May 15, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

হাজারীবাগে ট্যানারি থাকলে দৈনিক জরিমানা ১০ হাজার টাকা

আদালত প্রতিবেদক : রাজধানীর হাজারীবাগে থাকা প্রত্যেক ট্যানারি মালিককে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দৈনিক ১০ হাজার টাকা করে জমা দিতে হবে। এর আগে গত ১৬ জুন ১৫৪ ট্যানারিকে প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। ট্যানারি মালিকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই জরিমানার পরিমাণ কমিয়ে দৈনিক ১০ হাজার টাকা করা হয়েছে।

আজ সোমবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার।

বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি এ.কে.এম. সাহিদুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ১৬ জুন ১৫৪ ট্যানারিকে প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার নির্দেশ দেয়। এরপর ট্যানারি মালিকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই আদেশ ১৭ জুন পর্যন্ত স্থগিত করেন আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট আদলতের বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকি। একইসঙ্গে স্থগিত আবেদনটি শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০০১ সালে ট্যানারি শিল্প হাজারীবাগ থেকে সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছিলো হাইকোর্ট। দীর্ঘদিন ধরে ওই আদেশ বাস্তবায়িত না হওয়ায় অন্য এক আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হাজারীবাগের ট্যানারি শিল্প অন্যত্র সরিয়ে নিতে ২০০৯ সালের ২৩ জুন হাইকোর্ট ফের নির্দেশ দেওয়া হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে পরে ওই সময়সীমা কয়েক দফা বাড়িয়ে ২০১১ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু এ সময়ের মধ্যেও স্থানান্তর না হওয়ায় আদালত অবমাননার মামলা করেন পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষ থেকে মনজিল মোরসেদ। এ মামলার প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ১৫ এপ্রিল আদালত অবমাননার রুল জারি করে হাইকোর্ট। গত বছরের ২১ এপ্রিল আদালতের তলবে হাইকোর্টে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন শিল্প সচিব।

হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি স্থানান্তরের পদক্ষেপ না নেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ফের আদালত অবমাননার অভিযোগে আরও একটি আবেদন করেন মনজিল মোরসেদ। এ আবেদনের শুনানি নিয়ে গত বছরের ১১ আগস্ট হাইকোর্ট দশ কারখানা মালিকের বিরুদ্ধে রুল জারি করে। এ রুলের পর দশ মালিককে তলব করে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে ২১ মার্চ আবেদন করেন মনজিল মোরসেদ। ২৩ মার্চ এ আবেদনের শুনানি শেষে ব্যাখ্যা দিতে আদালত ১০ মালিককে তলব করে আদেশ দেয়।

এরপরও আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন না হওয়ায় রিটকারী আদালতে সম্পুরক আবেদন করে। পরে গত ১৬ জুন আদালত ১৫৪ ট্যানারি সাভারে না সরানো পর্যন্ত পরিবেশ দূষণের ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রত্যেক ট্যানারি মালিককে প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার আদেশ দেয়।

Print Friendly, PDF & Email