May 14, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটের অধিকারে বিশ্বাস করে : প্রধানমন্ত্রী

ডেস্ক : আগামী নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে এবং জনগণের ভোটের অধিকারে বিশ্বাস করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি গণতন্ত্র, জনগণের ক্ষমতায়ন এবং তাদের ভোটের অধিকারে।’
প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি জেলা পরিষদ নির্বাচন এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘অত্যন্ত সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। জনগণ ভোট দিয়েছে, যেভাবে ভোট দিয়েছে সেভাবেই তারা ফলাফল পেয়েছে।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘আমি আশা করি প্রত্যেকটি নির্বাচন এমনি সুষ্ঠুভাবে হবে এবং জনগণ যাকে ইচ্ছে ভোট দিয়ে ইচ্ছেমত তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে। এই স্লোগানতো আমাদেরই ছিলো।’
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আজ রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি যৌথসভা শুরুর আগে সূচনা বক্তব্যে এ কথা বলেছেন।
নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন বিষয়ে রাষ্ট্রপতি গঠিত সার্চ কমিটির কাছে আওয়ামী লীগ কোনো নাম (নির্বাচন কমিশনারদের) প্রস্তাব করবে কি-না এ বিষয়ে সভায় সিদ্ধান্ত হবে বলেও জানান শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামীতে নির্বাচন আসছে যেহেতু নির্বাচন কমিশনের সময় শেষ নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। রাষ্ট্রপতি সবাইকে ডেকেছেন, সবাই আলোচনা করেছেন এবং তার প্রেক্ষিতে সার্চ কমিটি হয়েছে। সার্চ কমিটি নাম চেয়েছে আজকে এই বিষয়ে আমরা আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেবো।
তিনি বলেন, আমরা নাম দেবো কি দেবো নাÑ সেটাই আজকের মূল আলোচনার বিষয়। কারণ, আমরা চাই না ’৭৫-এর পর বাংলাদেশে যেই অন্ধকার যুগ ছিলো সেই যুগ যেনো আর ফিরে না আসে। কারণ, আমরা দেখেছি এই বিএনপি-জামায়াত যথনই ক্ষমতায় এসেছে মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ২০০১ সালে বিএনপি- জামায়াতের সন্ত্রাসের বর্ণনা তুলে ধরতে গিয়ে মসজিদে কোরআন শরীফ পোড়ানো, ৬ বছরের শিশু ধর্ষণ, হত্যা, অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন ঘটনার উল্লেখ করেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স এবং ছবিসহ ভোটর তালিকা করায় নির্বাচনে স্বচ্ছতা আনয়নে সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে বলেন, আমরা চাই জনগণের ভোটাধিকার। জনগণ ভোট দিয়ে নিজেরাই তাদের প্রতিনিধি ঠিক করবে। এটা তাদের বিষয়।
শেখ হাসিনা জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি আশাকরি জনগণ এটা নিশ্চই বিবেচনা করে দেখবে যে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে দেশে যখন বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় ছিলো তখন দেশের অবস্থা কেমন ছিলো। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আজকে তারা কেমন আছে। তাদের খাদ্যের কোন অভাব নেই। জীবনমান উন্নত হচ্ছে, গ্রামে গ্রামে ইন্টারনেট সার্ভিস ও ঘরের কাছে কমিউিনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারের আমলে মা ও শিশু মৃত্যুহার হ্রাসে সরকারের সাফল্য, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পসহ বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের কর্মসূচির মাধ্যমে মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং জীবনমান উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, মানুষ আজকে ভালো আছে, শান্তিতে আছে। তাদের বুঝতে হবে তারা এই শান্তি চায়Ñ না অশান্তি চায়। এখানে আমাদের কিছু বলার নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জনগণের জন্যই রাজনীতি করি। জনগণের ভালো করাই আমাদের লক্ষ্য এবং আমরা সেটা করে যাবো।
তিনি বলেন, আমরা নিজেরা ভালো থাকতে আসিনি। জনগণকে ভালো রাখতে এসেছি। এটাই আমাদের রাজনীতির দর্শন। আমরা কতটুকু করতে পারলাম এটা জনগণই বিচার করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংবিধান অনুযায়ী দেশ পরিচালিত হবে এবং দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হবে সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আর এই লক্ষ্য বাস্তবায়নেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় বিএনপি-জামায়াতকে সন্ত্রাস, আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা, যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী করাসহ দেশের ইতিহাস বিকৃতি এবং দেশকে পিছিয়ে দেয়ার জন্য অভিযুক্ত করে বলেন, আমাদের (আওয়ামী লীগ) এবং তাদের রাজনীতির মধ্যে এটাই বিরাট তফাৎ। এটা মানুষকে বুঝতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষকে আজ শান্তির পথ বেছে নিতে হবে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের স্থান বাংলার মাটিতে কোনদিন আর হবে না। আমরা দেশকে, দেশের মানুষকে শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি দিতে চাই। আলোর পথে নিয়ে যেতে চাই। সুন্দর জীবন দিতে চাই।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমাদের নীতি ভালো এবং আমরা দেশের জন্য কাজ করতে চাই বলেই আজ সাফল্য পাচ্ছি।
এ সময় জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে আর কেউ যেন ছিনিমিনি খেলতে না পারে সে জন্যও সকলকে সতর্ক করেন প্রধানমন্ত্রী।

সূত্র: বাসস

Print Friendly, PDF & Email