May 16, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

বগুড়ায় আমন ধানের প্রত্যাশিত ফলন সাথে ভালো মূল্য

এমদাদুল হক, বগুড়া: বগুড়ায় চলতি রোপাআমন মৌসুমে ধানের ভালো ফলন উঠছে কৃষকের ঘরে। প্রত্যাশিত ফলনের সাথে ভালো দামে স্বস্তিতে বগুড়ার আমন চাষিরা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যও বলছে, চলতি মৌসুমে আমনের ফলন প্রত্যাশিত ভাবেই পাওয়া যাচ্ছে। এ পর্যন্ত বগুড়ার মাঠে থাকা ৩৩ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে।

এখন পর্যন্ত হেক্টর প্রতি ৩.৩ মেট্রিকটন ফলন পাওয়া গেছে। সেই হিসেবে বগুড়ায় এবার আমন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভবনা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। বগুড়া সদর উপজেলার শ্যামবাড়িয়া এলাকার কৃষক এরশাদ হোসেন বলেন, জমি প্রস্তুত, চারা, সার-কীটনাশক, শ্রমিক খরচসহ একবিঘায় ধান উৎপাদনের খরচ হয়েছে ৬ হাজার টাকার কিছু বেশি।

এবার জমি থেকেই একবিঘা জমির খড় বিক্রি করেছি ৫ হাজার টাকা। প্রায় ১৫ মণের মতো ধান পাওয়ার আশা করছি। রঞ্জিত জাতের এই ধান ১১শ’ টাকা মণ ধরে বিক্রি করলেও ১৬ থেকে ১৭ হাজার টাকার মতো লাভ থাকবে।

কৃষক আব্দুর রহমান বলেন, শুরুর দিকে বৃষ্টির পানি নিয়ে শঙ্কা থাকলেও পরে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে তাতে ফলন ভালো হয়েছে। এমনকি এবার কোন প্রাকৃতিল দুর্যোগ না থাকায় ভালো ভাবেই ধান ঘরে তোলা যাচ্ছে।
এই এলাকায় বিঘা প্রতি ১৩ থেকে ১৫ মণ পর্যন্ত ফলন পাওয়া যাচ্ছে। ধান উৎপাদনের খরচ বেড়েছে, তবে খড়ের বাড়তি দামের কারণে ভালোই লাভ হবে বলে মনে হচ্ছে।

আরেক কৃষক আব্দুল হক বলেন, ধান রোপণের শুরুতে প্রত্যাশিত বৃষ্টি নিয়ে কিছুটা শঙ্কা তৈরি হয়। তারপরে ধান চাষের জন্য প্রয়োজনীয় বৃষ্টি ও আবহাওয়া ছিল অনুকূলে ফলে ফলন ভালো হয়েছে, এখন বাজারে ধানের যে দাম তাতে ভালো ফলনে স্বস্তিতেই থাকা যাচ্ছে।

স্থানীয় হাট-বাজারে খবর নিয়ে জানা গেছে, মামুন জাতের নতুন ধান ১১৩০ থেকে ১১৪০ টাকা মণ, নতুন স্বর্ণা ১১৪০ থেকে ১১৭০, বিআর-৪৯ ধান ১১৮০ থেকে ১২শ’ টাকা, রঞ্জিত ১১শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও মোটা জাতের সর্বনি¤œ ধানের মণ ১০৫০ টাকা বলে জানা গেছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বগুড়া সূত্রে জানা গেছে, বগুড়ায় চলতি রোপা আমন মৌসুমে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়, যা গত বছরের চেয়ে ৩৫ হেক্টর বেশি। গত বছর চাষ হয় ১ লাখ ৮৩ হাজার ৪৭৫ হেক্টর। গত বছর চালের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ লাখ ৫১ হাজার ৮১৩ মেট্রিকটন, চলতি মৌসুমে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৪৭ হাজার ৩২১ মেট্রিকটন বেশি ধরে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৯৯ হাজার ১৩৪ মেট্রিকটন।

এখন পর্যন্ত ৬০ হাজার ৮শ’ হেক্টর অর্থাৎ ৩৩ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে। হেক্টর প্রতি ফলন পাওয়া গেছে ৩.৩ মেট্রিকটন। এই কার্যালয়ের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা ফরিদুর রহমান জানান, বগুড়ার চাষ হওয়া রোপাআমন ধানের বেশিরভাগই উচ্চ ফলনশীল এবং হাইব্রিড জাতের। এছাড়াও স্থানীয় ও সুগন্ধি জাতের ধানও রয়েছে। তিনি আরও বলেন, শুরুতে বৃষ্টির পানি নিয়ে শঙ্কা থাকলেও পরের আবহাওয়া ছিল আমন চাষের অনুকূলে, চলতি বছর কোন দুর্যোগ না থাকায় কৃষকরা স্বস্তিতে ঘরে ধান তুলতে পারছেন।

Print Friendly, PDF & Email