জাবিপ্রতিনিধি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কয়েক দিন ধরে বিষধর সাপের উপদ্রব বেড়ে গেছে। আবাসস্থল ছেড়ে লোকালয়ে এমনকি আবাসিক হলগুলোয় শিক্ষার্থীদের কক্ষ, বাথরুমে ঢুকে পড়ছে নানা জাতের বিষধর সাপ। এর ফলে গত কয়েকদিন থেকেই শিক্ষার্থীদের মাঝে বিরাজ করছে চরম আতঙ্ক। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন সাপের নিরাপদ আবাসস্থল নষ্ট হয়ে যাওয়া, খাদ্য সংকট, বর্ষাকালে নিম্নাঞ্চল ডুবে যাওয়াসহ নানা কারণে সাপের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে।
আবাসিক হলগুলোর শিক্ষার্থীরা জানান, শুক্রবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী প্রতাপ কোচের কক্ষে বই রাখার থাকে একটি খরিশ গোখরা সাপ ঢুকে পড়ে। পরে আশেপাশের শিক্ষার্থীদের সহায়তায় সাপটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলেন তিনি। এর আগে গত মঙ্গলবার একই হলের বি ব্লকের ১০৪ নম্বর রুমের এক শিক্ষার্থীর খাটের নিচ থেকে একটি গোখরা সাপ বের হলে সেটিও মেরে ফেলেন শিক্ষার্থীরা। এর দুই দিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ঘাস কাটতে গেলে গেরুয়া এলাকার এক কৃষককে বিষধর সাপে ছোবল দেয়। গত ৩ আগস্ট রাতে আল-বেরুনী হলের সম্প্রসারিত ভবনের ১২০০ ব্লকের বাথরুমে একটি সাপ দেখতে পান শিক্ষার্থীরা। তার কিছুদিন আগে একই বাথরুমে আরও একটি বিষধর সাপ দেখতে পান তারা। পরে শিক্ষার্থীরা মারতে গেলে সাপটি একটি পাইপের ভেতর ঢুকে পড়ে। এরও কিছুদিন আগে নির্মাণাধীন প্রশাসনিক ভবনের সামনের রাস্তায় ৫-৬ ফুট লম্বা একটি দাঁড়াশ সাপ দেখেন ক্যাম্পাসের কয়েকজন শিক্ষার্থী ও রিকশাচালক। পরে তারা মারতে গেলে সাপটি পাশের জঙ্গলে পালিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত এক মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় বিষধর সাপের অবাধ বিচরণের ১০-১২ টি দৃশ্য দেখেছেন তারা। মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী প্রতাপ কোচ বলেন, হলের আশেপাশের ঝোপঝাড় নিয়মিত পরিষ্কার না করার কারণে সাপের আনাগোনা বেড়ে গেছে। এখন নিজের কক্ষে অবস্থান করতে ভয় হয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ বলেন, ‘ঝোপঝাড় কেটে সাপের আবাসস্থল ধ্বংসকরা, খাদ্য সংকট, বর্ষায় সাপের আবাসস্থলে পানি ঢুকে পড়া ইত্যাদি কারণে সাপ লোকালয়ে চলে আসছে। এছাড়া গুইসাপ অন্যান্য সাপের বিচরণ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা রেখে থাকে। কিন্তু ক্যাম্পাসে গুইসাপের সংখ্যাও আশঙ্কাজনক হারে কমে যাওয়ায় সাপের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবুবকর সিদ্দিক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বর্ষাকালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সাপের উপদ্রব বৃদ্ধি পাওয়া স্বাভাবিক। তবে শিক্ষার্থীদের কক্ষে সাপ প্রবেশ করা অবশ্যই ভয়ের কারণ। আমরা হল প্রশাসনকে এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য তাগিদ দেব।’
এ বিভাগের আরো..
গরীব শিক্ষার্থীদের মিল বন্ধ থাকায় স্কুলে অনাগ্রহ
বেনাপোল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিহত ৯ শিশুর স্মরণে শোক র্যালী
অভিভাবকদের গলা চেপে ধরেছে শিক্ষা ব্যয়