May 14, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

ওয়াইফাই বাস সেবায় ভোগান্তিই বেশি

ডেস্ক : দুই বছরেরও বেশি সময় বিটিআরসির বাসে সরকারিভাবে বিনামূল্যে ওয়াইফাই ইন্টারনেট সেবা চালু হয়েছে। তবে এ সেবা কাঙ্ক্ষিত জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেনি। কারণ এতে স্বস্তির চেয়ে ভোগান্তির মাত্রাই বেশি।

ভুক্তভোগীরা জানান, বেশিরভাগ বাসে ওয়াইফাই ডিভাইসটি সচল থাকে না। বাস চালকরাও ওয়াইফাই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখেন। আবার ইন্টারনেটে গতি না থাকা বা ধীরগতিসহ নানা কারণে মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের স্বস্তির বদলে অস্বস্তিই উপহার দেয়। তবে বেসরকারিভাবে চালু হওয়া ওয়াইফাই বাসগুলো ভালো সেবা দিচ্ছে বলে জানান তারা।

২০১৪ সালের ১০ এপ্রিল দেশে প্রথমবারের মতো বিআরটিসি ওয়াইফাই বাস চালু করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্প। প্রাথমিকভাবে পাইলটভিত্তিতে মতিঝিল-উত্তরা রুটের ১০টি বাসে এ সুবিধা চালু করা হয়। পরবর্তীতে আরো পাঁচটি বাসে ওয়াইফাই চালু করা হলেও বিভিন্ন সমস্যার কারণে সেবাটি ব্যবহারকারীদের ভোগান্তিই বাড়িয়েছে।

সম্প্রতি রাজধানীর মতিঝিলে বিআরটিসি বাস কাউন্টারে গিয়ে পাঁচটি বাসে পরীক্ষা করেও ওয়াইফাই সংযোগ দেখতে পাওয়া যায়নি। একজন বাসচালকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সব বাসে ওয়াইফাই নেই। ১৫টি বাসে আছে। সবগুলোতে দুটি করে রাউটার আছে। কিন্তু মাত্র ৪-৫টি বাসে ওয়াইফাই চালু আছে। অন্যগুলো কাজ করে না।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই গাড়ি চালক বলেন, ‘আমরা একেকজন ড্রাইভার একেকদিন ভিন্ন ভিন্ন বাস চালাই। মাঝে মাঝে একজন দুজন যাত্রী আমাদের ওয়াইফাই চালু করতে বলে। ওয়াইফাই কেমন চলে তা বলতে পারব না।’

জানা গেছে, বিআরটিসি এ সেবার কাঙ্ক্ষিত মান নিশ্চিত করতে পারেনি। দূরপাল্লার বাসেও ওয়াইফাই চালুর কথা ছিল, তাও হয়নি। আবার বাসে একসঙ্গে চারটি সেবা চালুর কথা ছিল। কিন্তু বিআরটিসি ওয়াইফাই সেবা ছাড়া আর কিছু চালু করেনি। অন্য তিনটি সেবা ছিল ক্লিক ম্যানেজমেন্ট (কোন গাড়ি কোথায় আছে তা দেখা), অ্যাপ (সবচেয়ে কাছের বাসটি কোথায় আছে এবং যাত্রীর কাছে আসতে কত সময় লাগবে তা জানা) এবং পরিবহন ম্যাপ (কোন রুটে কোন বাস চলে)।

এদিকে বেসরকারিভাবে চালু হওয়া অন্তত দুটি বাসে ভালো ওয়াইফাই সেবা পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে। তবে গতি নিয়ে অনেকে কথা বলতে চান। সংশ্লিষ্টরা বলেন, চলন্ত অবস্থায় বাসে অনেক জায়গায় নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না। টাওয়ারগুলোর দূরত্বের কারণে এ সমস্যা হয়। বিশেষ করে ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় সমস্যাটি বেশি হয়ে থাকে।

এদিকে ১৯ এপ্রিল মোবাইলফোন অপারেটর রবি দেশের ১০০টি বাস ও ১০০টি ট্যাক্সি ক্যাবে ফ্রি ইন্টারনেট সেবা সুবিধা চালু করে। প্রথম পর্যায়ে দূরপাল্লার ১০০ বিলাসবহুল ও রাজধানীতে চলাচলরত বাস এবং প্রায় দেড় শতাধিক ট্যাক্সি ক্যাবে রবি ওয়াইফাই চালু করা হয়েছে।

এছাড়া ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, কুষ্টিয়াসহ অন্যান্য রুটে চলাচলরত দেশ ট্রাভেলসের ২৬টি, সেন্টমার্টিন পরিবহনের চারটি, হানিফ পরিবহনের ১৬টি, এসবি সুপার ডিলাক্সের দুইটি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫টি বাসে (শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য) ওয়াইফাই চালু আছে।

অন্যদিকে ঢাকার আজিমপুর থেকে গাজীপুর রুটে চলাচলরত ভিআইপি পরিবহনের ৩০টি বাসের যাত্রীরা ফ্রি ইন্টারনেট সেবা ব্যবহার করতে পারছেন। প্রতিটি বাসের দরজার ডান পাশে রবি ওয়াই ফাইয়ের লোগো আছে; যা দেখে যাত্রীরা বুঝতে পারেন এই বাসে ফ্রি ইন্টারনেট সেবা রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বছরের আগস্টে দূরপাল্লার বাসে যাত্রীদের জন্য ওয়াইফাই ইন্টারনেট সেবা চালু করে গ্রামীণফোন। ঢাকা-কক্সবাজার ও ঢাকা-সিলেট রুটের গ্রিনলাইন পরিবহনে ওয়াইফাই ইন্টারনেট সুবিধা চালু করা হয়। দূরপাল্লার বাস যাত্রীদের ইন্টারনেট সেবায় কোনো মোবাইলফোন অপারেটরের এটিই ছিল প্রথম উদ্যোগ।

Print Friendly, PDF & Email