May 14, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

ফেসবুকে অস্ত্রসহ আইএস জঙ্গীর ছবি: দু’ভাইয়ের খোঁজে পুলিশ

ডেস্ক : কথিত ইসলামিক স্টেট বা আইএস এর পতাকা আর অস্ত্রসহ দুই সন্দেহভাজন জঙ্গির ছবি ফেসবুকে আসার পর এর উৎস সম্পর্কে জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

গুলশান হামলার পর নিখোঁজ যে দশজন যুবকের নাম আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রকাশ করেছিলো তাতে ছিলো ইব্রাহিম হাসান খান ও জুনায়েদ হাসান খানের নাম।

পরে পুলিশ বলেছিলো তারা দুজন ভাই এবং তাদের পরিবারেরও কোন খোঁজ নেই।

এর মধ্যেই বুধবার রাতে ইব্রাহিম হাসান খানের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি ছবি পোস্ট করা হয় যা রীতিমত চমকে দিয়েছে সবাইকে। কারণ এতে দেখা যাচ্ছে পেছনে কথিত ইসলামিক স্টেট এর পতাকা আর সামনে টেবিলে অস্ত্র নিয়ে এই দুজনসহ মোট তিনজন বসে আছেন।

বৃহস্পতিবারই ছবিটি সরিয়ে ফেললেও পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের উপ কমিশনার মুহিবুল ইসলাম বলছেন পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিট সাথে সাথেই বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছে, তারা ছবিটির উৎস সম্পর্কে অনুসন্ধান চালাচ্ছেন।

তিনি বলেন, ”ফেসবুক থেকে লোকেশন তো বের করা যায়না তবে আমরা কাজ করছি। আমরা নিশ্চিত না যে এরা দেশে নাকি বাইরে আছে। আর সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং কিন্তু পুরোটা সম্ভব হয়না। কারণ ফেসবুকের সাথে ওই ধরনের চুক্তি কিন্তু নেই। এ ক্ষেত্রে মনিটর করি, সন্দেহভাজন আইডিগুলোর তৎপরতা আমরা দেখি।”

কিন্তু আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এমন সক্রিয়তার মধ্যে কথিত জঙ্গিদের ফেসবুকে এমনভাবে নিজেদের উপস্থিতি জানান দেয়াটাই কীভাবে দেখছেন তারা।

এমন প্রশ্নের জবাবে মিস্টার ইসলাম বলেন “শুধু আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একার পক্ষে সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ তো সম্ভব নয়। সচেতনতা তৈরির চেষ্টা করছি। আমাদের নজরদারির মধ্যে রয়েছে।”

ওদিকে ইব্রাহিম হাসান খান ও জুনায়েদ হাসান খানের সম্পর্কে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী তাদের বাবা দীর্ঘকাল ধরে সৌদি আরবে ছিলেন এবং ইব্রাহিম সেখানেই পড়াশোনা করে প্রথমে যুক্তরাষ্ট্র যান ও পরে বাংলাদেশে এসেছেন।

ফেসবুকের ছবিতে দেখা যাচ্ছে তাদের তিনজনেরই দাড়ি আছে ও একজনের মাথায় পাগড়ি রয়েছে। আর হাতে রয়েছে পানীয়। তবে তৃতীয় ব্যক্তিটি কে তার সম্পর্কে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। ছবিটি অবশ্য বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে ফেসবুকে দেখা যাচ্ছেনা।

যদিও ফেসবুক থেকে সংগ্রহ করে বাংলাদেশের অনেকগুলো পত্রপত্রিকা ও অনলাইন পোর্টালে এটি প্রকাশ করা হয়েছে।

তবে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে এ ধরনের ছবি বিশ্লেষণ করে সেটি কোথায় তোলা হয়েছে বা কোথা থেকে আপলোড করা হয়েছে সে সম্পর্কে ধারণা নেয়ার মতো বিশেষজ্ঞের ঘাটতি রয়েছে বলেই ধারণা করা হয়।

বাংলাদেশের জঙ্গিদের তৎপরতা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করেন নুর খান লিটন। তিনি বলছেন জঙ্গিগোষ্ঠীকে পুরোপুরি যে নজরদারিতে আনা যায়নি ফেসবুকের এ ছবিটি তারই প্রমাণ।

মিস্টার খান বলেন এমন পরিস্থিতিতে এ ধরনের ছবি প্রকাশে এটি পরিষ্কার যে শুধুমাত্র পুলিশের পক্ষে জঙ্গি তৎপরতা মোকাবেলা সম্ভব নয়।

মিস্টার খান বলছেন সাম্প্রতিক অভিযানগুলোর পরে সন্দেহভাজন জঙ্গিদের এ ধরনের ছবি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও সক্ষম করে তুলতে সহায়তা করবে।

এর আগে গুলশানে হামলার পরেও আইএসের পক্ষ থেকে প্রথমে নিহতদের ও পরে হামলাকারীদের ছবি প্রকাশ করা হয়েছিলো।

Print Friendly, PDF & Email