April 29, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

সংসদকে প্রাণবন্ত করতে বাধাহীনভাবে কথা বলার সুযোগ চেয়েছে জাপা

ডেস্ক: একাদশ জাতীয় সংসদকে প্রাণবন্ত করতে বাধাহীনভাবে কথা বলার সুযোগ চেয়েছে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। গত বুধবার সংসদ অধিবেশনে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ দাবি জানান। একই আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদে দলের অবস্থান নিয়ে বিব্রতবোধ করছেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরীক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া অধিবেশনে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারকে ধন্যবাদ জানাতে গিয়ে সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আমরা আনন্দিত। তবে এই আনন্দের সঙ্গে আমরা একটু বিব্রতও বটে। আজকে সংসদে প্রবেশের সময় আমাকে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে। জানতে চেয়েছে সংসদে আপনাদের অবস্থান কী হবে?’

এ প্রসঙ্গে দলীয় ফোরামে প্রধানমন্ত্রীর একটি মন্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে মেনন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তার দলের বৈঠকে বলেছেন, এই সংসদে সরকারি দল যেমন মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের হবে, তেমনি বিরোধী দলও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের হবে’। আমি মনে করি প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্য অত্যন্ত যৌক্তিক। কিন্তু বিষয়টিকে কেন্দ্র করে বলা হচ্ছে, আপনারা কেন বিরোধী দলে গিয়ে বসছেন না? বিষয়টি নিয়ে তো আমাদের কেউ জিজ্ঞাসা করবে, প্রশ্ন করবে বা আলোচনা করবে কিন্তু তা হয়নি। অথচ ওটাই সিদ্ধান্ত ধরে তা মেনে চলতে হবে বলে মনে হচ্ছে।’

রাশেদ খান মেনন বলেন, সংসদে আমরা সরকারের সব উন্নয়ন কাজের প্রশংসা করবো। সঙ্গে সঙ্গে ত্রুটি-বিচ্যুতি যা থাকবে সেটা যদি বিরোধীতার প্রয়োজন হয়, তা অবশ্যই করবো। তিনি বলেন, আমরা পঞ্চদশ সংশোধনীর দুটি বিষয়ে বিরোধিতা করে নোট অব ডিসেন্টও দিয়েছিলাম এটা নিশ্চয়ই মনে আছে। কাজেই দেশকে উন্নয়নমূলক কাজ ও অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক পথে এগিয়ে নেওয়ার প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগের প্রতি আমাদের যেমন সমর্থন থাকবে তেমনি দুর্নীতি ও বৈষম্যের প্রশ্নে যেকোনো ব্যত্যয় হলে বা সরকারি কাজে কোনো বিরোধীতার বিষয় থাকলে অবশ্যই তার বিরোধীতার সুযোগ আমরা পাবো।

সংসদকে কার্যকর করতে বিরোধী দলকে সক্রিয় হওয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি বিরোধী দল হিসেবে এখানে বসছেন অবশ্যই শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে তারা অংশগ্রহণ করবেন। আমরা সকলে মিলে একসঙ্গে এগিয়ে যাবো। এক্ষেত্রে স্পিকারের সুদৃষ্টি দেওয়া বিশেষ প্রয়োজন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এর আগে ওই আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা ও জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জি এম কাদের সংসদকে কার্যকর ও প্রাণবন্ত করতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন, সংখ্যায় কম হলেও আমরা মনে করি, সঠিকভাবে জনগণের কথা তুলে ধরতে পারলে সংসদ কার্যকর হবে। মানুষ সংসদকে গুরুত্ব দেবে। সংসদ মানুষের আশা-আকাঙ্খার প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হবে।

প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনার প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা সংসদে কথা বলবো। সরকারের ভুল-ত্রুটি তুলে ধরবো। এখানে আমাদের কথা গুরুত্ব দিলে সংসদ প্রাণবন্ত হবে। তাই বিরোধী দল হিসেবে আমরা সংখ্যায় কম হলেও সংসদকে কার্যকর রাখতে কোনো বাধা দেওয়া হবে না বলে আমরা মনে করি। এতে করে মানুষ সংসদের প্রতি আগ্রহী হবে। আর আমাদের যুক্তিসঙ্গত কথাগুলো শুনে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতার প্রতি অনুরোধ থাকবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। এ সময় তিনি নবনির্বাচিত স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারকে অভিনন্দন জানান।

Print Friendly, PDF & Email