ডেস্ক : রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জিরো টলারেন্স নীতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তিনি বুধবার বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে এশিয়া-প্যাসিফিক বিজনেস ফোরাম-২০১৭-এর উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণে বলেন, সস্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশ সরকার জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে আসছে।
সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মানব সভ্যতার সামনে একটি বিরাট হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে শান্তি, সমৃদ্ধি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন অব্যাহত রাখার স্বার্থে সম্মিলিতভাবে একে প্রতিরোধ করার জন্য তিনি এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের নেতাদের প্রতি আহবান জানান।
তিনি বলেন, উত্তর অথবা দক্ষিণ, ধনী অথবা দরিদ্র, ক্ষুদ্র অথবা বড় কোন দেশই এই হুমকি থেকে মুক্ত নয়। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মানবতা, সভ্যতা ও উন্নয়নের পথে বিরাট হুমকি।
আবদুল হামিদ বলেন, শুধু এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল নয়, গোটা বিশ্বে একটি সুস্থ ও সুন্দর পরিবেশ গড়ে তুলতে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে লড়াই করতে হবে।
রাষ্ট্রপতি দারিদ্র্যকে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের অভিশাপ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এ অঞ্চলের বহু মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করছে।
তিনি একটি সুখী ও সমৃদ্ধ অঞ্চল গঠনের লক্ষ্যে দারিদ্র্য দূরীকরণকে বিশেষ অগ্রাধিকার দেয়ার এবং যৌথ প্রচেষ্টা চালানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ঝুঁকির বিষয়টি উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, ‘এই অঞ্চলের কম সুবিধাপ্রাপ্ত জনগোষ্ঠির জন্য বিনিয়োগ ও উৎপাদন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্যোগ নেয়া এবং এ ব্যাপারে আমাদের বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ভূরাজনৈতিক অবস্থান ও বৈচিত্র্য বিবেচনায় এই অঞ্চল বিশ্বের মধ্যে অন্যতম সম্ভাবনাময় এলাকা, যা বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদ, বিস্তৃত মহাসাগর, নিরাপদ বন্দর এবং বিশাল বাজারের কারণে সমৃদ্ধ।
এ দেশে ব্যাপক কর্মক্ষম ও কর্মদক্ষ জনশক্তি রয়েছে যারা অভিন্ন সংস্কৃতি ও ইতিহাসের মাধ্যমে আন্তঃসম্পর্কিত এ বিষয়টি তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, স্বল্পোন্নত দেশগুলো এবং স্থলবেষ্টিত উন্নয়নশীল দেশগুলোর রূপান্তরের জন্য ‘সাউথ সাউথ’ এবং ‘ট্রায়াঙ্গুলার’ সহযোগিতা বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব ও সংহতি বৃদ্ধি ও অনুপ্রেরণার জন্য আবশ্যক।
তিনি বলেন, জ্বালানি নিরাপত্তা, শিল্পখাতের উদ্যোগ, পানি ও আবর্জনা ব্যবস্থাপনা এবং অবকাঠামো উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশ সরকার উদ্যোগ নিচ্ছে এবং এগুলো এসডিজির ১৭টি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক হবেÑ যা দারিদ্র্য, ক্ষুধা এবং অসাম্য হ্রাস করে সাফল্যের সাথে মানবাধিকার ও শান্তি বজায় রাখবে।
জাতিসংঘের ‘ইকোনমিক সোশ্যাল সার্ভে অব এশিয়া এ্যান্ড দি প্যাসিফিক’ শীর্ষক প্রতিবেদনের উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলের প্রায় সবগুলো দেশই খুব ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে এবং একসাথে উন্নয়নের পথে অগ্রসর হতে সবগুলো দেশকেই প্রত্যেকের সাথে সহযোগিতা করা উচিত।
আইসিসি বাংলাদেশ এবং ইউনাইটেড নেশন্স ইকোনমিক এ্যান্ড স্যোশাল কমিশন ফর এশিয়া এ্যান্ড দি প্যাসিফিক (ইউএন-এসকাপ) বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, শ্রীলংকার শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী রিশাদ বাথিউডেন, নেপালের বাণিজ্যমন্ত্রী রোমি থাকালি, প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকারি ড. ভিক্টরকে ফাঙ্গ, আইসিসি বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান এবং জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি ও এসকাপ-এর নির্বাহী সচিব ড. শামসাদ আখতার।
সূত্র: বাসস
এ বিভাগের আরো..
ঢাকা-ব্রাজিল সামগ্রিক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর
দুই সিটির নবনির্বাচিত মেয়ররা শপথ নিলেন
শেখ হাসিনা গাজা পুনর্দখলের ইসরাইলি পরিকল্পনার বিরুদ্ধে অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন