April 28, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

বন্যার পানি কমছে তবু কমছে না দুর্দশা

ডেস্ক প্রতিবেদন : বন্যা কবলিত এলাকায় নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করলেও পানিবন্দি মানুষের দুর্দশা কাটছে না। কিছু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হলেও বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট পরিস্থিতি একই আছে বলে জানা গেছে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ১৮টি স্থানে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে।

গত তিন মাসে তিন দফায় বন্যা সীমাহীন দুর্ভোগে ফেলেছে পানিবন্দি মানুষকে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও মাস খানেক সময় লাগবে। ক্ষেতের ফসল শেষ হয়েছে আগেই। পনিবন্দি থাকায় আশ্রয়হীন হওয়ার পাশপাশি হারিয়েছে গবাদি পশু, হাস-মুরগি। নিঃস্ব হয়ে পড়া কয়েক লাখ মানুষ এখন ভবিষ্যৎ ভাবনায় দিশেহারা।

দুই মাসের বেশি সময় ধরে দুর্ভোগ আছে বগুড়ার সোনাতলা, সারিয়াকান্দি ও ধনুটের বিভিন্ন এলাকার এক লাখ ১৭ হাজার মানুষ। বিশুদ্ধ পানি আর পয়ঃনিস্কাশনের সংকট সবচেয়ে প্রকট। ঘরবাড়ি পানিতে ডুবে যাওয়ায় অন্যত্র আশ্রয় নেয়া এসব মানুষ নিজেদের পাশাপাশি বিপাকে পড়েছেন পশু খাদ্য নিয়ে।

সিরাজগঞ্জের বেলকুচি, উল্লাপাড়া, কাজিপুর, শাহজাদপুর, চৌহালি ও সদর উপজেলায় পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা দেড় লাখের বেশি। ক্ষুধার যন্ত্রণার পাশপাশি পানিবাহিত নানা রোগ-ব্যাধিতে ভুগছেন তারা। শাহজাদপুরে প্রায় এক হাজার হেক্টর গো-চারণ ভূমি পানির নিচে থাকায়, পশুর খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। পানি কমলেও নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। এসব উপজেলার ১২৫টি গ্রামের দেড় লাখের বেশি মানুষ উঁচু জায়গা ও বিভিন্ন স্কুল কলেজে আশ্রয় নিয়েছে। প্রায় ৩০ হাজার ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, হুমকির মুখে আছে আরও অনেক।

লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামে দুই লাখের বেশি মানুষ এখনও পানিবন্দি। অনেকেই এখনও সরকারি কোন সহায়তা পাননি বলে অভিযোগ করেছেন।

গাইবান্ধার পানিবন্দি দুই লাখ মানুষের মধ্যে অন্তত ৩০ হাজার পরিবার ঘরছাড়া। আশ্রয় নিয়েছে উঁচু এলাকায়। বানভাসী এসব মানুষের সব থেকে কষ্ট খাবার ও বিশুদ্ধ পানির।

জামালপুর ও টাঙ্গাইলে দুর্গত এলাকার বাড়িঘর এখনও পানির নিচে। দীর্ঘ সময় পানিবন্দি থাকায় ঘরের খাবার ও জমানো টাকা ফুরিয়ে অর্ধহার-অনাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে বানভাসীদের। কাজের সুযোগ না থাকায় বেশি কষ্টে পড়েছেন দিনমজুররা।

পদ্মা অববাহিকায় ফরিদপুর অঞ্চলে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়েই বইছে। দুর্গত এলাকায় সরকারি সহায়তা দেয়া শুরু হলেও চাহিদার তুলনায় তা অনেক কম। অবশ্য উত্তর পূর্বাঞ্চলের নদ-নদীতে পানি দ্রুত নেমে যাওয়ায় মানুষজন ঘরে ফিরতে শুরু করেছে।

Print Friendly, PDF & Email