April 29, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

কুসংস্কার নয়, প্রত্যেকটি সংস্কারকে ইতিবাচক দৃষ্টি দিয়ে দেখুন।

ডেস্ক প্রতিবেদন : আমরা নানা ধরনের সংস্কারে বিশ্বাস করি। অনেক সংস্কার আছে যা ভুল ধারণাবশত আমরা সেগুলোকে কুসংস্কার বলে থাকি। প্রত্যেকটি সংস্কারের রয়েছে পূর্ণ ব্যাখা ও ইতিবাচক দিক। প্রতিটি সংস্কার যখন তৈরি হয় তখন তার পারিপার্শ্বিকতার ওপর নির্ভর করে তৈরি হয়। আমাদের প্রচলিত সংস্কারগুলো বেশ পুরনো। বর্তমান বাস্তবতায় যার ব্যবহার খুব একটা অর্থপূর্ণ নয়।

কিন্তু  আপনার একটু ইতিবাচক চিন্তা বদলে দিতে পারে সংস্কারের প্রতি আপনার সেই ধারণা। আসুন  তা নিচে দেথি —

সূর্যগ্রহণের সময় বাইরে যেতে হয় না: কথিত আছে সূর্যগ্রহণের সময় বাইরে যেতে হয় না। সংস্কারকগণ ঠিক কী অর্থে এটি বলেছেন তা জানা যায়নি। তবে বর্তমান জীবনে এর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে। যখন সূর্যগ্রহণ ঘটে তখন আলোকরশ্মী রেখা দ্রুত পরিবর্তন হতে থাকে। যা চোখের রেটিনার জন্য খুবই খারাপ। এই পরিবর্তনশীল আলোকরশ্মী এতটাই খারাপ যে, সূর্যগ্রহণের সময় এটি আপনার দৃষ্টি শক্তি কেড়ে নিতে সক্ষম।

মঙ্গল এবং বৃহস্পতিবার চুল ধোয়া নিষেধ: মঙ্গলবার এবং বৃহস্পতিবার চুল ধোয়া বা পানি দিয়ে পরিষ্কার করা নিষেধ। পানি দেবতার প্রতি সম্মান দেখিয়ে এবং পানি অপচয় রোধে এই সংস্কারটি তৈরি করা হয়।

রাতে নখ বা চুল না কাটা: যখন এই সংস্কারটি তৈরি করা হয় তখন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ছিল না। তবে মানুষ দিনের তুলনায় রাতে কম দেখে। সেই ক্ষেত্রে রাতে নখ বা চুল কাটার ব্যাপারে সাবধান না হলে ছোটখাট দুর্ঘটনা আমাদের সঙ্গে ঘটতে পারে।

রান্নাঘরে ঋতুবতী কন্যার প্রবেশ নিষেধ:  ঋতুবতী কন্যারা রান্নাঘরে ঢুকতে পারবে না। পূর্বে ঋতুবতী কন্যাদেরকে অপবিত্র বলা হত। অথবা সংস্কারকগণ হয়ত মেয়েদের এই বিশেষ সময়ে তাদেরকে রান্নাঘরের ঝামেলাপূর্ণ কাজ থেকে মুক্ত করে বিশ্রামের সুযোগ করে দিতে চেয়েছিলেন। আর বর্তমানে মেয়েরা তাদের ঋতুকালীন সময়গুলোতে অনেক সাবধানতা এবং নিরাপত্তা গ্রহণ করে। তাছাড়া পূর্বে তো আর স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারের সুযোগ ছিল না, তাই নিরাপত্তার ব্যাপারটাও খুব হালকা ছিল।

মরিচ ও লেবুর ব্যবহার: আগে মানুষ খারাপ দৃষ্টি এড়ানোর জন্য মরিচ ও লেবু একটি সুতায় বেঁধে তা ঘরের দরজায় ঝুলিয়ে রাখত। আর এটির বাস্তব সত্যি হল, মরিচ এবং লেবু আলাদাভাবে বিভিন্ন পুষ্টিগুণে ভরপুর, যা আমাদেরকে নানা ধরনের রোগ থেকে মুক্ত রাখে।

শবদাহ শেষে গোসল করা: শবদাহ করার পর গোসল করতে হয়। বলা হয়ে থাকে পবিত্রতা অর্জনের জন্য এবং আত্মার অশুভ দৃষ্টি এড়ানোর জন্য গোসল করতে হয়। বর্তমানে বলা হয় শবদাহ করার সময় শরীরে বিভিন্ন ধরনের জীবাণু প্রবেশ করতে পারে, আর তাই সেই জীবাণু থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য গোসল করা দরকার।

মরা বাড়ীতে রান্না না করা: এখনো পর্যন্ত যে সংস্কারটি সব থেকে বেশি মানা হয়, তা হল মরা বাড়ীতে চুলা না জ্বালানো বা রান্না না করা। যখন একটি বাড়িতে কেউ মারা যায় তখন আশপাশের লোকজন, দূরের আত্মীয়স্বজন চলে আসেন দেখতে। এমন অবস্থাই একদিকে মৃত্যু শোক অন্যদিকে মানুষের ভীড় মরা বাড়ীর লোকজনকে আরো কাতর করে দেয়। সংস্কারকগণ সেই কাতরতার ব্যাপারটি মাথায় রেখেই হয়ত রান্না করার মত ঝামেলার কাজ থেকে মুক্তি দিয়েছেন মরা বাড়ীর মানুষদের।

এরকম আরো অনেক সংস্কার রয়েছে যা কালক্রমে কুসংস্কারে পরিণত হয়েছে। কুসংস্কার নয়, প্রত্যেকটি সংস্কারকে ইতিবাচক দৃষ্টি দিয়ে দেখুন।

Print Friendly, PDF & Email