May 15, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

ঢাকায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বেড়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার কমাতে নানা ধরণের কর্মসূচির পরও ঢাকা বিভাগে এ হার বেড়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) মোহাম্মদ ওয়াহিদ হোসেন।

সচিবালয়ে ‘বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস-২০১৬’ উদযাপন উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে মঙ্গলবার মহাপরিচালক এ তথ্য জানান।

ওয়াহিদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের জন্য খুবই একটি অ্যালার্মিং জায়গা হচ্ছে ঢাকা বিভাগ। আমরা ঢাকা নিয়ে এক ধরণের নিশ্চিন্ত ছিলাম। এ বছর সাতটি বিভাগের মধ্যে ছয়টি বিভাগে ২০১১ সালের তুলনায় ২০১৪ সালে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমেছে। একমাত্র ঢাকা বিভাগে এটা কমেনি, বরং খানিকটা বেড়েছে।’

ঢাকার বিভাগের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার উল্লেখ না করে মহাপরিচালক বলেন, ‘ঢাকার সামান্য পরিবর্তনও পুরো ফিগারটাকে অনেক বেশি প্রভাবিত করে। যে জন্য আমরা সবখানে উন্নতি করতে পারলেও টোটাল ফিগারে উন্নতিটা দেখাতে পারনি শুধু ঢাকার জন্য।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের অনেকেরই চিন্তা ঢাকা মানে ঢাকা শহর। ঢাকা বিভাগ যখন ভাবি তখন কিন্তু প্রচুর দুর্গম এলাকা আছে। ঢাকা বিভাগের মধ্যে হাওড় এলাকা আছে প্রচুর। চরাঞ্চল আছে। এ জায়গাগুলো টার্গেট করে নতুন কর্মসূচি নিচ্ছি। আমি প্রায় নিশ্চিতভাবে বলতে পারি ২০১৭ সালের জরিপে এটার কিছু প্রতিফলন ঘটবে। ঢাকার অবস্থা এত খারাপ থাকবে না।’

ঢাকার বস্তি এলাকা পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের আওতাভুক্ত এরিয়া নয় জানিয়ে পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের ডিজি বলেন, ‘এটা স্থানীয় সরকারের কাজ। আমরা স্থানীয় সরকারের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ বাড়ানোর চেষ্টা করছি। কীভাবে সেবাটা আরেকটু বেশি পৌঁছে দেওয়া যায়।’

বিজিএমইএ’র ক্লিনিকগুলোতে পরিকল্পনা সমাগ্রী সহজলভ্য করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য গত ফেব্রুয়ারিতে বিজিএমইএ’র সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে বলেও জানান ওয়াহিদ।

জনসংখ্যা নিয়ে সরকারের বর্তমান পলিসি কী- সাংবাদিকরা জানতে চাইলে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের জনসংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাক এ বিষয়টি আমাদের কাম্য নয়। আমরা চাইব সাড়ে চার কোটি কিশোর-কিশোরী রয়েছে তাদেরকে আরও শিক্ষিত করা। ভাল স্বাস্থ্য দেওয়া, তাদের নিরাপত্তা দেওয়া। এটা করতে পারলে জনসংখ্যা এমনিই নিয়ন্ত্রণে থাকবে।’

দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় আগের মতো পরিবার কল্যাণ কর্মীরা ঘরে ঘরে যাচ্ছে না, কার্যক্রম অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কার্যক্রম স্থবির নয়, এখানে কিছু জনবলের ঘাটতি রয়েছে। এটা আমরা অস্বীকার করি না। আমরা নতুন জনবল নিয়োগ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি।’

‘পরিবারকল্যাণ কর্মী যাওয়া-আসাটাও যে এখন আগের মতো প্রয়োজন রয়েছে সে রকম নয়। স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের সংখ্য বেড়েছে, রাস্তাঘাট ভাল, লোকজন শিক্ষিত, তারা কেন্দ্রে চলে এসে তা গ্রহণ করে’ বলেন জাহিদ মালেক।

প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ‘জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে না। বৃদ্ধির হার স্থির হয়ে আছে, কিছুটা হয়তো বাড়ছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার এক সময় ৬ দশমিক ৩ ছিল। এখন হার ২ দশমিক ৩। আমাদের চট্টগ্রাম ও সিলেটে একটু বেশি আছে। রাজশাহী ও খুলনা জোনে ১ দশমিক ৯, ১ দশমিক ৭ এ আছে। সিলেট ও চট্টগ্রামে আমরা জোর দিয়েছি।’

দেশে জনসংখ্যা ১৬ কোটি ১০ লাখ

দেশের বর্তমানে মোট জনসংখ্যার কত-একজন সাংবাদিক জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের ডিজিকে জবাব দেওয়ার অনুরোধ করেন। ডিজি বলেন, ‘এটা (মোট জনসংখ্যা) সার্বক্ষণিক পরিবর্তনশীল। আমরা ১৬০ মিলিয়নের (১৬ কোটি) যে ফিগারটি ব্যবহার করি এখন তার থেকে একটু বেশি ১৬১ মিলিয়ন (১৬ কোটি ১০ লাখ)।’

বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালন ২১ জুলাই

দেশে আগামী ২১ জুলাই বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালন করা হবে জানিয়ে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রতি বছর ১১ জুলাই বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালিত হয়। এবার রোজা ও ঈদুল ফিতরের কারণে সরকারিভাবে আমাদের দেশে সব পর্যায়ে ১১ জুলাইয়ের পরিবর্তে ২১ জুলাই দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।’

২১ জুলাই ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সকাল ১১টায় দিবসের উদ্বোধনী ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

এবার দিবসের প্রতিপাদ্য ‘ইনভেস্টিং ইন টিনেজ গার্ল’ জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলায় যার ভাবান্তর-কিশোরীদের জন্য বিনিয়োগ, আগামী প্রজন্মের সুরক্ষা।’

দেশের জনসংখ্যার ৩১ ভাগ মানে সাড়ে ৪ কোটি কিশোর-কিশোরী জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ‘এ সম্ভাবনাময় কিশোর-কিশোরীদের জন্য যদি সঠিক উন্নয় কৌশল, কর্মপরিকল্পনা ও নীতিমালা প্রণয়ন করা যায় তাদের উপযোগী কাজের সুযোগ সৃষ্টি করা যায় তবে আমাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে পারব। যেমনটি হয়েছে দক্ষিণপূর্ব এশিয়া ও ইউরোপে।’

সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email