April 28, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

জাতীয় সংসদ ভবন: ফাইল ফটো

জাতীয় সংসদ ভবন: ফাইল ফটো

র্নিবাচনে বঞ্চিতরা কি পেলেন, কি পাবেন?

 

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা:

দ্বাদশ জাতিয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কেউ মনোনয়ন আবার কেউ চেয়ে না পেয়েও অনেকেই ত্যাগ স্বীকার করেছেন।
নির্বাচনে কৌশলগত কারণে শরিকদলীয় প্রার্থীদের আসন ছেড়ে দেওয়ায় এবং নানা বাস্তবতার কারণে অনেক জনপ্রিয় নেতাকে এবার মনোনয়ন দেওয়া সম্ভব হয়নি।
মনোনয়ন বঞ্চিতরা সামনের দিনগুলোতে কী পুরস্কার পাবেন—নির্বাচন পরবর্তী আওয়ামী লীগের মধ্যে এখন এটিই আলোচনার বিষয়।

আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা এবং প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সাইফুজ্জামান শিখর এবার মাগুরা আসন থেকে মনোনয়ন পাননি। তার আসেন সাকিব আল হাসানকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। এজন্য সাইফুজ্জামান শিখরকে আসনটি ছেড়ে দিতে হয়েছে। সাইফুজ্জামান শিখর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করে সাকিব আল হাসানের পক্ষে কাজ করেছেন। তার এই ত্যাগ স্বীকারের স্বীকৃতি কী পান সেটিই দেখার বিষয়।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত নন্দী এবার মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। তিনি মনোনয়ন না পেলেও দলের জন্য নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করেছেন। সারা দেশের নির্বাচন পরিচালনা কাজে সুজিত নন্দী অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
জাততীয় নিবার্চনে আওয়ামী লীগের আরো বেশ কয়েকজন নেতা এবার মনোনয়ন চেয়েও পাননি। এছাড়া মনোনয়ন পাওয়ার পরও জাতীয় র্পাটির সঙ্গে সমেঝাতার কারনে ২৬ টি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদেরকে সরে দাঁড়াতে হয়েছে । রাজনৈতিক সমঝোতার কারনে নৌকা প্রতীক পেয়ে ছিলেন, এমন ২৬ জন প্রার্থী দলীয় র্নিদেশে এবার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন ।

আবার ১৪ দলের সঙ্গে সমঝোতার কারণেও ছয়জন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করেননি। এরকম ভাবে প্রায় ৫০ জন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা এবং জনপ্রিয় প্রার্থী শেষ পর্যন্ত দলের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন। প্রশ্ন উঠেছে, নির্বাচনের পরে তারা কী পুরস্কার পাবেন?

গত বারের অভিজ্ঞতা বলে যে, যারা এরকম ত্যাগ স্বীকার করেন এবং দলের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানান, তারা পরবর্তীতে পুরস্কার পান। গত নির্বাচনে জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আব্দুর রহমান মনোনয়ন পাননি। এরপর পরবর্তীতে তারা তিনজনই প্রেসিডিয়ামে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলেন এবং এবার তিনজনই মনোনয়ন পেয়েছেন। শুধু তাই নয়, সেই সময়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিমও মনোনয়ন পাননি। পরবর্তীতে তিনি পদোন্নতি পেয়ে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন এবং এবার মতিঝিলের আসন থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন। কাজেই আওয়ামী লীগের রাজনীতি হল ধৈর্যের পরীক্ষা, আদর্শের পরীক্ষা এবং ত্যাগ স্বীকারের রাজনীতি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা তার দলের নেতার্কমীদের সবকিছু জানেন, দেখেন এবং বোঝেন। অতীতে যারা দলের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন। দলে কোনো পদ-পদবী না পেয়ে অভিমানে দলে নিষ্ক্রিয় হয়ে যান। তাদের কথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অতীতেও ভুলেননি। এবারও ভুলবেন না বেল আমাদের প্রত্যাশা।

এবার জাতীয় র্নিবাচনকে ঘিরে ৫০ জনের মত বিভিন্ন স্তরের নেতারা মনোনয়ন পাননি তারা সবাই যে পুরস্কৃত হবেন এমান প্রত্যাশা করা অযেৌক্তিক। এদের মধ্যে কেউ কেউ হয়তো আগামী কাউন্সিলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে আসতে পারেন। বিভিন্ন কমিটিতে তাদের জায়গা দেওয়া হতে পারে। দু একজন যে গুরুত্বপূর্ণ কোন দায়িত্ব পাবেন না এমনটিও নয়। তবে সবকিছুই নির্ভর করছে আওয়ামী লীগ সভাপতির অভিপ্রায় এবং তারা কতটুকু ত্যাগ স্বীকার করেছেন তার ওপর।

Print Friendly, PDF & Email