April 29, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

পাঁচ ব্যক্তির শিরোশ্ছেদ করে মাথা খুঁটিতে

ডেস্ক : পুরো নাম আইএসআইএস, সংক্ষেপে আইএস বা ইসলামী স্টেট। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় জঙ্গিবাদি তৎপরতা চালিয়ে আসছে তারা বহুদিন ধরে। জঙ্গি বা বিচ্ছিন্নতাবাদি তৎপরতা বললে ভুল বলা হবে। বরং বলা উচিত সন্ত্রাসী তৎপরতা।

এমনভাবে সন্ত্রাসী তৎপরতা চালানো হয়, যাতে মানুষের মধ্যে ভয়ের সঞ্চার হয়। তাদের বিরুদ্ধে কোনো কাজ করতে যাতে মানুষ দ্বিতীয়বার চিন্তা করতে বাধ্য হয় মানুষ। তাদের সেই বর্বরতার দৃশ্য ভিডিও করে আবার প্রচারও করা হয়। কারণ ওই একটাই মানুষের মধ্যে ভয় ঢুকিয়ে দেওয়া।

সম্প্রতি পাঁচ ব্যক্তির শিরোশ্ছেদ করে তারা মাথা বেঁধে রাখে খুটিতে। ওই ঘটনার দৃশ্য তারা আবার ভিডিও করে রাখে এবং তা প্রচারও করে তাতে দেখা যায়, কমলা রঙের পোশাক পড়া বন্দিরা বসে আছে বিস্তির্ণ বালুকাময় প্রান্তরে। হাত দুটো বাঁধা পিছমোড়া করে। তাদের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ এনেছে আইএসআইএস। কী, বিভৎস এটি।

সামনে দাঁড়িয়ে আছে হত্যাকারী আইএস’র পাঁচ জঙ্গি। কালো পোশাক পড়া পাঁচ জঙ্গির প্রত্যেকের মুখ ঢাকা একই রঙের কাপড় দিয়ে। প্রত্যেকেরই হাতে হান্টিং নাইফ। শিরোশ্ছেদ করার আগে হাড় কাঁপানো হুঁশিয়ারি পড়ে শোনানো হয় বন্দিদের। বলা হয়, ‘আমাদের বিরোধীতাকারীদের এই অবস্থাই হয়।’

সিরিয়ান অবজারভ্যাটরি ফর হিউম্যান রাইটসের (এসওএইচআর) দেয়া তথ্য অনুযায়ী, হত্যাকারীদের একজন পাঁচ বন্দিকে শত্রু বলে অভিহিত করে বলেন, ‘আপনাদের রক্ত নেওয়ার জন্য আমাদের বেয়নেট এখন নিশপিশ করছে।’

এরপর বন্দিদের জোর করে মাটিতে শোয়ানো হয়। একজন একজন করে তাদের ধর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে মাথা বেঁধে রাখা হয় আলাদা আলাদা খুটির সঙ্গে। ভিডিও করা হয় পুরো ঘটনাটির। তাদের বিরুদ্ধে আইএসআইস’র তথ্য প্রতিপক্ষ গ্রুপকে জানিয়ে দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়।

নিহতদের নাম অসিম হাম্মাম আল-ডেবস, হারিথ আহমাদ জালিদ, মুহাম্মদ আহম্মাদ আল-মশাওয়াহ, আব্দুল রাহমান আহমেদ আল-আশাহাবা এবং মোহাম্মদ ওবায়েদ আল-হুসেইন।

ভিডিওতে আরও দাবি করা হয়, যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত নিউ সিরিয়ান আর্মি ও ক্রসেডারদের কাছে তারা আইএসআইএসের গোপন তথ্য পাচারের কথা স্বীকার করেছে।

এনএসএ বর্তমানে সিরিয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে আইএসআইস’র বিরুদ্ধে লড়াই করছে। সেখানেই তাদের হত্যা করে ভিডিওটি করা হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই লোকদের গ্রেফতার করা হয় ইরাক সীমান্ত সংলগ্ন দেইল ইজর প্রদেশের আল-বুকামাল শহর থেকে।

যুক্তরাষ্ট্র প্রশিক্ষিত বিদ্রোহীরা এখন কৌশলগত শহরটির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিমান থেকে বোমা হামলা চালিয়ে তাদের সহায়তা করছে পশ্চিমা বাহিনী। শহরটি দখল করে নেওয়ার জন্য এনএসএ অভিযান শুরু করে মঙ্গলবার। এরই মধ্যে তারা সন্ত্রাসী বাহিনীর রসদ সরবরাহ রুট বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে।

কিন্তু শহরটির উপকণ্ঠ থেকে আইএসআইএস’র পাল্টা হামলার মুখে পিছু হটতে বাধ্য হয় এনএসএ বিদোহীরা। রয়টার্স জানায়, আইএসআইএস সন্ত্রাসীরা এনএসএ বিদ্রোহীদের ঘিরে ফেলে তাদের ওপর চোরাগোপ্তা হামলা চালাচ্ছে। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় এনএসএ বিদোহীদের। এছাড়া তাদের বহু অস্ত্রশস্ত্রও দখল করে নিয়েছে আইএসআইএস সন্ত্রাসীরা।

এনএসএ’র মুখপাত্র মুজাহেম আল সেলুম সংবাদ সংস্থাটিকে বলেন, ‘আমরা প্রথম পর্যায়ের অভিযান শেষে মরুভূমি এলাকায় সরে গেছি।’

অভিযান সফল হয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসীদের গ্রামীণ এলাকায় হটিয়ে দেয়া সম্ভব হয়েছে।’

সন্ত্রাসীরা যতোই ভূখ- হারাচ্ছে ততোই তারা মরিয়া হয়ে উঠছে। নিচ্ছে ভয়ঙ্কর ভয়ঙ্কর সব কৌশল। গত সপ্তাহেই তারা ইরাকি বাহিনীর কাছে ফালুজা শহরের নিয়ন্ত্রণ হারায়। এই শহরটি তাদের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল। শহরটির নিয়ন্ত্রণ হারানোকে আইএসআইএস’র জন্য একটি বড় ধরনের আঘাত বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email