May 15, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

উচ্ছেদে হকারমুক্ত গুলিস্তান

বিশেষ প্রতিবেদক : রাজধানীর গুলিস্তান ও আশপাশ এলাকার ফুটপাতে রোববার কোনো হকার বসতে দেয়নি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। হকাররা রোববার সকালে এলেও বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ম্যাজিস্ট্রেট দেখে পণ্য নিয়ে রাস্তায় বসেননি। ফুটপাতে থাকা তাদের জিনিসপত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য দুপুর ১২টা পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়। এ সময়ের মধ্যে হকাররা তাদের জিনিসপত্র সরিয়ে নিয়ে যান।
রোববার দুপুর দেড়টা পর্যন্ত দেখা যায়, গুলিস্তান এলাকায় হকাররা জটলা করে আছে। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে তাদের সংখ্যা। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে অবস্থান করেছে বিপুলসংখ্যক পুলিশ।
এরপর রাজধানীর মতিঝিল এলাকা থেকে হকার উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। দুপুর ২টা থেকে ডিএসিসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খান মোহাম্মদ নাজমুশ সোয়েবের নেতৃত্বে এ অভিযান শুরু হয়।
খান মোহাম্মদ নাজমুশ সোয়েব জানান, ফুটপাত দখলমুক্ত করতে এবং যানজট কমাতে মেয়রের নির্দেশে গুলিস্তান-মতিঝিল ও রমনা এলাকার ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদ কাজ শুরু হয়েছে। আমরা আজ মতিঝিল থেকে উচ্ছেদ শুরু করেছি। অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এ বিষয়ে পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘গুলিস্তানের রাস্তায় ও ফুটপাতে কোনো হকার বসতে দেওয়া হবে না। মেয়রের এ সিদ্ধান্ত রোববার থেকে কার্যকর হবে। অফিস টাইমের পর প্রতিদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে হকাররা গুলিস্তান এলাকায় বসতে পারবেন।
হকারদের পুনর্বাসন নিয়ে গত ১১ জানুয়ারির নগর ভবনে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় ডিএসসিসির মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, ‘হকাররা কেবল সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং কর্মঘণ্টা শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার পর ফুটপাতে পণ্য নিয়ে বসতে পারবেন।’
তবে শনিবার হকারদের অন্য একটি সংগঠন হকার্স ইউনিয়ন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করে এই পরিকল্পনা না মানার ঘোষণা দেয়। বিক্ষোভ সমাবেশে হকার নেতারা বলেন, আগের মতোই রোববার সকালে পণ্য নিয়ে আসবেন হকাররা। বাধা দেওয়া হলে নগর ভবনের সামনে অবস্থানের ঘোষণাও দেওয়া হয় এই বিক্ষোভে।
ঘোষণা অনুযায়ী, রোববার সকাল থেকে গুলিস্তান, জিরো পয়েন্ট, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, গোলাপশাহ মাজার এবং আন্ডারপাসের আশপাশে অল্প কিছু হকার পণ্য নিয়ে আসেন। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে দেখে তারা আর বসেননি। দোকান নিয়ে তারা চলে যান।
গুলিস্তান গোলাপশাহ মাজারের বিপরীতে প্যান্ট নিয়ে এসেছিলেন হকার আব্দুল হক। কিন্তু অবস্থা বেগতিক দেখে তিনি পণ্য নিয়ে সটকে পড়েন। তিনি বলেন, ‘নেতা কইছিলেন দোকান নিয়া বসতে। কে কী করবো দেখবোনে। কিন্তু নেতারই তো খবর নাই। নেতা মোবাইল রিসিভ করেননি। পুলিশ ধরে নিয়ে গেলে কে ছাড়াবে। তাই ঝুঁকি নিয়ে দোকান খুলিনি। ‘
এ ব্যাপারে ডিএসসিসির প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, ‘গত ১১ জানুয়ারি নগর ভবনের সভাকক্ষে আয়োজিত হকারদের পুনর্বাসন নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও হকার নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন মেয়র। এ সময় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ১৫ জানুয়ারি থেকে কর্মদিবসে গুলিস্তান, মতিঝিল ও এর আশপাশ এলাকার ফুটপাতে দিনের বেলা কোনো হকার বসতে পারবে না। তবে অফিস টাইমের পর সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিট থেকে তারা গুলিস্তান-মতিঝিল এলাকায় বসতে পারবেন।’

Print Friendly, PDF & Email