April 29, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

দুপুর নাগাদ আঘাত হানতে পারে ‘রোয়ানু’

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’ আরও উত্তর-পূর্বে এগিয়ে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থান করছে। এটি শনিবার সকাল বা দুপুর নাগাদ বরিশাল ও চট্টগ্রামের উপকূলে আঘাত হানতে পারে।
এ জন্য চট্টগ্রাম, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর, কক্সবাজার বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত বহাল রাখতে বলেছে আবহাওয়া বিভাগ। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
শনিবার সকাল ৬টার পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ সব তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
বুধবার দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি এলাকায় সৃষ্টি হওয়া গভীর নিম্নচাপটি ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে বৃহস্পতিবার আবহাওয়াবিদরা এর নাম দেন ‘রোয়ানু’।
আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’ শনিবার সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ২৫৫ কিলোমিটার, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ২৩০ কিলোমিটার, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৯০ কিলোমিটার এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর-পূর্ব দিকে এগিয়েছে। সকাল বা দুপুর নাগাদ বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে শনিবার ভোর থেকে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে।
শুক্রবার রাত ৯টায় ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫০ কিলোমিটার, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৩৫ কিলোমিটার, মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৭০ কিলোমিটার এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
৭ নম্বর বিপদ সংকেতের মানে হলো- বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতার ঝঞ্ঝাবহুল এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে নিপতিত। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরের উপর বা নিকট দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।
আবহাওয়াবিদ মো. রাশেদুজ্জামান দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়টি মাঝারি মানের। এটি শক্তি সঞ্চয় করছে না আবার দুর্বলও হচ্ছে না। এটি দুপুরের মধ্যে বাংলাদেশের বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে। উপকূলে আঘাত হানার পর এগোতে এগোতে ঘূর্ণিঝড়টি শক্তি হারিয়ে ফেলবে।’
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা ও এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোও ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। কক্সবাজারের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
আবহাওয়া অফিস আরও জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা ও এর অদূরবর্তী দ্বীপ, চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুটের বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
উপকূলীয় জেলাগুলো ও অদূরবর্তী দ্বীপ, চরগুলোর উপর দিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি অতিক্রমের সময় ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণসহ ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার বেড়ে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে প্রায় সারাদেশেই বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় ১২৩ মিলিমিটার।

Print Friendly, PDF & Email