May 14, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

মুফতি হান্নানসহ ৩ জঙ্গির ফাঁসির রায় আপিলেও বহাল

ডেস্ক : সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলায় হতাহতের ঘটনায় আনা মামলায় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নানসহ তিন জঙ্গির ফাঁসির রায় বহাল রেখেছে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ।
এ বিষয়ে আসামিদের আনা আপিল খারিজ করে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে ৪-সদস্যের আপিল বিভাগ বেঞ্চ আজ বুধবার এ রায় দেন। হান্নান ছাড়া অপর দুই জঙ্গি হলেন- শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার ওরফে রিপন।
আজ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা। আসামি মুফতি হান্নান ও বিপুলের পক্ষে ছিলেন এডভোকেট মোহম্মদ আলী ও রিপনের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হেলাল উদ্দিন মোল্লা।
আইনজীবীরা জানান, এর ফলে তিন আসামি মুফতি হান্নান, বিপুল ও রিপনের সামনে এখন কেবল আপিলের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন (রিভিউ) করার সুযোগ থাকল। রিভিউ নাকচ হয়ে গেলে শেষ চেষ্টা হিসেবে তারা অপরাধ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারবেন। সে আবেদনও নাকচ হলে কারাবিধি অনুযায়ী তাদের মৃত্যুদন্ড কার্যকরে আর বাধা থাকবে না। আইনজীবীরা জানান, যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি আপিল না করায় তাদের যাবজ্জীবন দন্ড বহাল রয়েছে।
গত ৩০ নভেম্বর এ মামলায় আপিল শুনানি শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা। গতকাল মঙ্গলবার উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আজ রায় ঘোষণার জন্য রাখা হয়। মামলায় পাঁচ আসামিই কারাগারে রয়েছেন।
সিলেটে হযরত শাহজালাল (রা:)-এর মাজার প্রাঙ্গণে ২০০৪ সালের ২১ মে আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা হয়। এতে ঘটনাস্থলেই পুলিশের এএসআই কামাল উদ্দিন নিহত হন। এছাড়া পুলিশ কনস্টেবল রুবেল আহমেদ ও হাবিল মিয়া নামের আরেক ব্যক্তি মারা যান হাসপাতালে। আনোয়ার চৌধুরী ও সিলেটের তৎকালীন জেলা প্রশাসকসহ (ডিসি) অন্তত ৭০ জন ওই ঘটনায় আহত হন।
পুলিশ ওইদিনই সিলেট কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাত পরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। তদন্ত শেষে ২০০৭ সালের ৭ জুন হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আবদুল হান্নান, তার ভাই মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ওরফে মফিজ ওরফে অভি, শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার ওরফে রিপনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। পরে মুফতি মঈন উদ্দিন ওরফে আবু জান্দাল ওরফে মাসুম বিল্লাহ ওরফে খাজার নাম যুক্ত করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
৫৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর সিলেটের দ্রত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সামীম মো. আফজাল রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আসামিদের মধ্যে মুফতি হান্নান, বিপুল ও রিপনকে মৃত্যুদন্ড এবং মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয় বিচারিক আদালত।
নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদন্ড অনুমোদন করতে ডেথ রেফারেন্স নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি ২০০৯ সালে আসামিরা জেল আপিলও করেন। বিচারিক আদালতের দন্ড বহাল রেখে গত ১১ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণা করে হাইকোর্ট। গত ২৮ এপ্রিল হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। রায় পাওয়ার পর গত ১৪ জুলাই আপিল করেন দুই আসামি হান্নান ও বিপুল। অপর মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি রিপন আপিল না করলেও আপিল বিভাগ তার জন্য (রাষ্ট্রনিযুক্ত) আইনজীবী নিয়োগ করে।

Print Friendly, PDF & Email