May 15, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

মা নয়, ছেলেটিও জোগাড় করা

ডেস্ক প্রতিবেদন : ব্যস্ত শহরে কত না কাণ্ড ঘটে। টাকা রোজগারের ধান্ধায় অসুস্থ পথ বেছে নেয় একধরনের মানুষ। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার ব্যস্ত এলাকা হাবরা স্টেশনে ফ্লাইওভারে অসুস্থ ছেলের চিকিৎসার জন্য টাকা চাইতেন এক মা। অসুখটাও ভয়ংকর, ব্রেন টিউমার। বেশ ভালোই আয় হচ্ছিল। পরে জানা গেল এটি আসল মা নয়। আর ছেলেটিও জোগাড় করা।

এমনই চলছিল ১৫ দিন ধরে। হাবরা স্টেশনে ফ্লাইওভারের ওপরে এই ‘মা-ছেলে’কে রোজই দেখতেন অনেকে। এই পথে স্কুলে যেতেন একজন শিক্ষিকা। নাম রমা রায়। আগে দুদিন টাকা দিয়েছেন। শনিবারও সেই পথে স্কুলে যাচ্ছিলেন রমা রায়।

এ দিন ওই ‘মা’কে দেখে রমা জানতে চান, ছেলের অসুখটা কী। জবাব মেলে, ব্রেন টিউমার। এসএসকেএম হাসপাতালে রোজ গিয়ে ইনজেকশন দিয়ে আনতে হয়। চিকিৎসার কাগজপত্র দেখতে চান রমা। কিন্তু কিছুতেই রাজি নয় ‘মা’। শেষে উঠে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন ছেলে কোলে। রমা তার হাত চেপে ধরেন। আশপাশের লোকজনও ঘিরে ধরে। ‘মা’ আর তার ‘ছেলে’কে নিয়ে যাওয়া হয় হাবরা জিআরপি ফাঁড়িতে।

তারপর যা জানা যায় তা তাজ্জব হওয়ার মতোই। মুখের কালো কাপড়ের ঢাকনা সরে যেতেই ঝিমিয়ে থাকা ছেলেটি নড়েচড়ে ওঠে। ভাঙা ভাঙা বাংলায় বলে, ‘তার বাড়ি ওডিশায়। এই নারীটিকে সে ডাকে ‘বড়মা’ বলে। বড়মার কাছে থাকে তার মতো আরো ছোট ছোট কয়েকটি বাচ্চা। সকলকে রোজ রাতে ইনজেকশন দেওয়া হয়। তাতে দিনভর ঝিমুনি থাকে। সকালে মাস্ক পরিয়ে ভিক্ষা করতে আনা হয়। মাস্ক পরালে চোখের পাতা ভারী হয়ে আসে। নড়তে চড়তে ইচ্ছে করে না।’

ছেলেটা জানায়, ‘ঠিকমতো রোজগার না হলে খেতেও দেওয়া হতো না।’

তথ্যসূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

Print Friendly, PDF & Email