ডেস্ক: ইসরায়েলকে ‘বিপজ্জনক প্রতিবেশীদের থেকে রক্ষার জন্য’ রেকর্ড পরিমাণ সামরিক সহায়তা দেওয়ার চুক্তি স্বাক্ষর করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দশ বছর মেয়াদী ওই সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী, ইসরায়েলকে ৩৮০০ কোটি ডলার সামরিক সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এবারই প্রথম কোনও রাষ্ট্রকে এতো বড় অংকের সামরিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।.
চুক্তির শর্তাবলী নিয়ে গত ১০ মাসের আলোচনার পর যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ওয়াশিংটনে ওই সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, চুক্তি স্বাক্ষরের পর এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, ‘বিপজ্জনক প্রতিবেশীদের থেকে ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এই চুক্তি উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে বলে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং আমি আশাবাদী।’
ওই চুক্তি অনুযায়ী, ইসরায়েলকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বছরে ৩৮০ কোটি ডলার করে সামরিক সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র। বর্তমানে ইসরায়েলকে বছরে ৩১০ কোটি ডলার করে সামরিক সহায়তা দিয়ে থাকে দেশটি।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে বড় অংকের দ্বিপাক্ষিক সামরিক সহায়তা। তবে ইসরায়েল এই চুক্তির বাইরে অন্য কোনও সামরিক সহায়তা চাইতে পারবে না বলেও শর্ত আরোপ করা হয়েছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার ওয়াশিংটন প্রতিনিধি প্যাটি কুলহেইনের মতে, এই চুক্তিকে অনেক বড় পরিবর্তন মনে করার কোনও কারণ নেই। ২০১৫ বা ২০১৬ সালেও ইসরায়েল বছরে ৩১০ কোটি ডলার করে পেয়েছে। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮০ কোটি ডলারে। ২০১৫ সালে মার্কিন কংগ্রেস ইসরায়েলকে অতিরিক্ত ৬২ কোটি ডলার দিয়েছিল ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়নের জন্য। বস্তুত এখনও ইসরায়েল ওই একই অংকের সামরিক সহায়তা পাচ্ছে। তবে চুক্তির মাধ্যমে তার পরিমাণটা নিশ্চিত করা হয়েছে।
কুলহেইন জানান, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর দাবি ছিল ৪৫০০ থেকে ৫০০০ কোটি ডলারের চুক্তি হতে হবে। সে অনুযায়ী বর্তমান চুক্তিটি অনেকটাই কম অংকের।
তবে আল-জাজিরার রাজনৈতিক বিশ্লেষক মারওয়ান বিশারা এই চুক্তির জন্য ওবামাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন, ‘এই প্রশ্নের উত্তর তাকেই দিতে হবে, কেন তিনি ইসরায়েলের সামরিক সহায়তা না কমিয়ে আরও বাড়ালেন? নির্বাচনকে সামনে রেখেই কি তিনি এমনটা করেছেন? আর বিপজ্জনক প্রতিবেশি কারা, তারা কিভাবে বিপজ্জনক?’
এদিকে, জেরুজালেমে ইসরায়েলের বার-ইলান ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ইফরাইম ইনবার জানিয়েছেন, সমরাস্ত্র উন্নয়ন এবং যুদ্ধবিমান ও ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যাটারি নবায়নের জন্য এই চুক্তিটির প্রয়োজন ছিল ইসরায়েলের। তিনি ইসরায়েলের প্রতি হুমকি হিসেবে ইরান, মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) এবং গোলান মালভূমি দখলে রাখার বিষয়টি উল্লেখ করেন।
এই চুক্তি অনুযায়ী, মার্কিন অর্থ সামরিক সরঞ্জাম কেনা, মেরামত এবং অন্যান্য কাজে ব্যবহার করতে পারবে ইসরায়েল। এবারই প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ব্যয় করার জন্য ৫০০ কোটি ডলার বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর আগের চুক্তিগুলোতে মার্কিন কংগ্রেস পৃথকভাবে এবং বার্ষিকভাবে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য বরাদ্দ দিত।
সূত্র: আল-জাজিরা, রয়টার্স।
এ বিভাগের আরো..
রাফায় হামলা হলে ইসরায়েলের ‘বিপজ্জনক পরিণতি’ হবে
ইসরায়েল আল-শিফা থেকে সেনা প্রত্যাহার করেছে: হামাস
শ্রমিক ও গণপ্রবাসীদের সম্মাননায় আল-হারামাইন এর ইফতার মাহফিল।