এই ৭০ শতাংশ অর্থায়নের ব্যাংক গ্যারান্টার বাংলাদেশ। অজ্ঞতাবশত কেউ কেউ এটাকে অন্যভাবে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করছেন। গ্যারান্টার হওয়া মানে তো বিনিয়োগ নয়। ব্যক্তিগত যেকোনো লোনের জন্যও গ্যারান্টার লাগে।’

বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ হবে কয়লার দামের ভিত্তিতে : রামপালে উৎপাদিত বিদ্যুতের দাম ৮ দশমিক ৮৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে খালেদা জিয়ার বক্তব্যকে মিথ্যা আখ্যা দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের দাম নির্ধারিত হবে কয়লার দামের ওপর ভিত্তি করে।’

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘উৎপাদিত বিদ্যুৎ পুরোটাই বাংলাদেশে ব্যবহার হবে। রামপালে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ভারতে যাবে না। তাদের অংশের বিদ্যুৎ বাংলাদেশ কিনে নেবে।’

রামপালবিরোধীদের সঙ্গে আলোচনা নয় : বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের বিরোধিতাকারীদের সঙ্গে সরকার আলোচনা করবে কি না জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ওনাদের সঙ্গে বসেছেন, তাঁদের রামপালে নিয়েও গেছেন হেলিকপ্টারে করে। হেলিকপ্টারে নিয়ে গেলে তো হবে না, রামপাল কত দূর তা বুঝতে হলে নিয়ে যেতে হবে গাড়িতে করে। আমাদের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করাই তাঁদের একমাত্র উদ্দেশ্য। কাজেই তাঁদের সঙ্গে বসে কোনো লাভ হবে না।’

বিএনপির ভারত বিরোধিতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভারত বিরোধিতা করতে গিয়ে তারা যা খুশি তাই বলে, কিন্তু ভারতের কাছ থেকে যা কিছু আদায় করার আমরাই করছি। আজকে সমুদ্রসীমা বিজয় করেছি। বিএনপি কখনো সাহস পেয়েছে ভারতের কাছে এ কথা তুলতে? আমরা শুধু সাহস করি নাই, আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে মামলায় জিতে আমরা এটা আদায় করেছি। আমরা ভারতের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময় করেছি। খালেদা জিয়া বলতে পারবেন? এরশাদ, জিয়া বলতে পারবেন? কেউ ভারতকে বলতে সাহস দেখিয়েছেন যে আমাদের সমস্যা সমাধান করে দেন। আমি ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে এ বিষয়ে উদ্যোগ নিই।’

তাদের মনভোমরা পড়ে আছে ১২ শ মাইল দূরে : প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা শুধু দেশে বসে ওপরে ওপরে ভারতবিরোধী, ওদিকে গিয়ে ভারতের পা ধরবে, এটাই তাদের চরিত্র। আমাদের এটা নয়। আমরা দেশকে স্বাধীন করেছি। এ দেশের প্রতি আমরা যে দায়িত্ব বোধ করি, তাদের কি সেটা আছে?’

ভারত বিরোধিতার নামে এ দেশের বহু উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বিএনপির বিরোধিতার উদাহরণ তুলে ধরে তাদের মন পাকিস্তানে পড়ে আছে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা যে কী চিন্তা করে এটাই তো বুঝি না। তাদের তো দেহটা এখানে, হৃদয়টা পড়ে আছে ১২ শ মাইল দূরে। তাদের মনভোমরা পড়ে আছে ওখানে।’

বামরা বরাবরই উল্টো রাজনীতি করেছে : বাম দলগুলোর রামপাল বিরোধিতা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বামদের রাজনীতি! এটা তো পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে বিশ্লেষণ করতে করতে, ভাঙতে ভাঙতে টুকরো থেকে টুকরো হয়ে এখন অণু-পরমাণুতে পরিণত হয়ে যাচ্ছে। আবার জিয়াউর রহমান যখন ক্ষমতায় এসেছে, ওই ঝুড়ি, কোদাল নিয়ে তারাই খাল কাটতে গেছে। বলেছে, গণতন্ত্র রক্ষা করতে যাচ্ছি। তারা বিরোধিতা করলে অন্তত এ দেশে রাজাকার আলবদরদের ঠাঁই হতো না, যুদ্ধাপরাধীদের ঠাঁই হতো না। তারা সব সময় উল্টো রাজনীতি করেছে। উল্টো রাজনীতি করতে করতে এখন জিরো থেকে আরো জিরো হয়ে যাচ্ছে, জিরোও না, অণু-পরমাণু হয়ে গেছে।’

Print Friendly, PDF & Email