April 28, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

নজরুল-রবীন্দ্রনাথ আমাদের সবার

ডেস্ক: ‘দেশ ভাগ হয়েছে কিন্তু নজরুল-রবীন্দ্রনাথ ভাগ হননি, তারা আমাদের সবার। মানুষের কল্যাণের জন্য কবি নজরুল নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। লেখার কারণে জেল খেটেছেন। আমারাও আমাদের অধিকার আদায় করতে অনেক সংগ্রাম করেছি, মুক্তিযুদ্ধ করেছি, অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি আমাদের চেতনায় ছিলেন। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকেও অনেক প্রতিকূলতা অতিক্রম করতে হয়েছে। জীবনের অনেক সময় জেলে কাটিয়েছেন তিনি। কবি নজরুল ও বঙ্গবন্ধুর মধ্যে চেতনার মিল ছিল।’

শনিবার দুপুরে পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলে কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তনে সম্মানসূচক ডক্টর অব লিটারেচার বা ডি-লিট ডিগ্রি গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুর এবং সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক অঙ্গনের বেশ কয়েকজন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কবি কাজী নজরুল ইসলাম অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আমাদের যে শক্তি, চেতনা দিয়ে গেছেন তা যেন আমরা ভুলে না যাই।  কাজী নজরুল সবসময় সাম্যের কথা বলেছেন। নজরুলের সে বাণী আমরা যেন কখনো ভুলে না যাই। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে গিয়ে তাকে কারাগারে পর্যন্ত যেতে হয়েছে । তবু তিনি অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি।

এর আগে দুপুর ১২টায় প্রধানমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছালে ভিসি সাধন চক্রবর্তী  তাকে স্বাগত জানান।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়কার জনপ্রিয় ‘জয় বাংলা’ শ্লোগানটি নজরুল ইসলামের কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান কবি নজরুল ইসলামের কবিতার লাইন থেকে গ্রহণ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। ‘বাংলা বাঙালির হোক, বাংলার জয় হোক, জয় বাংলা’ এই লাইন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে বঙ্গবন্ধু ‘জয় বাংলা’ শ্লোগানটি সবার কাছে পৌঁছে দিতে চেয়েছিলেন। একদিকে যেমন বাংলা সাহিত্যের কবি নজরুল ইসলাম, তেমনি রাজনীতির কবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।’

এর আগে সকাল ১০টা ১০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে নেতাজি সুভাস চন্দ্র বসু এয়ারপোর্ট থেকে দুর্গাপুর কাজী নজরুল বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা হন৷ বেলা ১১টার দিকে বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। সেখান থেকে সড়কপথে বেলা ১২টার দিকে আসানসোলে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছান৷

সেখান থেকে সড়কপথে দুপুরে আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সাধন চক্রবর্তী।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে দু’দিনের সরকারি সফরে গতকাল শুক্রবার কলকাতা গেছেন প্রধানমন্ত্রী। শুক্রবার সকালে বাংলাদেশ বিমানের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীরা শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে কলকাতায় নেতাজী সুবাস চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।

শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে কলকাতা পৌঁছে সেখান থেকে হেলিকপ্টারে শান্তিনিকেতন যান। সেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সমাবর্তনে অংশ নেন এবং শান্তিনিকেতনে ‘বাংলাদেশ ভবনে’র ফলক উন্মোচন করেন।

বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুর, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, গওহর রিজভী, তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীসহ বাংলাদেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক অঙ্গনের বেশ কয়েকজন প্রতিনিধি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন।

বিকালে কলকাতায় ফিরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মস্থান জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি পরিদর্শন করেন শেখ হাসিনা, হোটেল তাজ বেঙ্গলে কলকাতার ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং রাতে পশ্চিমবঙ্গের গভর্নরের দেওয়া নৈশভোজে অংশ নেন তিনি।

শনিবার আসানসোল থেকে কলকাতায় ফিরে নেতাজী জাদুঘর পরিদর্শন এবং স্থানীয় সাংসদদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর রাতেই ঢাকা ফেরার কথা রয়েছে শেখ হাসিনার।

Print Friendly, PDF & Email