April 28, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

৩২ কি.মি. হেঁটে কাজে যোগদান, তারপর গাড়ি উপহার

ডেস্ক: প্রথম চাকরিতে সবাই চায় সময়ে মতো অফিসে পৌঁছতে। কারণ প্রথম দিন দেরি করে অফিসে গেলে তার সম্পর্কে ধারণা খারাপ হয়ে যেতে পারে। কিন্তু প্রথম দিন সময়ে মতো কাজে যোগ দেবার জন্য আমেরিকার অ্যালাব্যামা রাজ্যের ওয়াল্টার কার যে নজীর স্থাপন করেছেন সেটি সত্যিই অভাবনীয়।

মি: কার প্রথম দিন ঠিক মতো কাজে যোগ দেবার জন্য সারারাত ৩২ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে সকালে তাঁর কর্মস্থলে পৌঁছেছেন। তাঁর গাড়িটি ভেঙ্গে যাবার পর মি: কার পায়ে হেঁটে এ দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছেন।

এ ঘটনা জানার পর কোম্পানির মালিক তাকে নতুন একটি গাড়ি উপহার দিয়েছে। মি: কার যে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন সেখানে তার সাথে দায়িত্বরত এক পুলিশ কর্মকর্তার দেখা হয়।

মি: কার-এর চারিত্রিক দৃঢ়তা দেখে সে পুলিশ কর্মকর্তা তাকে সকালে নাশতা করাতে নিয়ে যান।

এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। সকলে তাঁর এ চারিত্রিক দৃঢ়তার প্রশংসা করছেন।

মি: কার যে কোম্পানিতে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন সেটির নাম মুভিং ফার্ম। সেখানকার একজন গ্রাহক হলেন জেনি ল্যামি।

শুক্রবার সকাল আটটার দিকে তিনি এবং তাঁর স্বামী মুভিং ফার্মে যাবার কথা ছিল। সেজন্য তারা ভোরে ঘুম থেকে উঠেন। ভোর সাড়ে ছয়টার দিকে তাদের বাড়ির কলিং বেল বেজে উঠে।

সে সময় মিস ল্যামি দরজা খুললে মি: কার-এর সাথে দেখা হয়। তাঁর সাথে ছিলেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা। পুলিশ কর্মকর্তা জানালেন, তিনি এ ব্যক্তিকে রাস্তা থেকে তুলে এখানে এনেছেন।

পেলহ্যাম পুলিশ বিভাগ এক টুইটর বার্তায় বলেছে মি: কার-এর মতো একজন ব্যক্তির সাথে দেখা হওয়ায় তারা গৌরব বোধ করছেন। সে তাদের উপর একটি প্রভাব তৈরি করেছে বলে সে বার্তায় উল্লেখ করা হয়।

মিস ল্যামি বলেন, ” সে যখন রাতে একা হাঁটছিল সেটি আমি কল্পনা করতে পারছি না। মধ্যরাতে একা হাঁটার সময় সে হয়তো ফিরে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু সে এখানে না পৌঁছানো পর্যন্ত থামেনি।”

মুভিং কোম্পানির প্রধান নির্বাহী লুক মার্কলিন এ খবর জানার পর তাঁর কর্মচারীর সাথে দেখা করার জন্য এসেছেন। মি: কার-এর সাথে চা পানের সময় কোম্পানির প্রধান নির্বাহী তাকে একটি গাড়ির চাবি হস্তান্তর করেন। তখন মি: কার কিছুটা বিস্মিত হয়ে যান। এরপর তিনি কোম্পানির প্রধান নির্বাহীর সাথে কোলাকুলি করেন এবং গাড়ির চাবিটি গ্রহণ করেন।

এদিকে মি: কার-এর নষ্ট হয়ে যাওয়া গাড়ি মেরামতের জন্য অনলাইনে একটি প্রচারণা শুরু হয়। সে প্রচারণায় আট হাজার ডলারের বেশি সাহায্য এসেছে। তিনি এ বছরের ডিসেম্বর মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে হেলথ সায়েন্সে ডিগ্রি নিতে চান। মার্কিন মেরিন দলে যোগ দেবার ইচ্ছা রয়েছে মি: কার-এর।

তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, ” আমি আমার প্রতিশ্রুতি দেখাতে চেয়েছি।আমি মানুষকে জানাতে চাই যে আপনি যদি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারেন, তাহলে কোন কিছুই চ্যালেঞ্জ নয়। কোন কিছুই অসম্ভব নয়, যদি আপনি সেটিকে অসম্ভব করে না তোলেন।”

Print Friendly, PDF & Email