April 29, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

যৌন হয়রানীর মামলা মিমাংসার প্রস্তাব

বিশেষ প্রতিনিধি:
ছাত্রীদের যৌন হয়রানীর অভিযোগে আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহফুজুর রশীদ ফেরদৌস (বরখাস্ত) এখন পলাতক আসামি। জামিনে যাওয়ারপর আদালতে হাজির হননি। আদালত থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি রয়েছে। গ্রেপ্তারে পুলিশের তৎপরতা নেই। মামলা আপোষ করতে প্রস্তাব দিচ্ছেন ফেরদৌস রশীদ ।
শিক্ষক মাহফুজুর রশীদ পলাতক থেকে তার বিরুদ্ধে চলমান ছাত্রীদের যৌন হয়রানির মামলা আপোষ-মিমাংসার চেষ্টা চালাচ্ছেন। বিভিন্ন ভাবে মামলার বাদীকে আপসের প্রস্তাব দিচ্ছেন আসামি মাহফুজুর রশীদ।
ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ -এ মামলার বিচার কার্যক্রম চলছে। গত দুই বছরে রাষ্ট্রপক্ষ ৭জন সাক্ষী হাজির করেছেন। এ মামলায় অভিযোগপত্রভূক্ত ২৮ জন সাক্ষী রয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসলি আফরোজা ফারহানা আহম্মেদ প্রথমকথাকে বলেন, মামলাটি একমাত্র আসামি শিক্ষক ফেরদৌস। তিনি জামিনে পলাতক রয়েছেন।
মামলার বাদী আসাদদৌল্লাহ আল সায়েম বলেন, মামলা চলছে মামলার গতিতে। শিক্ষক ফেরদৌস বিভিন্ন মাধ্যমে আমার সঙ্গে আপসের চেষ্টা করছে। আমি কোনোভাবে আপস করতে রাজি হয়নি আর কখনো হবও না।
তিনি আরও বলেন, আসামি ফেরদৌস পলাতক থেকে মামলার বিচারে বিঘ্ন ঘটােনার চেষ্টা করছেন। আসামি ফেরদৌসের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। রাজধানীর রমনা থানায় আদালত থেকে গ্রেপ্তারি পেরায়ানা পাঠােনা হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, বরখাস্ত শিক্ষক ফেরদৌস হাইকোর্ট থেকে জামিনপ্রাপ্ত হয়ে ২০১৭ সালের ১৮ এপ্রিল ট্রাইব্যুনালে জামিন নামা দাখিল করেন । এরপর ট্রাইব্যুনালে হাজির না হওয়ায় ২০১৭ সালের ১ জুন শিক্ষক ফেরদৌসের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করা হয়। ।
২০১৬ সালের ৪ মে কলাবাগান থানায় শিক্ষক ফেরদৌসের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানীর অভিযোগে মামলা করেন আসাদদৌল্লাহ আল সায়েম নামের এক ছাত্র। ওই দিনই কলাবাগানের বাসা থেকে ফেরদৌসকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ছাত্রীদের যৌন হয়রানির কথা স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তাকে বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
২০১৬ সালের ১৪ আগস্ট ফেরদৌসের বিরুদ্ধে অভিযোপত্র দাখিল করেন পুলিশের নারী সহায়তা ও তদন্ত বিভাগের উপ-পরিদর্শক আফরোজা আইরীন।
অভিযোগপত্র বলা হয়, ছাত্রীদের সঙ্গে যৌন হয়রানি, নগ্ন সেলফি প্রকাশ, ধর্ষণ চেষ্টা ও প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ প্রাথিমক তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। যৌন হয়রানির শিকার ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ ছাত্রীসহ মোট ২৮ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর আসামি ফেরদৌস রশীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। শিক্ষক ফেরদৌস আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ ছাত্রীকে বিভিন্ন সময়ে ভয়ভীতি ও প্রশ্নপত্র এবং ভাইভায় নম্বর দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। এদের মধ্যে এক ছাত্রীর সরলতার সুযোগে ভয়ভীতি দেখিয়ে নিজ বাসস্থানে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। তার নগ্ন ছবি ওয়েবসাইট ও মোবাইলের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া।

Print Friendly, PDF & Email