ডেস্ক প্রতিবেদন : বর্তমানে ৯১০ জন বিদেশি অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থান করছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
দশম জাতীয় সংসদের একাদশ অধিবেশনে বৃহস্পতিবার প্রশ্নোত্তর পর্বে মামুনুর রশীদ কিরনের এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী সংসদকে এ তথ্য জানান।
আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থানকারী বৈধ বিদেশি নাগরিক এক লাখ ১১ হাজার ৫৭৫ জন। ৯১০ জন বিদেশি নাগরিকের ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। পুলিশের বিশেষ শাখায় অবৈধ বিদেশিদের তালিকা সংরক্ষিত আছে। অবৈধ বিদেশিদের সনাক্ত করতে বিশেষ শাখাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ অভিযান অব্যাহত আছে। অবৈধভাবে চাকুরিরত বিদইশর সন্ধান পেলে তাৎক্ষণিকভাবে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।’
জাতীয় পার্টির এ কে এম মাঈদুল ইসলামের প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী জানান, বর্তমানে বাংলাদেশে ২০ হাজার ৬৫৬ জন ভারতীয় নাগরিক অবস্থান করছেন। ভারতীয় নাগরিকরা এদেশে বিনিয়োগকারী, বিভিন্ন সংস্থা/কারখানা ও উন্নয়ন প্রকল্প এবং বিদ্যুত সেক্টরে কর্মরত রয়েছেন। এছাড়াও কিছু ভারতীয় নাগরিক চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত রয়েছে।
মাদক চোরাচালানে আধুনিক প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করা হচ্ছে
নুরুন্নবী চৌধুরীর এক প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, মাদক চোরাচালানে আধুনিক প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করা হচ্ছে। ইয়াবা পাচারকারিসহ অন্যান্য মাদক অপরাধীরা গ্রেফতার এড়ানোর জন্য প্রতিনিয়ত কৌশল পরিবর্তন করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তাদের কৌশল ধরা পড়লে পরবর্তিতে তারা নতুন কৌশল ব্যবহার করছে।
তিনি জানান, মাদক ব্যবসায়ীরা বিশ্বের সর্বত্র প্রভাবশালী, তারা বিপুল অর্থ-বিত্তের মালিক, অবৈধ অস্ত্রধারী বা তার পৃষ্ঠপোষক এবং আন্ডার ওয়ার্ল্ডের নিয়ন্ত্রক হয়ে থাকে। এরা মাদক পাচার/ব্যবসায় আধুনিক প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করে থাকে। এদেরকে মোকাবিলায় মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে আধুনিক প্রযুক্তিতে আপডেট রাখার কোন বিকল্প নেই।
মাদকের বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করছে মন্তব্য করে ওই সংসদের প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
হাবিবুর রহমান মোল্লার প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা মহানগরীর প্রতিটি থানায় গঠিত কমিউনিটি পুলিশের কোন কমিটিতে স্থানীয় সন্ত্রাসী, চিহ্নিত অপরাধী ও আশ্রয় প্রশ্রয় দানকারির অর্ন্তভূক্তির তথ্য পাওয়া যায়নি। এরপরও এ ধরনের কোন লোক যাতে কমিটিতে অর্ন্তভূক্ত হতে না পারে সেজন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
সরকার দলের বজলুল হক হারুনের প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী জানান, ‘প্রতিবেশি দেশ মিয়ানমার ও ভারতের সাথে সমুদ্রসীমা সুনির্দিষ্ট হওয়ায় বিদেশি ট্রলার, নৌকা ও মঝিদের বাংলাদেশের জলসীমা ও সুন্দরবনের শেষ সীমানার ভিতর প্রবেশ করে মাছ শিকারের কোন সুযোগ নেই।’
সুন্দরবনের শেষ সীমানায় অবৈধ মৎস্য শিকার শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জলসীমানায় বিদেশি জেলেদের যেকোন ধরনের অবৈধ তৎপরতারোধে কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী তৎপর হয়েছে।’
জাতিসংঘভুক্ত সব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের কুটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে
বগুড়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম রেজাউল করিম তানসেনের এক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, ‘জাতিসংঘভুক্ত সকল সদস্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের কুটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। শুধু মাত্র ইসরাইল ছাড়া বর্তমানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের ৫৭টি দূতাবাস রয়েছে। এছাড়া ১৫টি কনস্যুলেট, কনস্যুলেট জেনারেল ও উপ ও সহকারী হাইকমিশন রয়েছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতের আসাম রাজ্যের রাজধানী গুয়াহাটিতে একটি সহকারী হাইকমিশন খুব শীঘ্রই খোলা হবে। এছাড়া পরবর্তী দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে বাংলাদেশ আরো ৯৭টি দেশের সঙ্গে কুটনৈতিক সম্পর্ক রক্ষা করে থাকে। অর্থাৎ পৃথিবীর ১৫৪টি দেশের সাথে দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশ কূটনৈতিক যোগাযোগ রক্ষা করে এবং সকল দেশের সাথে কূটনৈতিক সর্ম্পক রক্ষার্থে কূটনৈতিক কর্মকর্তা প্রেরণ করা হয়েছে। এই ১৫৪টি দেশ ব্যতীত অন্যান্য দেশগুলোর সাথে কূটনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য সুনির্দিষ্টভাবে কূটনৈতিক কর্মকর্তা প্রেরণ করা হয়নি।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী অপর এক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, ‘সরকারি ছাড়াও বেসরকারি পর্যায়ে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর সাথে বলকান রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে সমঝোতা স্মারক চুক্তির মাধ্যমে বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট দূতাবাসসমূহ কাজ করে চলেছে। এই অঞ্চলের প্রত্যেকটি স্বাধীন রাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক সুদৃঢ়করণ ও সম্প্রসারণে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর।’
এ বিভাগের আরো..
ঢাকা-ব্রাজিল সামগ্রিক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর
দুই সিটির নবনির্বাচিত মেয়ররা শপথ নিলেন
শেখ হাসিনা গাজা পুনর্দখলের ইসরাইলি পরিকল্পনার বিরুদ্ধে অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন