April 29, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

তালাবদ্ধ ঘরে শিশুর মৃত্যু,মা প্রেমিকের সঙ্গে প্রমোদ ভ্রমণে

ডেস্ক:  সেন্ট্রাল কিয়েভের ২০ বছর বয়সী মায়ের নাম ভ্লাদিস্লাভা পডচাপকো। তিনি তার দুই শিশুকে বাড়িতে রেখেই বেড়াতে চলে যান তার প্রেমিকের সঙ্গে। বাসায় তখন কোনো খাবারও ছিল না।

খাবার না পেয়ে মারা গেলো  তার এক শিশু। আর তার লাশ নিয়ে তিন দিন ঘরের মধ্যে থাকলো তারই বোন।

এই বোনটির বয়সও মাত্র ২ বছর। এই দুই শিশুর মা তাদের বাড়িতে রেখে ৯ দিনের জন্য চলে  গিয়েছিলেন। কোনো খাবারও দিয়ে যাননি। মর্মস্পর্শী এই ঘটনা ঘটেছে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে।

ড্যানিলের বয়স মাত্র ২৩ মাস। তার বড় বোনটি অ্যানা, মাত্র ২ বছরের শিশু। এই দুজন খাবার ছাড়া বাড়িতে ছিল ৯ দিন ধরে। ছয় দিনের দিন ড্যানিল মারা যায় খাবারের অভাবে। এর পর ভাইয়ের লাশ নিয়ে অ্যানা তিন দিন অবস্থান করে সেই ফ্ল্যাটে।

অ্যানার প্রাণটাও যায় যায় করছিল। হয়তো মৃত ভাইয়ের লাশটি পাহাড়া দিতেই বেঁচে ছিল সে। মৃতপ্রায় অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তার বেঁচে থাকা অলৌকিক ঘটনা বলেই মন্তব্য করেছেন চিকিৎসকরা। তারা জানান, শিশুটি কোনভাবে বেঁচে ছিলে। তার নিঃশ্বাস প্রায় বন্ধ হওয়ার পর্যায়ে ছিল। তাকে হাসপাতালে নিয়ে প্রথমেই খাবার দেওয়া হয়। এখন সে ভালো আছে। একটু একটু করে শক্ত খাবার দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে, মা ফিরে এসেছেন। পুলিশকে জানান, আমি বুঝি নাই যে বাচ্চাটা মারা যাবে।

সন্তানদের অবহেলা করার অপরাধে ভ্লাদিস্লাভাকে ৮ বছরের জেল দেওয়া হয়েছে। সোশাল মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। সবাই এই বুদ্ধি-বিবেকহীন মায়ের মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছেন।

ভীত এবং দিশেহারা শিশু দুটো বন্ধ ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেছিল। বেরোনোর দরজা তারা ধাক্কা-ধাক্কি করে এবং খোলার জন্য নানা প্রচেষ্টা চালায়। প্রতিবেশী ফ্ল্যাট থেকে সকালে এবং বিকালে শিশুদের কান্না শোনা যেতো। এই প্রতিবেশীদের ফোন পেয়েই পুলিশ এসেছে বলে জানানো হয়, কিন্তু তথ্যটি নিশ্চিত নয়।

শিশু দুটো কোনো সহায়তাই পায়নি। তাদের বিশ্বাস ছিল মা দ্রুত ফিরে আসবে। পডচাপকোর সোশাল মিডিয়া বাচ্চাদের ছবিতে পরিপূর্ণ। ঘটনার আগে দেখা গেছে, তিনি বাচ্চাদের জন্য অনেক ভালোবাসা জানান সোশাল মিডিয়ায়।

বাচ্চা দুটোকে কিন্ডারগার্টেন থেকে ছাড়িয়ে আনেন মা। কিন্তু তার কোনো সমস্যা ছিল কিনা তা জানা যায়নি। অর্থের অভাব আছে বলেও মনে হয় না। তিনি আইফোন ব্যবহার করেন। সোশাল কেয়ার ওয়ার্কাররাই ঠিক করবেন অ্যানার ভবিষ্যত কি হবে। হয়তো তাকে কোনো এতিমখানায় দেওয়া হবে। কিংবা দত্তক দিয়ে দেওয়া হবে। অথবা তার বাবা হয়তো দায়িত্ব নেবেন।

মায়ের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে সবাই তাকে বিকৃতরুচি, ডাইনী এবং পশু বলে মন্তব্য করছেন। অনেকে বললেন, নরকের আগুনে পোড়া উচিত তার।

সূত্র: ডেইলি মেইল

Print Friendly, PDF & Email