April 28, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

নগদে কাঁচা পাট কিনতে ২৬০ কোটি টাকা পাচ্ছে বিজেএমসি

নিজস্ব প্রতিবেদক : কাঁচা পাট কিনে বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের (বিজেএমসি) আওতাভুক্ত মিলসগুলোকে সচল রাখতে ২৬০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার সম্মতি জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ছাড় করা অর্থ হাতে পাবে বিজেএমসি।

তবে কাঁচা পাট কেনা ছাড়া বিজেএমসি অন্য কোনো কাজে এ অর্থ ব্যয় করা যাবে না- এমন শর্তে এ ঋণ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এ অর্থ ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরও বেশ কিছু শর্ত রয়েছে।

এর আগে বিজেএমসির আওতাভুক্ত মিলসগুলো বাকিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে কাঁচাপাট কিনতো। পরে বকেয়া টাকা পরিশোধ করতো। এ প্রক্রিয়ায় পাট কেনায় বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম দেখা দিয়েছে বলে মনে করে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। তাই এবার থেকে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে নগদ টাকার বিনিময়ে কাঁচা পাট কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. হেলাল উদ্দীন স্বাক্ষরিত একটি চিঠি গত ৩১ জুলাই জারি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

অর্থ ছাড়করণ বিষয়ক চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বিজেএমসির নিয়ন্ত্রণাধীন মিলসমূহের কাঁচাপাট কেনার লক্ষ্যে ২৬০ কোটি টাকা ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে অর্থ বিভাগের ‘অনুন্নয়ন খাতে নগদ ঋণ’ খাত থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ছাড় করা ২৬০ কোটি টাকা চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বিজেএমসির মিলগুলোর জন্য কাঁচা পাট ক্রয় ছাড়া অন্য কোনো খাতে ব্যয় করা যাবে না। এ অর্থ সুনির্দিষ্ট ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট পেয়ি চেক এর মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে।

অন্যান্য শর্তগুলো হলো- ছাড়কৃত অর্থ ব্যয়ের বিস্তারিত হিসাব সিএ ফার্মকে দিয়ে তৈরী করা অডিট রিপোর্ট আগামী তিন মাসের মধ্যে অর্থ বিভাগে পাঠাতে হবে।

এ অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে সরকারের বিদ্যমান বিধি-বিধান অনুসরণ করতে হবে। বিধি বহির্ভূতভাবে কোনো অর্থ পরিশোধ করা হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবেন।

ছাড় করা অর্থ বিজেএমসির অনুকূলে সরকারি ঋণ হিসেবে গণ্য হবে, যা আগামী পাঁচ বছর পাঁচ শতাংশ সুদে ষান্মাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে। এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের সঙ্গে বিজেএমসির একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে।

আর্থিক কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, বিজেএমসি ও অর্থ বিভাগের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকে বর্ণিত শর্তাদি যথাযথভাবে প্রতিপালন করতে হবে।

সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০ প্রায় বাস্তবায়নে সক্ষম হয়েছে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। এ আইন বাস্তবায়নের ফলে ইতোমধ্যে সারা দেশে কাঁচাপাট, বস্তা বা ব্যাগের মজুদ এবং চাহিদা নির্ধারণ ককরা হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের হিসেবে, এ আইন পুরোপুরি বাস্তবায়নে বছরে প্রায় ৭০ কোটি পাটের বস্তা প্রয়োজন। সে হিসেবে প্রতি মাসে পাঁচ কোটি ২৫ লাখ ব্যাগ লাগবে। ৭০০ গ্রাম ওজনের ৭০ কোটি বস্তা তৈরি করতে বছরে ২০ থেকে ২২ লাখ বেল কাঁচাপাটের প্রয়োজন।

এ বিষয়ে বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেন, ‘অর্থ ছাড়ের ক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয় শর্ত দিবে এটা স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বরাদ্দ করা অর্থ সর্বোত্তম ব্যবহার করা হবে। এর আগে কাঁচাপাট কেনা হতো বাকিতে। এ জন্য পাট ক্রয়ে অনিয়মের সুযোগ সৃষ্টি হতো। কিন্ত এবার থেকে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে নগদ টাকার বিনিময়ে কাঁচা পাট কেনা হবে। এতে অনিয়মের মাত্রা অনেকটা কমে আসবে। একই সঙ্গে বিজেএমসির সামগ্রিক লোকসান কমে আসবে।’

Print Friendly, PDF & Email