April 29, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন

ডেস্ক : মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে। মেলা উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাসব্যাপী এ মেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

রবিবার (১ জানুয়ারি) সকালে মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী চামড়া ও পাদুকাসহ চামড়াজাত পণ্যকে ২০১৭ সালের জন্য ‘প্রোডাক্ট অফ দ্য ইয়ার’ হিসেবেও ঘোষণা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘চামড়া খাতে রফতানি প্রায় ৭১ গুন বৃদ্ধি পেয়েছে। গত অর্থ বছরে এ খাতে ১ হাজার ১৬০.৯৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানি আয় হয়েছে। প্রথম সারির চামড়াজাত পণ্য এখন বাংলাদেশে প্রস্তুত হচ্ছে। ২০১৭ সালের জন্য চামড়া ও পাদুকাসহ চামড়াজাত পণ্যকে জাতীয়ভাবে বার্ষিক পণ্য বা প্রোডাক্ট অফ দ্য ইয়ার ঘোষণা করছি।’

বেসরকারি খাতে উন্নয়ন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সরকারি খাতের পাশাপাশি যখন বেসকারি খাত সুযোগ পেল তখন স্বাভাবিকভাবে অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি হিসেবে আর্বিভূত হয়েছে এই বেসরকারি খাত। তবে বেসরকারি খাতের কিছু দায়িত্ব রয়েছে। ব্যবসা বাণিজ্য করে নিজেরা সম্পদশালী হবেন, এই চিন্তা যেন না থাকে। মনে রাখতে হবে আপনাদের যে সুযোগ দিচ্ছি এ সুযোগ নিয়ে দেশের মানুষের কল্যাণ করতে হবে।’

নতুন বাণিজ্যের সুযোগ সৃষ্টির প্রতি জোর দিতে হবে জানিয়ে ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন নতুন বাজার তৈরি করতে হবে। কোন দেশের কোন এলাকায় কোন পণ্যের চাহিদা বেশি আর সেই পণ্যের মধ্যে কোনগুলি আমাদের দেশে উৎপাদন করা সম্ভব সেগুলো খুঁজে বের করতে হবে।এ জন্য গবেষণা করতে হবে।

এবারের মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ২০১৩-১৪ অর্থবছরের পণ্য ও সেবাখাতে ২৯টি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানকে স্বর্ণ, ২২টি রফিতানিকারক প্রতিষ্ঠানকে রৌপ্য এবং পণ্যখাতে ১৫টি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানকে ব্রোঞ্জ ট্রফির জন্য মনোনীত করা হয়েছে। এর বাইরেও পণ্যখাত নির্বিশেষে একটি প্রতিষ্ঠানকে সর্বোচ্চ রফতানি আয় অর্জনের স্বীকৃতিস্বরূপ স্বর্ণ ট্রফির জন্য মনোনীত করা হয়েছে। মোট ৬৬টি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানকে ২০১৩-১৪ অর্থবছরের জন্য জাতীয় রফতানি ট্রফি ও সনদ প্রদান করা হবে।

মেলা মাঠের আয়তন ৩১ দশমিক ৫৩ একর। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। এবারের মেলায় প্রবেশ মূল্য ধরা হয়েছে (পূর্ববর্তী ৩ বছরের মতো) প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য জনপ্রতি ৩০ টাকা এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য জন প্রতি ২০ টাকা। ভিআইপি গেইটে গাড়ি আগমন ও নির্গমনের জন্য পৃথক ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

এবার বিভিন্ন ক্যাটাগরির স্টল-প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৮০টি। মেলা মাঠে ১টি ই-শপ, ২টি শিশু পার্ক, ৩টি রক্তসংগ্রহ কেন্দ্র, ৩টি মা ও শিশু কেন্দ্র এবং ১টি প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র এর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মাঠের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন স্পটে বাগান তৈরি করা হয়েছে। মেলা প্রাঙ্গণে মুসল্লিদের নামাজ পড়ার জন্য ১টি মসজিদ এবং আনসার ও বেসরকারি সিকিউরিটি ফোর্স সদস্যদের জন্য ২টি ডরমেটোরি স্থাপন করা হয়েছে।

এ বছর ২১টি দেশ (বাংলাদেশসহ) মেলায় অংশ নিচ্ছে। মেলায় বাংলাদেশ ছাড়া যে সকল দেশের প্রতিষ্ঠানসমূহ অংশগ্রহণ করছে সেগুলো হলো-ভারত, পাকিস্তান, চীন, মালয়েশিয়া, ইরান, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, দক্ষিণ কোরিয়া, মরিশাস, নেপাল, হংকং, জাপান, ভূটান, বাহরাইন, ভিয়েতনাম এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত।

বাণিজ্যমেলায় ২০১০ সালে ২২ কোটি ৮৬ লাখ টাকার, ২০১১ সালে ২৫ কোটি টাকার, ২০১২ সালে ৪৩ কোটি ১৮ লাখ টাকার, ২০১৩ সালে ১৫৭ কোটি টাকার, ২০১৪ সালে ৮০ কোটি টাকার, ২০১৫ সালে ৮৫ কোটি টাকার এবং ২০১৬ সালে ২৩৫ কোটি ১৭ লাখ টাকার রফতানি আদেশ পাওয়া গেছে। ২০১৭ সালের বাণিজ্যমেলায় আরও বেশি আদেশ পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

মেলার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পুলিশবাহিনীর পাশাপাশি বিজিবি, র‌্যাব, আনসার এবং বেসরকারি সিকিউরিটি ফোর্স মোতায়েন থাকবে। তাদের কাজে সহায়তা করার জন্য মেলা প্রাঙ্গনে ওয়াচ টাওয়ার, আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর, আন্ডার ভিহিকল মিরর ব্যবহার করা হবে। মেলার নিরাপত্তা কার্যক্রম মনিটরিং করার জন্য গত বছরের মেলার মতো এবারও মেলায় ১৪০টি সিসিটিভি স্থাপন করা হয়েছে।

বাণিজ্যেমেলাকে এবারে প্রথমবারের মতো বিশ্বব্যাপী ভার্চুয়ালি উপস্থাপন করা হচ্ছে। পুরো বাণিজ্যমেলার ভেন্যুকে ৩৬০ ডিগ্রি ভার্চুয়াল করা হচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email