May 14, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

‘নিতান্ত ব্যক্তিগত’ ছবি ফোনে রাখবেন না’

ডেস্ক: ফোন নিজের তাই যা খুশি ছবি রাখছি গ্যালারিতে। এমন ঘটনা তো আর নতুন কিছু নয়। তবে, এই ফোনটা যদি পড়ে অন্যের হাতে তখন কিন্তু পরিবারের মতো অন্যের কাছ থেকেও লুকানো সম্ভব হবে না। ঘটে যেতে পারে বিপত্তি। অনেক ঘটনা কিন্তু জানান দিচ্ছে সেই কথায়। গ্যালারিতে গোপনীয় ছবি রাখার সমস্যাটা কোথায়? কী হতে পারে সেই বিষয়ে কয়েকটি ঘটনা জেনে নেওয়া যাক।

গত বছর অগস্ট মাসে হাওড়া স্টেশনে নিজের অ্যানড্রয়েড ফোনটি হারিয়েছিলেন ৩৫ বছরের এক নারী। তিনি নিউটাউনের সুখবৃষ্টি আবাসনের বাসিন্দা। ফোন হারিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগও জানিয়েছিলেন। এরপর কাজের চাপে ফোনের কথা ভুলেই গিয়েছিলেন।

তবে, ফোন হারানোর প্রায় দশ মাস পরে চলতি বছরের মে মাসে তাঁর এক বন্ধু প্রথম খবর দেন এই নারীর একাধিক ছবি এবং ভিডিও  নাকি দেখা যাচ্ছে একটি পর্নোগ্রাফিক সাইটে। শুনে মাথায় বাজ পড়ার মতোই অবস্থা হয় তার।

এরপর খোঁজ নিয়ে দেখতে পেয়েছেন একটা নয়, একাধিক পর্নোগ্রাফিক সাইটে রয়েছে তাঁর ছবি। কিন্তু ওইসব ছবি কী করে পৌঁছাল ওইসব সাইটে? সেটায় মাথায় আসছিল না তার।

অনেক ভাবনাচিন্তার পর হঠাৎ তাঁর মনে পড়ে, প্রায় এক বছর আগে তিনি একটি ফোন হারিয়েছিলেন। আর সেই ফোনেই ওই সমস্ত ছবি ছিল তার। অর্থাৎ যার কাছে এই ফোন পৌঁছেছে সেই ব্যক্তির মাধ্যমেই ছবি গিয়েছে ওই সব সাইটে।

এরপর বিধাননগর সিটি পুলিশের সাইবার ক্রাইম থানাতে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। তদন্তে দেখা যায়, তার ফোন চুরি যাওয়ার পর আদৌ ব্যবহার করা হয়নি। তার মানে ফোনটিতে সিমকার্ড ভরে সেটিকে সচল করা হয়নি, কিন্তু সেটির গ্যালারি খোলা হয়েছে।

শুধু এই নারী নয়, এ রকম একাধিক অভিযোগ প্রতিদিন জমা পড়ছে বিভিন্ন থানায়। তার মধ্যে সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরে। সেখানকার এক গৃহবধূ। তিনি তিন সন্তানের মা। এ নারীও ফোন হারিয়েছিলেন। খোঁজ করতে গিয়ে জানতে পারেন, এক তরুণ সেই মোবাইল পেয়েছেন। সেই তরুণ মোবাইলটা ফেরতও দিয়ে যান। কিন্তু তার ক’দিন পর থেকেই শুরু হয়ে যায় ব্ল্যাকমেইলিং। ওই তরুণ সোজাসুজি ওই নারীকে প্রস্তাব দেন ‘ঘনিষ্ঠতা’র। না হলে ওই নারীর ছবি বিভিন্ন পর্নোগ্রাফিক সাইটে তুলে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। জানা যায়, ফেরত দেওয়ার আগে তার ফোন থেকে কিছু গোপনীয় ছবি কপি করে নিয়েছিল ওই তরুণ। দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে সেই চাপ সামলাতে না পেরে শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যা করেন ওই নারী। রেখে গিয়েছিলেন সুইসাইড নোট, যেখানে গোটা ঘটনা তিনি লিখে যান। বর্তমানে ঘটনার তদন্ত করছে সিআইডি।

সূত্র: সময়

Print Friendly, PDF & Email