April 29, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের নারী ক্রিকেট দলের ইতিহাস

ডেস্ক প্রতিবেদন  : অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ট্রফি জিতে নিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ নারী ক্রিকেট দল। রোববার ইডেন গার্ডেনের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে ৮ উইকেটে হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের নারীরা।

টস ভাগ্যে জয় লাভ করে অস্ট্রেলিয়া ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। ৫ উইকেট হারিয়ে ১৪৮ রান তুলে নেয় তারা। জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩ বল ও ৮ উইকেট হাতে রেখে জয়ের স্বাদ নেয়।

১৪৯ রানের টার্গেট খুব বড় না হলেও বড় ম্যাচে এ রান তাড়া করা অনেক কষ্টকর। ‘ব্যাক অব দ্যা মাউন্ড’ অনেক কিছুই চলে আসে। সঙ্গে অতীত রেকর্ড তো আছেই। শেষ আট ম্যাচের আটটিতে হারের রেকর্ড নিয়ে ফাইনালের মঞ্চে মাঠে নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সঙ্গে বিশ্বকাপ শুরুর আগে প্রস্তুতি ম্যাচেও হার। সব মিলিয়ে ফাইনালে তার ভরসা ছিল একমাত্র নিজেদের আত্মবিশ্বাস, মনোবল।

বুক ভরা আত্মবিশ্বাস ও দৃঢ় মনোবলের কারণে অস্ট্রেলিয়াকে নিজেদের সামনে দাঁড়াতে দেয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজ নারীরা। অস্ট্রেলিয়া নিজেদের সাজানো সাম্রাজ্য হারালো ক্যারিবীয়নদের কাছে। ২০১০, ২০১২ ও ২০১৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ট্রফি জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। টানা চতুর্থ শিরোপা জয়ের খুব কাছে এসেও শেষটা বিষাদে পরিণত হল মেগ ল্যানিংয়ের দলের।

১৪৯ রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা চমৎকার করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ নারীরা। কোনো উইকেট না হারিয়ে প্রথম ১০ ওভারে ৭৬ রান তুলে নেন দুই ওপেনার হেইলে ম্যাথিউস ও স্ট্যাফিনি টেলর। অথচ প্রথম ৩ ওভারে তাদের রান ছিল মাত্র ৯। পরের ৩ ওভারে ৩৬ রান তুলে নেন এ দুই ব্যাটসম্যান। ১৩.৩ ওভারে শতরান জমা হয় ক্যারিবীয়দের ইনিংসে। তখন বল ও রানের ব্যবধান মাত্র ৩৯: ৪৯।

দলীয় শতরান তোলার পথে হেইলে ম্যাথিউস ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন ৩৫ বলে। হাফসেঞ্চুরি তুলে রেকর্ড বইয়ে নাম উঠান। সবচেয়ে কম বসয়ে (১৮) টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হাফসেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন ম্যাথিউস। মাইফলকে পৌঁছে নিজের নামের পাশে ১৬ রান যোগ করে সাজঘরের পথ ধরেন ডানহাতি এ ব্যাটসম্যান। দলীয় ১২০ রানে প্রথম উইকেট হারায় চ্যাম্পিয়নরা।

জয়ের থেকে তখন মাত্র ২৯ রান দূরে ক্যারিবীয় নারীরা। দ্বিতীয় উইকেটে ২৪ রান যোগ করেন স্ট্যাফিনি টেলর ও ডেনড্রা ডটিন। জয়ের থেকে মাত্র ৫ রান দূরে থেকে টেলর আউট হলেও জয় পেতে কোনো সমস্যা হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজের। টেলর ৫৭ বলে ৬ চারে ৫৯ রান করেন। ডটিন ১৮ ও ব্রিটনে কুপার ৩ রানে অপরাজিত থাকেন।

এর আগে অধিনায়ক মেগ ল্যানিংয়ের ৪৯ বলে ৫২ ও ইলসে ভিলানির ৩৭ বলে ৫২ রানের ইনিংসে ১৪৮ রানের লড়াকু পুঁজি পায় অস্ট্রেলিয়া। দুই ব্যাটসম্যান ৭৭ রানের জুটি গড়েন। ইনিংসের শুরু থেকে দাপট দেখালেও শেষ দিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিয়ে নেন। নিখুঁত লাইন ও লেন্থ মেনে শেষ দিকে বোলিং করে অসিদের রানের চাকা আটকে দেয় তারা। শেষ দিকে গুরুত্বপূর্ণ ২৮ রান যোগ করেন ইলসে পেরি।

বল হাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেরা বোলার ডেনড্রা ডটিন। ৩৩ রানে নেন ২ উইকেট। ১টি করে উইকেট নেন হেইলে ম্যাথিউস ও আনিসা মোহাম্মেদ।

বিশ্বকাপের শুরু থেকেই দারুণ পারফরম্যান্স করে আসছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানকে ৪ রানে হারানোর পর বাংলাদেশের বিপক্ষে ৪৯ রানের জয় পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের নারীরা। পরের ম্যাচে শেষ বলে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১ উইকেটে হারানোর পর গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ভারতকে ৩ রানে হারিয়ে সেমিফাইনালে পৌঁছায় ক্যারিবীয় নারীরা।

সেমিতে তারা তিনবারের রানার্সআপ নিউজিল্যান্ডকে ৬ রানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ফাইনালে নাম লেখায়। প্রথমবারের মত ফাইনালে উঠেই বাজিমাত করল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। স্বপ্নের শিরোপা নিয়ে বাড়ি ফিরবে তারা।

Print Friendly, PDF & Email